একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের চেয়ে ব্যয় বেশি করেছে দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। শুধু বিএনপি নয় ব্যয়ের দিক থেকে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর মধ্যে চতুর্থ স্থানে রয়েছে আওয়ামী লীগ।
অন্যদিকে ড. কামাল হোসেনের দল গণফোরাম, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বিকল্পধারা বাংলাদেশ ও কর্নেল অলি আহমদের লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিটি)-সহ সাতটি রাজনৈতিক দল কোনো টাকা ব্যয় করেনি।
নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা দেয়া রাজনৈতিক দলগুলোর সংসদ নির্বাচনে দলীয় ব্যয়ের বিবরণ থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
ইসির তথ্য অনুযায়ী, আওয়ামী লীগ ২৬০ আসনে প্রার্থী দিয়ে ব্যয় করেছে ১ কোটি ৫ লাখ ৫৭ হাজার ৬৩৮ টাকা। আর ব্যয়ের দিক দিয়ে চতুর্থ স্থানে।
এ নির্বাচনে বিএনপি ২৫৭ আসনে প্রার্থী দিয়ে ১ কোটি ১১ লাখ ৩৯ হাজার ১২০ টাকা ব্যয় করেছে দলটি। বিএনপি ব্যয়ের দিক দিয়ে রয়েছে তৃতীয় স্থানে।
এলডিপি ৮ জন প্রার্থী দেয়। এর মধ্যে ৪ জন জোটের প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করে, বিকল্পধারার ২৬ জন প্রার্থীর মধ্যে নৌকায় ৩ জন, জাসদের ১১ প্রার্থীর মধ্যে নৌকা নিয়ে ৩ জন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ২৪, গণফোরামের ২৮ প্রার্থীর মধ্যে ধানের শীষ নিয়ে ৭ জন, গণতন্ত্রী পার্টি ৬ ও সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের ২ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নেয়।
এদের পেছনে দল থেকে কোনো টাকা খরচ করা হয়নি বলে ইসিকে জানানো হয়েছে। সবাই নিজস্ব টাকা দিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।
এছাড়া সবচেয়ে বেশি ব্যয় করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। দলটি সব আসনেই প্রার্থী দিয়েছিল আর ব্যয় দেখিয়েছে ২ কোটি ১৪ লাখ ৮ হাজার ২১২ টাকা।
ব্যয়ের দিক দিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ। দলটি ৫৭ জন প্রার্থী দিয়ে ব্যয় করেছে ১ কোটি ১৯ লাখ ২০ হাজার টাকা।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ৮ জন প্রার্থী দিয়ে ব্যয় করেছে ১ কোটি ১৪ লাখ টাকা।
সবচেয়ে কম ব্যয় করেছে বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএল। দলটি একজন প্রার্থী দিয়ে ব্যয় করেছে ২ হাজার টাকা।
এছাড়া বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি ৩১ লাখ ৫৩ হাজার ৪২০ টাকা, জাতীয় পার্টি-লাঙ্গল ৪ লাখ ৫২ হাজার ৫৬০ টাকা, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি ৭০ লাখ ২৪ হাজার ৭০০ টাকা, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ ৩ লাখ ৬৬ হাজার ৮৪৬ টাকা ব্যয় করেছে।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী, যে দল থেকে সর্বোচ্চ ৫০ জন প্রার্থীর সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ, সর্বোচ্চ ১০০ প্রার্থীর জন্য দেড় কোটি, সর্বোচ্চ ২০০ প্রার্থীর জন্য তিন কোটি এবং ২০০ এর বেশি প্রার্থী দিলে সংশ্লিষ্ট দল সর্বোচ্চ সাড়ে চার কোটি টাকা ব্যয় করতে পারে। আর অংশ নেয়া সব দলুগলো নির্বাচনী হিসাব দিতে হবে।
- ফারাক্কার সব গেট খুলে দিল ভারত
- জাতীয় সংলাপ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী দেশকে বাঁচাতে পারবেন না : কাদের সিদ্দিকী
ইসি কর্মকর্তারা জানান, একাদশ সংসদ নির্বাচনে নিবন্ধিত ৩৯টি দলই ভোটে অংশ নেয়। গাইবান্ধা-৩ আসনে একজন প্রার্থীর মৃত্যু হওয়ায় ৩০ ডিসেম্বর ২৯৯টি আসনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এতে ১ হাজার ৮৬১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
এদের মধ্যে ১ হাজার ৭৩৩ জনপ্রার্থী ৩৯টি রাজনৈতিক দলের। অবশিষ্ট ১২৮ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।