ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টুস্ক জানিয়েছেন, ব্রেক্সিট চুক্তি বিষয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন যে প্রস্তাব দিয়েছেন তাতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সন্তুষ্ট নয়। তবে তারা এই প্রস্তাব খোলা মনেই যাচাই করবেন বলে জানান তিনি।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে যাওয়ার পরও যেসব সুবিধা ব্রিটেন নিতে চায় সে ব্যাপারে সংশয় প্রকাশ করেছেন ডোনাল্ড টুস্কসহ ওই অঞ্চলের আরও বেশ কিছু নেতা।
বরিস জনসনের প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে ব্রেক্সিটের পরও উত্তর আয়ারল্যান্ড খাদ্য, শিল্পজাত পণ্য ও পশু সম্পদের ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নের একক বাজার ব্যবস্থার মধ্যেই থাকবে। কিন্তু যুক্তরাজ্যের অন্য অংশের মতোই তারা শুল্ক ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে যাবে।
অন্যদিকে আয়ারল্যান্ড ও উত্তর আয়ারল্যান্ডের সীমানার কী হবে সেটি আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। বরিস জনসনের প্রস্তাব হল উত্তর আয়ারল্যান্ড ইউরোপীয় ইউনিয়নের অংশ থাকতে চায় কিনা সে ব্যাপারে সেখানকার সংসদের, প্রতি চার বছর পরপর সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা থাকবে।
আইরিশ প্রধানমন্ত্রী লিও ভারাদকার নতুন প্রস্তাবকে স্বাগত জানালেও তিনি বলছেন গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে তাতে ঘাটতি রয়ে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার বরিস জনসন বলেছেন ৩১ শে অক্টোবরের মধ্যে নতুন সমঝোতায় পৌঁছানোর সময় ফুরিয়ে যাওয়ার আগেই ইইউ কর্তৃপক্ষের সাথে দ্বিমত ঘোচাতে তিনি সত্যিকার অর্থেই চেষ্টা করেছেন।
জনসন এই তারিখের আগেই ইইউ ছেড়ে যাওয়ার প্রতিজ্ঞা করলেও যুক্তরাজ্যের এমপিরা পার্লামেন্টে এমন আইন পাশ করে ফেলতে পারেন যার ফলে তাকে ব্রেক্সিট বাস্তবায়নে দেরি করতে হতে পারে। যদি না তার আগেই তিনি সফল একটি চুক্তি করতে পারেন।
যুক্তরাজ্য সরকার বলছে তারা ১৭ই অক্টোবরের মধ্যে একটি চূড়ান্ত চুক্তিতে পৌঁছাতে চান।
ইইউ কর্মকর্তারা বলছেন, তারা ইতিমধ্যেই বরিস জনসনের পরিকল্পনায় সমস্যা চিহ্নিত করেছেন। বিশেষ করে আয়ারল্যান্ড ও উত্তর আয়ারল্যান্ডের মধ্যে সীমানার বিষয়টি সমাধান করতে না পারা। তারা ইইউ একক ব্যাজার ব্যবস্থার জন্যেও হুমকি দেখতে পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।
- আরও পড়ুন >> রংপুর-৩ আসনের উপনির্বাচনের ভোট চলছে
ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টুস্ক এক টুইট বার্তায় লিখেছেন তিনি আয়ারল্যান্ড ও উত্তর আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীদের সাথে কথা বলেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘বরিস জনসনের প্রতি আমার বার্তা হল, আমরা প্রস্তাব খোলা মনেই যাচাই করবো কিন্তু সন্তুষ্ট নই’।
ইইউ ছেড়ে যাওয়ার ব্যাপারে আয়ারল্যান্ড ও উত্তর আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীরা এখন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় রয়েছেন। ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান জ্যাঁ ক্লদ জাংকার বলেছেন, যুক্তরাজ্যে চুক্তির ব্যাপারে বেশ এগোলেও আরও অনেক কাজ বাকি। এই মুহূর্তে বরিস জনসনের প্রস্তাব মানার বিপক্ষে তিনি।
আর ইইউ ব্রেক্সিট বিষয়ক সমন্বয়ক গাই ভারহফস্টাডা সরাসরি বলেছেন এই পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করা সম্ভব নয়। ইইউ পার্লামেন্টের ব্রেক্সিট কমিটি বলেছে আগে যা কথা হয়েছে নতুন পরিকল্পনা তার ধারে কাছেও নেই।