ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের ক্রিকেট বিষয়ক কমিটি (ক্রিকেট অ্যাডভাইজরি কমিটি) থেকে এবার কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট, তথা স্বার্থের সংঘাত ইস্যুতে পদত্যাগ করেছেন চেয়ারম্যান কপিল দেব।
বোর্ডের এথিক্স অফিসার ডিকে জৈনের পক্ষ থেকে স্বার্থ-সংঘাত ইস্যুতে নোটিশ পাওয়ার পরদিনই সিএসি’র পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন শান্তা রঙ্গস্বামী। নারী ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়কের পথ ধরে এবার অ্যাডভাইসরি কমিটির প্রধানের পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন সাবেক বিশ্বজয়ী অধিনায়ক।
যদিও পদত্যাগ পত্রে এর কারণ হিসেবে কোনো কিছুই উল্লেখ করেননি কপিল দেব। সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত কমিটি অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটরকে ই-মেইলে তার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেন তিনি।
উল্লেখ্য, অ্যাড-হক কমিটির (ক্রিকেট অ্যাডিভাইসরি কমিটি) প্রধান হিসেবে এ বছরেরই জুলাইয়ে নিযুক্ত হয়েছিলেন বিশ্বজয়ী অধিনায়ক কপিল। এরপর নারী ক্রিকেট দলের কোচ হিসেবে ডব্লিউ ভি রমন এবং গত আগস্টে কোহলিদের কোচ হিসেবে রবি শাস্ত্রীকে পুনর্বহাল করার মূল দায়িত্ব পালন করেন কপিল দেব নেতৃত্বাধীন সিএসি।
কিন্তু সম্প্রতি বোর্ডের একের বেশি পদে আসীন থাকার কারণে কপিলদেবসহ অ্যাডভাইজরি কমিটির বাকি সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে সরব হন সঞ্জীব গুপ্তা। মধ্যপ্রদেশ ক্রিকেট সংস্থার আজীবন সদস্য সঞ্জীব গুপ্তার অভিযোগের ভিত্তিতেই কপিল দেবের পাশাপাশি স্বার্থ সংঘাত ইস্যুতে নোটিশ পৌঁছে দেয়া হয় শান্তা রঙ্গস্বামী ও অংশুমান গায়কোয়াড়ের কাছে।
বোর্ডের এথিক্স অফিসারকে লেখা চিঠিতে সঞ্জীব গুপ্তা জানান, ১৯৮৩ বিশ্বজয়ী অধিনায়ক কপিল একাধারে একজন ধারাভাষ্যকার, একটি ফ্লাড লাইট কোম্পানির মালিক, ইন্ডিয়ান ক্রিকেটার্স আসোসিয়েশনের সদস্য হওয়ার পাশাপাশি বোর্ডের ক্রিকেট অ্যাডভাইজরি কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদেও আসীন রয়েছেন।
একইভাবে সাবেক ক্রিকেটার অংশুমান গায়কোয়াড়ের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনেন সঞ্জীব গুপ্তা। গায়কোয়াড়ের বিরুদ্ধে সিএসি’র পদ সামলানোর পাশাপাশি বিসিসিআই অ্যাফিলিয়েশন কমিটির সদস্যপদ ও নিজস্ব ক্রিকেট অ্যাকাডেমি চালানোর অভিযোগ তোলেন তিনি।
সিএসি’র আরেক সদস্য অর্থাৎ সাবেক নারী ক্রিকেট অধিনায়ক শান্তা রঙ্গস্বামী অ্যাডভাইজরি কমিটির সঙ্গে আইসিএ’র ডিরেক্টর পদও সামলাচ্ছেন জানিয়ে অভিযোগ করেন সঞ্জীব গুপ্তা। উত্তর চেয়ে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত বেঁধে দেওয়া হয় সময়সীমাও।
ফলে এথিক্স অফিসারের নোটিশ পাওয়ার পর দ্রুততার সঙ্গেই বোর্ডের সবরকম পদ থেকে সরে দাঁড়ান শান্তা রঙ্গস্বামী। ইন্ডিয়ান ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশনের ডিরেক্টর পদের পাশাপাশি অ্যাডভাইসরি কমিটির পদ থেকে দাঁড়ান সাবেক জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়িক।
পদত্যাগের সময় কটাক্ষের সুরে তিনি বলেন, আমার বিকল্প চিন্তাভাবনা রয়েছে, তাই আমি বোর্ডের পদ দুটি থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। বর্তমান পরিস্থিতিতে বোর্ডের অ্যাডমিনিস্ট্রটিভে দায়িত্ব পালন করার জন্য উপযুক্ত ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। এখন না হলেও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে আমি নিশ্চিত পদত্যাগ করতাম। সুতরাং এটা সময়ের ব্যাপার মাত্র।