গত ২৪ ঘণ্টায় রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া গেজ স্টেশন পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। হঠাৎ পদ্মার পানি বৃদ্ধিতে জেলার প্রায় ৪ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে ভাঙন।
পদ্মা নদীর তীব্র স্রোতে লঞ্চ চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠায় দেশের দক্ষিণ পশ্চিমঞ্চলের ২১ জেলার প্রবেশদ্বার দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ ও ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এতে করে দৌলতদিয়া প্রান্তে নদী পারের অপেক্ষায় সড়কে আটকা পড়েছে কয়েকশ পণ্যবাহী ট্রাক ও বেশ কিছু যাত্রীবাহী বাস।
আজ শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে দৌলতদিয়ায় যাত্রীবাহী বাস ও গোয়ালন্দ সড়কে পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে সিরিয়ালে থাকতে দেখা গেছে। তবে ট্রাকগুলোকে নদী পারের জন্য দিনের পর দিন দৌলতদিয়া প্রান্তে আটকে থেকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
দৌলতদিয়া ঘাট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত কয়েক দিন ধরে পদ্মার তীব্র স্রোতে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে লঞ্চ ও ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। নদী পার হতে সময় লাগছে আগের তুলনায় দ্বিগুণ। যে কারণে দৌলতদিয়ায় যানবাহনের সিরিয়াল তৈরি হচ্ছে। এছাড়া স্রোতের কারণে ভাঙন দেখা দিয়েছে ফেরি ঘাট এলাকায়। ফলে ১ ও ২ নং ফেরি ঘাট বন্ধ রয়েছে এবং ভাঙন রোধে কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
বর্তমানে এ রুটে ১৬টির মধ্যে ১০টি ফেরি চলাচল করছে। তবে স্রোতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সবগুলো ফেরি চলতে পারছে না। এছাড়া দৌলতদিয়া প্রান্তের ৬টি ফেরি ঘাটের ৪টি ঘাট চালু রয়েছে। স্রোতে এ রুটে লঞ্চ চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় গতকাল শুক্রবার দুপুর থেকে রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেন। লঞ্চের যাত্রীদের ফেরিতে পারাপার হওয়ার জন্য বলা হয়।
এদিকে তীব্র স্রোতে গত কয়েক দিনে দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটসহ আশপাশের এলাকার প্রায় ৪ শতাধিক বসতবাড়ি ভাঙনের কবলে পড়েছে। ভাঙন কবলতিরা বসতভিটা হারিয়ে ঘরবাড়ি ভেঙে সরিয়ে নিরাপদ স্থানে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। একাধিকবার বাড়িঘর নদীতে বিলীন হওয়ায় অসহায় হয়ে পড়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
- আরও পড়ুন >> কলেজ ছাত্রী লিজা আত্মহনন মামলায় স্বামী গ্রেফতার
রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আরিফুর রহমান অঙ্কুরের দাবি ভাঙনের কবল থেকে দৌলতদিয়া ঘাট রক্ষার জন্য তারা সর্বাত্মক চেষ্টা করছেন।
দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাটের সুপার ভাইজার মো. মোফাজ্জেল হোসেন জানান, তীব্র স্রোতের কারণে গতকাল দুপুর থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে । আজ সকালেও তা চালু হয়নি।
বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মাহবুব হোসেন জানান, তীব্র স্রোতে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। ভাঙন ঝুঁকিতে থাকায় দৌলতদিয়া প্রান্তের দুটি ঘাট বন্ধ রয়েছে। ফলে নদী পারের অপেক্ষায় কিছু যানবাহন সিরিয়ালে রয়েছে। বর্তমানে এ রুটে ১০টি ফেরি চলাচল করছে। ৪টি ঘাট সচল রয়েছে।