অক্টোবরের শুরুতে আবারও বন্যার আশঙ্কা

মত ও পথ প্রতিবেদক

বন্যা
ফাইল ছবি

দেশের মধ্যে এবং গঙ্গা অববাহিকার উজানের ভারতীয় অংশে মৌসুমী ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে অক্টোবর মাসের শুরুতে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে মাঝারি থেকে স্বল্প মেয়াদী বন্যার আশঙ্কার কথা জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের ‘সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের বন্যা পূর্বাভাস সম্পর্কিত সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন’ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

universel cardiac hospital

এবার ভর বর্ষা মৌসুমে সেভাবে বৃষ্টির দেখা না মিললেও শেষ পর্যায়ে এসে সক্রিয় হয়ে উঠেছে মৌসুমী বায়ু। বৃষ্টি ঝরছে যখন-তখন। আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে বন্যার।

বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি সেপ্টেম্বর মাসের দ্বিতীয় ও তৃতীয় সপ্তাহে গঙ্গা অববাহিকার উজানের ভারতীয় অংশে মৌসুমী ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে গঙ্গা নদীর বাংলাদেশ অংশের পানি সমতলে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

মধ্যবর্তীতে বৃষ্টিপাত কিছুটা কমে আসলেও মাসের চতুর্থ সপ্তাহের শেষার্ধ থেকে ভারতের বিহার প্রদেশের কোথাও কোথাও অতি ভারী বৃষ্টিসহ অনেক স্থানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে; যা অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূইয়া গণমাধ্যমকে বলেন, অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাতের প্রভাবে গঙ্গা নদীর পানি বাংলাদেশের রাজশাহী ও হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে এবং গড়াই নদীর পানি গড়াই রেলওয়ে ব্রিজ ও কামারখালী পয়েন্টে চলতি সপ্তাহে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে।

তিনি বলেন, এতে চলতি সপ্তাহে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের গঙ্গা ও গড়াই নদী সংলগ্ন দেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর, পাবনা, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী ও মাগুরা জেলার কতিপয় স্থানে মাঝারি মাত্রার স্বল্প থেকে মধ্যমেয়াদী বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।

নির্বাহী প্রকৌশলী আরও বলেন, গঙ্গা নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে পদ্মা নদী গোয়ালন্দ ও ভাগ্যকুল পয়েন্টে এবং নদী সংলগ্ন যমুনা আরিচা পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। এতে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে পদ্মা নদী সংলগ্ন দেশের মধ্যাঞ্চলের মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী ও শরীয়তপুর জেলার নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।

ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি বর্তমানে কমছে। মৌসুমী বৃষ্টিপাতজনিত কারণে চলতি সপ্তাহের শেষার্ধে এ অববাহিকার নদীগুলোর পানি বাড়তে পারে, তবে বিপদসীমা অতিক্রম করে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হবার সম্ভাবনা নেই বলেও জানিয়েছেন নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূইয়া।

বাংলাদেশের ওপর মৌসুমী বায়ু সক্রিয় থাকার কারণে গত কয়েকদিন ধরে ঢাকাসহ প্রায় সারাদেশেই বৃষ্টি হচ্ছে। সোমবার সকাল ৯টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও ঢাকা বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে।

আজ সোমবার আশ্বিনের ১৫ তারিখ। এদিন সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় সারাদেশেই বৃষ্টি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে বরিশালে ৫৫ মিলিমিটার। এ সময়ে ঢাকায় ১৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।

আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশ থেকে মৌসুমী বায়ু (বর্ষা) পুরোপুরি বিদায় নিয়ে থাকে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে