ফখর জামান ও আবিদ আলীর জোড়া ফিফটিতে শ্রীলংকার বিপক্ষে সহজ জয় পেল পাকিস্তান। এই জয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ২-০ ব্যবধানে ট্রফি নিশ্চিত করল স্বাগতিকরা। দলের জয়ে ৯১ বলে ৭৬ রান করেন ওপেনার ফখর জামান। এছাড়া ৬৭ বলে ১০টি চারের সাহায্যে ৭৪ রান করেন আবিদ আলী।
সবশেষ বিশ্বকাপের আগে দুর্দান্ত ফর্মেই ছিলেন আবিদ আলী। কিন্তু দলের কম্বিনেশনের কারণে বাদ পড়ে যান তিনি। শ্রীলংকার বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ওপেনার ইমাম-উল-হক প্রত্যাশিত ব্যাটিং করতে না পারায় তৃতীয় ম্যাচে তার পরিবর্তে সুযোগ দেয়া হয় আবিদ আলীকে। দলে ফিরেই প্রধান নির্বাচক ও প্রধান কোচ মিসবাহ-উল-হকের আস্থার জবাব দেন আবিদ।
শ্রীলংকার বিপক্ষে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে ২৯৮ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে ফখর জামানের সঙ্গে উড়ন্ত সূচনা করেন আবিদ আলী। উদ্বোধনীতে তারা গড়েন ১৯.৩ ওভারে ১২৩ রানের জুটি। তাদের ওপেনিং জুটিই পাকিস্তানকে জয়ের পথ দেখায়।
জোড়া ফিফটি গড়ে ফখর-আবিদ আউট হলেও দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিতে কার্যকরী ব্যাটিং করেন হারিস সোহেল। জয়ের জন্য শেষ দিকে পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ১৪ বলে ১১ রান। সে সময় ৫০ বলে ৫৬ রান করে আউট হন হারিস সোহেল। তার বিদায়ে জয় পেতে সমস্যা হয়নি পাকিস্তানের।
বুধবার করাচি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করে ধানুস্কা গুনাথিলাকার সেঞ্চুরিতে ৯ উইকেটে ২৯৭ রান সংগ্রহ করে শ্রীলংকা। টার্গেট তাড়া করতে নেমে ১০ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটের জয়ে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ নিশ্চিত করে স্বাগতিক পাকিস্তান। সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচটি বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়।
করাচির আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়ে যায় সফরকারী শ্রীলংকা। দলীয় ১৩ রানে অভিস্কা ফার্নান্দোর আউট হন। তার বিদায়ের পর অধিনায়ক লাহিরু থিরিমান্নেকে সঙ্গে নিয়ে দলের হাল ধরেন অন্য ওপেনার গুনাথিলাকা।
দ্বিতীয় উইকেটে ৮৮ রানের জুটি গড়ে সাজঘরে ফেরেন লংকান অধিনায়ক। মোহাম্মদ নওয়াজের শিকারে পরিণত হওয়ার আগে ৫৩ বলে ৩৬ রান করেন থিরিমান্নে।
এরপর অ্যাঞ্জেলো পেরেরার সঙ্গে ৫০ রানে জুটি গড়েন গুনাথিলাকা। ২৫ বলে ১৩ রানে আউট হন অ্যাঞ্জেলো পেরেরা। তবে ব্যাটিং তাণ্ডব চালিয়ে যান গুনাথিলাকা।
ইনিংসের শুরু থেকে বলে বলে রান করে যাওয়া গুনাথিলাকা ১০০ বলে ১২টি চার ও এক ছক্কায় শতরানের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন। এর আগে ২০১৭ সালে শ্রীলংকার হাম্বানটোটায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১১৫ রান করেন তিনি।
সেঞ্চুরির পর দলকে চ্যালেঞ্জিং স্কোর উপহার দিতে একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকিয়ে যান গুনাথিলাকা। চতুর্থ উইকেটে মিনোদ ভানুকাকে সঙ্গে নিয়ে রীতিমতো তাণ্ডব চালিয়ে ৭৪ রানের জুটি গড়েন তারা। ৩৯ বল খেলে দুটি ছক্কার সাহায্যে ৩৬ রান করে আউট হন শ্রীলংকার তরুণ উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান ভানুকা।
ইনিংসের শুরুতে ব্যাটিংয়ে নামা গুনাথিলাকা ৪৪.৩ ওভারে মোহাম্মদ আমিরের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন। তার আগে ক্যারিয়ার সেরা ১৩৪ বলে ১৬টি চার ও এক ছক্কায় ১৩৩ রান করেন। এই রান সংগ্রহের মধ্য দিয়ে করাচি স্টেডিয়ামের অনার্স বোর্ডে স্থান করে নেন লংকান ওপেনার গুনাথিলাকা।
গুনাথিলাকা আউট হওয়ার পর ইনিংসের শেষ দিকে প্রত্যাশিত ব্যাটিং করতে পারেননি লংকান লেজের ব্যাটসম্যানরা। শেষ দিকে মাত্র ১৩ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট পতনের কারণে তিনশতাধিক রান সংগ্রহের সমূহ সম্ভাবনা থাক সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে ২৯৭ রানে ইনিংস থামায় লংকানরা। পাকিস্তানের হয়ে ৫০ রানে ৩ উইকেট শিকার করেন মোহাম্মদ আমির।