আজ শনিবার জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া রংপুর-৩ আসনের উপনির্বাচন। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ১৭৫টি ভোটকেন্দ্রে একযোগে ভোট নেওয়া হবে।
নির্বাচন কমিশন বলছে, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
জাতীয় সংসদের গুরুত্বপূর্ণ এই আসনে বিএনপি ও জাতীয় পার্টিসহ ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আওয়ামী লীগ আসনটি তাদের মহাজোট শরিক জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দিয়ে দলের প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেয়।
নির্বাচনে ভোট গ্রহণের সব আয়োজন ইতিমধ্যে সম্পন্ন করেছে কমিশন। কেন্দ্রে কেন্দ্রে প্রিজাইটিং ও পোলিং কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং নির্বাচন সামগ্রী পৌঁছে গেছে।
নির্বাচন সামনে রেখে গতকাল রংপুর প্রেসক্লাবের সামনে ব্রিফিং করে পুলিশের অভিজাত বাহিনী র্যাব বলেছে, ভোটে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকবে।
এই উপনির্বাচনে মোট ভোটার চার লাখ ৪১ হাজার ২২৪ জন। ১৭৫টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ৭৩টি আর সাধারণ ধরা হয়েছে ১০২টি। মোতায়েন থাকবে বিজিবির ১৮ প্লাটুন ও র্যাবের ২০ ইউনিট। পুলিশ-আনসার সদস্য থাকবেন তিন হাজার। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ১৮ জন আর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন চার জন।
এদিকে ভোট গ্রহণের আগ মুহূর্তে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে প্রধান দুটি দলের প্রার্থীসহ চার প্রার্থীই রংপুরের ভোটার না হওয়ার তথ্য।
এর মধ্যে জাতীয় পার্টির মনোনীত মহাজোট প্রার্থী সাদ এরশাদ (লাঙ্গল), আর বিএনপির মনোনীত ২০ দলের প্রার্থী রিটা রহমান (ধানের শীষ) পিতার পরিচয়ে নির্বাচন করছেন।
একইভাবে গণফ্রন্টের কাজী মো. শহীদুল্লাহ বায়েজিদ (মাছ) ও এনপিপির শফিউল আলমও (আম) ভোটার নন রংপুরের। ফলে তারা অন্যের ভোট পেলেও নিজেরা ভোট দিতে পারবেন না।
কেবল দুজন- এরশাদের ভাতিজা স্বতন্ত্র প্রার্থী হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ (মোটরগাড়ি-কার) ও খেলাফত মজলিসের তৌহিদুর রহমান মন্ডল (দেয়াল ঘড়ি) এই সংসদীয় আসনের এলাকার ভোটার।
সাবেক সংসদ সদস্য হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ শিশুমঙ্গল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে এবং তৌহিদুর রহমান মন্ডল দুপুরে রংপুর মডেল কলেজ কেন্দ্রে ভোট দেবেন বলে সাংবাদিকদের জানান।
এনপিপির শফিউল আলম নিজেকে স্থানীয় ভোটার দাবি করেন। নগরীর মুন্সিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে তিনি ভোটার বলে জানান। তবে, নির্বাচন কমিশনে দেয়া হলফনামা অনুসারে তার স্থায়ী ঠিকানা রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায়।
পান দোকান থেকে শুরু করে পাড়া-মহল্লায় ভোটারদের মুখে মুখে এখন এই আলোচনা। ভোটের ঠিক আগের দিন এমন আলোচনায় বিব্রত প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী (জাপা ও বিএনপি) দুই দলের নেতাকর্মীরা।
তবে জাপার নেতাকর্মীরা বলছেন, কোনো অপপ্রচার তাদের বিজয় ঠেকাতে পারবে না। লাঙলের ঘাঁটিতে লাঙলের বিজয় নিশ্চিত।
আর বিএনপিও মনে করে অবাধ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হলে তাদের প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত। এখনো সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কা বিএনপির। দলের রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবীব দুলু গতকাল সকালে দলের প্রার্থী রিটা রহমানের বাসায় সাংবাদিকদের সঙ্গে সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন।
- আরও পড়ুন >> ইরাকে বিক্ষোভের চতুর্থ দিনে নিহত ৪৬
আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টির একটি অংশসহ সব রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা চেয়েছিলেন স্থানীয় প্রার্থী। আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছিলেন অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রাজু। দলের মনোনয়ন পেতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়েছেন জাপার সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির। আর বিএনপির পক্ষে নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মিজু মনোনয়ন চেয়েছিলেন।
দলের হাইকমান্ডের সিদ্ধান্তে মনোনয়ন পেলেও প্রত্যাহার করে নেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী রেজাউল করিম রাজু। সেদিন তার কর্মী-সমর্থকরা সড়ক অবরোধ করেছিলেন।
জোর লবিং করার পরেও দলের মনোনয়ন পাননি বিএনপির শহিদুল ইসলাম মিজু ও জাপার এসএম ইয়াসির।