সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে দুর্নীতির চক্র ভেঙে দিতেই শুদ্ধি অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, সারাদেশে যে শুদ্ধি অভিযান চলছে তা কোনো দল বা গোষ্ঠীর মধ্যে পরিচালিত হচ্ছে না। দুর্নীতিবাজ ও দুর্বৃত্তায়নের চক্র ভেঙে দিতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
আজ শনিবার মহানগর সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটির উদ্যোগে শারদীয় দুর্গোৎসবের মহাসপ্তমীর দিন দুঃস্থ মানুষদের মাঝে বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাদের এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আজকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশে যে শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছেন, তাতে আমি আপনাদের সহযোগিতা চাই। এটা কোনো দল, ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নয়। বাংলাদেশ থেকে দুর্নীতিবাজ, দুর্বৃত্তায়নের চক্র ভেঙে দিতে এই উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। দুর্বৃত্তায়নের চক্র ভেঙে দিতে হবে, এই দুর্বৃত্তরা শুধু মুসলমান নয়, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবার শত্রু।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্নীতিবাজ, লুটেরা, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ থেকে শুরু করে সারাজীবনে যারা জনগণের কাছে সরকারে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে চায়। যারা শেখ হাসিনার সরকারের বিশাল অর্জনকে ম্লান করে দিতে চায়, তাদের দাঁতাভাঙা জবাব দেয়া হবে। শাস্তি তাদের পেতেই হবে, কেউ ছাড় পাবে না, যে যত প্রভাবশালী হোক না কেন।’
অনুষ্ঠানে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তায় কেউ বিঘ্নিত করলে তাদেরকেও আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়া হবে বলে জানান ওবায়দুল কাদের। বলেন, যারা সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের দিকে লোলুপ দৃষ্টিতে তাকায় তাদের ছাড় দেয়া হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আপনাদের (হিন্দু) সম্পদের দিকেও অনেক দুর্বৃত্ত লোলুপ দৃষ্টিতে তাকায়। তাদের সর্তক করে দিচ্ছি, শেখ হাসিনার অভিযান সংখ্যালঘুদের সম্পদের দিকে যারা লোলুপ দৃষ্টিতে তাকান, দখল করতে চান, তাদের বিরুদ্ধেও এই অভিযান। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।’
তিনি বলেন, বছরে বছরে পূজারি ভক্তের সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তেমনি পূজামন্ডপের সংখ্যাও বাড়ছে। যদি নিরাপত্তা পরিবেশ থাকে সম্প্রীতির পরিবেশ থাকে তখন পূজারিরা নিরাপদে পূজাপার্বনে অংশ নিতে পারে। তেমনি করে এতে সবার মধ্যে একটা নিরাপত্তার ভাব জাগে। যেখানে শুধু হিন্দুরা নয় মুসলমানসহ অন্যান্য ধর্মালম্বীরাও এটাকে সার্বজনীন উৎসবে পরিণত করে।
‘শেখ হাসিনা যখন ক্ষমতায় আসে তখন পূজারী ভক্তের সংখ্যা বেড়ে যায়। পরিবেশ থাকে উৎসবমুখ, নিরাপত্তা থাকে সর্বক্ষণ।’
হিন্দু ধর্মালম্বীদের উদ্দেশ্যে কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছে। আপনাদের কোনো ভয় নেই, মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেন, মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াবেন। আপনার ভোট মানে গুণে মুসলমানের চেয়েও কম নয়, সবারই ভোটাধিকার সমান। নাগরিকত্বের দিক থেকে আপনিও এদেশের প্রথম শ্রেণির হিসাবে কাউকে ভয় পাবেন না।’
তিনি বলেন, ‘সব ধর্মকে সবার সম্মান করা উচিত। সব ধর্মের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করবেন। যখন আজান হয়, তখন আপনারা গান-বাজনাটা একটু বন্ধ রাখবেন। এটা সবার যেন উৎসব হয়, কারো অনুভূতিতে যেন কষ্ট না হয়, এই বিষয়টা আপনারা খেয়াল রাখবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের নেত্রী দিল্লী যাওয়ার আগে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে জানিয়েছেন, তৃণমূলের সম্মেলনে যাতে বিতর্কিত ব্যক্তিরা কমিটিতে স্থান না পায় সেই বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। আমাদের নেতৃবৃন্দ সর্তক আছেন।
কাদের বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের বর্তমান সম্পর্ক চমৎকার সম্পর্ক। আমরা ক্রস বর্ডার টেরোরিজমের বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে ভারত এবং আমরা একযোগে কাজ করে যাব।