তিন মাসে দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে : অর্থমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিবেদক

প্রণোদনায় রেমিট্যান্স বাড়তে পারে
ফাইল ছবি

২০১৯-২০২০ অর্থবছরের বাজেটে বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রেরণকে উৎসাহিত করার জন্য ২ শতাংশ নগদ প্রণোদনার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ফলে দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। গত তিন মাসে রেমিট্যান্স এসেছে সাড়ে চার বিলিয়ন ডলার। যা বাংলাদেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স।

বুধবার সচিবালয়ে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী প্রবাস থেকে যারা রেমিট্যান্স পাঠাবেন, তারা বাজেট ঘোষণার পর থেকেই এ প্রণোদনার সুযোগ পাবেন। ইতোমধ্যে যারা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন অথচ প্রণোদনা পাননি, তারাও এ সুযোগের আওতায় আসবেন। আশা করছি, এর ফলে দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়বে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, সংবাদমাধ্যমে বাজেটে রেমিট্যান্স পাঠানোর ওপর ঘোষিত প্রণোদনা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে যা বিভ্রান্তির সৃষ্টি করতে পারে। এ বিষয়টি পরিস্কার করা জরুরি। বাজেটে ঘোষিত প্রণোদনার বিষয়টি পূর্ণাঙ্গভাবে কার্যকর করতে আমাদের কিছুটা সময় লেগে গিয়েছে। কেননা এজন্য আমাদেরকে একটি সিস্টেম ডেভেলপ করতে হয়েছে।

মুস্তফা কামাল বলেন, এই সিস্টেম ডেভেলপ করতেই আমাদের মাঝের সময়টি ব্যয় হয়েছে। তবে এই ঘোষণা  দেয়ার পর থেকেই বাংলাদেশ সরকার এবং বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ দেশে রেমিট্যান্স প্রেরণকে অগ্রাধিকার দিয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, বিশ্বের যেকোনো দেশ থেকে কেউ যদি আজকেই রেমিট্যান্স পাঠায়, তাহলে সে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা পাবেন। এর আগে ১ জুলাই থেকে এ পর্যন্ত যারা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন, তারাও এ প্রণোদনা পাবেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, গত তিন মাসে আমরা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বকালের সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ করেছি। বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রেরণকে উৎসাহিত করার জন্য ২ শতাংশ নগদ প্রণোদনার ব্যবস্থা রাখায় প্রবাসীরা ইতিমধ্যে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন। তার প্রমাণ হলো গত তিন মাসে আমরা রেমিট্যান্স অর্জন করেছি সাড়ে চার বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা আগের তুলনা প্রায় ১৬ শতাংশ বেশী।

তিনি বলেন, এখন থেকে ১৫০০ ডলার পর্যন্ত রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে কোনো প্রশ্ন করা হবে না। এর বেশি হলেই কাগজ দিতে হবে। প্রতি লেনদেন ১৫০০ ডলারের মধ্যে থাকলে দিনে যতবার ইচ্ছা প্রেরণ করতে পারবেন। প্রতি লেনদেনের জন্য ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা পাবেন। আশা করা যায় এর ফলে রেমিট্যান্স এবার ১৮-২০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে।

এদিকে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এবং বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে প্রবাসী আয়। প্রবাসীরা তাদের কষ্ঠার্জিত আয় বৈধ চ্যানেলে দেশে প্রেরণ করে বেগবান করছে দেশের অর্থনীতি। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রেরিত রেমিট্যান্সের পরিমাণ ১৬,৪২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার যা বিগত ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে প্রাপ্ত রেমিট্যান্স ১৪,৯৮২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এর তুলনায় ১,৪৩৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বেশি। বিগত অর্থবছরেরর তুলনায় রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি ৯ দশমিক ৫৯ শতাংশ।

বাংলাদেশ সরকার এবং বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ দেশে নিবিড়ভাবে রেমিট্যান্স প্রেরণকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রবাসীদের বৈধ চ্যানেলে রিমিট্যান্স প্রেরণকে আরো উৎসাহিত করতে বাংলাদেশ সরকার রেমিট্যান্স প্রেরণের বিপরীতে ২ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক গত ৬ আগস্ট, সার্কুলার নং-৩১ এর মাধ্যমে ‘বৈধ উপায়ে রেমিট্যান্স প্রেরণের বিপরীতে প্রণোদনা/নগদ সহায়তা প্রদানের নীতিমালা’ জারি করে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে