বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি মিয়ানমার ও তুরস্ক থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হওয়ায় দুই-এক দিনের মধ্যেই পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করবে বলে আশা করছেন।
তিনি বলেন, পেঁয়াজের দাম ৬০ থেকে ৭০ টাকায় চলে আসবে।
আজ বুধবার সচিবালয়ের নিজ সভাকক্ষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় সেখানে বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার থেকে আজ ৪৮৩ টন পেঁয়াজ টেকনাফে এসে পৌঁছেছে। মিয়ানমার থেকে আজ আরও একটি লট আসবে। সেটির পরিমাণ হবে ৪০০ থেকে ৫০০ টন। এছাড়া তুরস্ক থেকেও পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে।
সম্প্রতি দেশের বাজারে পেঁয়াজের কেজি ১০০ টাকা পার হওয়ার প্রসঙ্গ এনে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ভারত প্রথমে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিলো। পরবর্তী সময়ে তারা রফতানি বন্ধ করে দিয়েছে। এই সংবাদে কিছু সুযোগসন্ধানী ব্যবসায়ী পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। কারা কারা এই কাজ করেছে, সে ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। এর জন্য মনিটরিং টিম কাজ করছে।
টিপু মুনশি আরও বলেন, উৎপাদন বাড়ানো ছাড়া এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের কোনো পথ নেই। তবে এক্ষেত্রে ক্রেতাদেরও সচেতনতা প্রয়োজন। ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি করবে না, এই সংবাদ পেয়ে ক্রেতারা যেভাবে পেঁয়াজ কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন, সেটিও অস্বাভাবিক দাম বাড়ার একটি কারণ।
পেঁয়াজের দাম সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করা হচ্ছে জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ দ্রুত আনা যায়। মিয়ানমার থেকে ৪২-৪৩ টাকা কেজিদরে পেঁয়াজ আনা হচ্ছে। এর সঙ্গে পরিবহন খরচ এবং ব্যবসায়ীদের মুনাফা যুক্ত করে সর্বোচ্চ এর দাম হতে পারে ৫০-৫৫ টাকা।
তিনি বলেন, বেশি লাভ করলে ৬০ টাকার বেশি দাম হওয়া উচিত নয়। এর বেশি হওয়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। ব্যবসায়ীরা যে দাম বাড়িয়েছে, তা পুরোপুরি অযৌক্তিক। আমরা চেষ্টা করছি দাম সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসতে।
মন্ত্রী বলেন, আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি, বেশকিছু বাজারে জরিমানা করা হচ্ছে। চট্টগ্রামে লক্ষাধিক টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আশা করছি দাম কমবে।
পেঁয়াজের দাম নির্ধারণ করে দেয়া হবে কি না- এমন প্রশ্নে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এ ব্যাপারে একটা সিদ্ধান্ত নেয়া দরকার। আমরা একটা কস্টিং পেয়েছি, অনেক কিছু ওয়েস্ট হতে পারে, প্লাস প্রফিট ধরে ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী আরও বলেন, হিলি স্থলবন্দর থেকে টিসিবি ভারতীয় পেঁয়াজ ৬০ টাকা কেজিদরে কিনে এনে ১৫ টাকা ভর্তুকি দিয়ে ৪৫ টাকা কেজিদরে বিক্রি করছে। টিসিবির বিক্রির কার্যক্রম আরও সম্প্রসারিত হবে কিনা, তা ভেবে দেখা হচ্ছে।
ভারত রপ্তানি বন্ধ ঘোষণার পর থেকে বাংলাদেশের বাজারে গত কয়েক দিনের ব্যবধানে প্রায় দ্বিগুণ দামে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। দেশের খুচরা বাজারে ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। এ পরিপ্রেক্ষিতে আবারও আশ্বাসের বাণী শোনাচ্ছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ ও মূল্য স্বাভাবিক রাখতে বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ফলে বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।