‘ইলিশ নিয়ে ভারত বাংলাদেশকে বন্যায় ডুবিয়ে দিয়েছে’

মত ও পথ প্রতিবেদক

মির্জা আব্বাস
মির্জা আব্বাস

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ইলিশ নিয়ে ভারত ফারাক্কার সকল গেট খুলে দিয়ে বাংলাদেশকে বন্যায় ডুবিয়ে দিয়েছে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে কৃষকদল কর্তৃক আয়োজিত এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

universel cardiac hospital

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘মাত্র কয়েকদিন আগে পূজা উপলক্ষে ভারতকে ৫০০ মেট্রিক টন ইলিশ মাছ উপহার দেয়া হয়েছে। আজকে দুই চালান, দুই ট্রাক গেছে মাত্র। ৫০০ টাকা কেজি হিসেবে ওখানে গেছে। আমরা বাংলাদেশের জনগণ আত্মীয়তা ভালোবাসি, পছন্দও করি। বিনিময়ে আমরা কী পেলাম জানেন? ১০৯টা ফারাক্কার সুইচগেট খুলে দিয়েছে, বন্যায় ডুবে যাবে।’

সরকারের উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ইলিশ মাছ দিয়েছেন পেঁয়াজ ছাড়া কি খেতে পারবে? তবে বাংলাদেশে এখন পেঁয়াজের দাম ১২০ টাকা, ৩০ (১৩০) টাকা। আমাদের এক মন্ত্রী না সচিব বললেন, উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নাই। পেঁয়াজের কত টাকা দাম হলে আপনি উদ্বিগ্ন হবেন, এই কথাটা একটু প্রকাশ করবেন?’

ক্যাসিনো, টেন্ডারবাজি ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে সরকারের চলমান অভিযানের কথা উল্লেখ করে মির্জা তিনি বলেন, ‘মাত্র দুইজন ধরলেন। এদেরকে আমি চুনোপুঁটি বলি না, টোকাই ধরলেন মাত্র। এই প্রকারের টোকাইয়ের পকেট থেকে যদি এত টাকা বের হয়, তাহলে আপনাদের রাঘববোয়ালদের পকেট থেকে কত টাকা বের হবে-এটা দেশবাসী জানতে চায়। আপনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন, আপনি ঘর থেকে শুরু করেছেন শুদ্ধি অভিযান, আপনার এ বক্তব্যকে স্বাগত জানাই। ইনশাল্লাহ খুব তাড়াতাড়ি আপনি রাঘববোয়ালগুলোকেও ধরবেন।’

আব্বাস আরও বলেন, ‘এই সরকার রাতের অন্ধকারের সরকার। এমনকি ডাকাত সরকার বলতে আমার লজ্জা লাগে, ডাকাতেরও সাহস আছে। এই সরকারের সাহস নেই, এই সরকারের লজ্জা নেই, এই সরকার রাতের অন্ধকারে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মাধ্যমে ক্ষমতায় বসে আছে। এদেশে কোনো ভোট হয়নি, ৩০ তারিখের ভোট ২৯ তারিখ রাতে হয়ে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘ইলেকশন কমিশন বলেছে, এই দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তাহলে আগের নির্বাচন যে সুষ্ঠু হয় নাই এটা উনি ভালোই জানেন। এখন আমরা এগুলো নিয়ে যখন যুদ্ধ করছি সারাবিশ্ব তখন উন্নয়নের সোপানে এগিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশ পেছনে পড়ে যাচ্ছে।’

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা আজকে পুরো বিএনপিকে গ্রাস করার চেষ্টা করছেন। বিএনপি হলো একটি দেশপ্রেমিক দল। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, টাকার হিসাব না কি সকলকে দিতে হবে। ২০০৬ সালের পর থেকে ওই দুদকের অফিস আর কোর্ট-কাচারিতে হিসাব দিতে দিতে আমাদের জান শেষ। আমরা তো হিসাব দিতেই আছি, এখন আপনাদের হিসাবটুকু দেন না।’

বিএনপির জনসভাগুলোর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সাংবাদিক ভাইয়েরা দেখেছেন, পুলিশ কীভাবে আমাদের সমাবেশগুলোতে বাধা দিয়েছে। সভাস্থলে ঢোকার পথ মাইল দূর থেকে গাড়ি-ঘোড়া বন্ধ করে দিয়েছে, ট্রেন বন্ধ করে দিয়েছে। সমস্ত রকম যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে, তারপরও ময়মনসিংহের সমাবেশে অস্বাভাবিক সমাগম হয়েছে। ময়মনসিংহের কথা তো বলা যাবে না। রাজশাহী জনসভায় বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে বিশেষ করে পুলিশি বাধা ছিল, হিংস্র সকল বাধা উপেক্ষা করে জনগণ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি নিয়ে এগিয়ে এসেছে। এই দাবি আজকে বিএনপির দাবি নয়, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি বাংলাদেশের জনগণের দাবি।’

আব্বাস বলেন, ‘এদেশের মানুষ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির অপেক্ষায় আছে আর এটাই সরকারের ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নেত্রী অসুস্থ, মানবিক কারণে তিনি মুক্তি পেতে পারেন, চিকিৎসা পেতে পারেন। উনাকে চিকিৎসার জন্যও কোনো সুযোগ দেয়া হচ্ছে না যদিও আইওয়াশ দেয়া হচ্ছে যে, ওনাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। জেলখানার মধ্যে এটা কোনো চিকিৎসা না। তিলে তিলে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে হত্যার চেষ্টা করছে। তারা অন্যদিকে এ দেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপ্রধান যিনি হবেন, তারেক রহমান, তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন।’

মানববন্ধনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মেহেদি আহমেদ রুমী, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. মাঈনুল ইসলাম, নাসির হায়দার, আলিম হোসেন, মোজাম্মেল হক মিন্টু সওদাগার, কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন, এম জাহাঙ্গীর আলম, আব্দুর রাজি, যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা গিয়াস উদ্দীন মামুন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে