শফিকুল আরও ৩ দিনের রিমান্ডে

আইন ও বিচার ডেস্ক

কলাবাগান ক্রীড়াচক্রের সভাপতি শফিকুল আলম ফিরোজ
কলাবাগান ক্রীড়াচক্রের সভাপতি শফিকুল আলম ফিরোজ। ফাইল ছবি

হলুদ রঙের ইয়াবা ও অবৈধ অস্ত্রসহ আটক রাজধানীর কলাবাগান ক্রীড়াচক্রের সভাপতি শফিকুল আলম ফিরোজের আরও তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

আজ রোববার ধানমন্ডি থানায় করা মাদক মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য আবারও ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র‌্যাব-২ এর উপপরিদর্শক জসীম উদ্দীন। অন্যদিকে তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন।

শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম আবু সুফিয়ান মোহাম্মাদ নোমান জামিন আবেদন নামঞ্চুর করে তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর ১০ দিনের রিমান্ড শেষে অস্ত্র মামলায় আরও পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। ২১ সেপ্টেম্বর ধানমন্ডি থানায় দায়ের করা অস্ত্র ও মাদক আইনের পৃথক দুই মামলায় ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। ওইদিন সকালে র‌্যাব বাদী হয়ে অস্ত্র ও মাদক আইনে দুটি মামলা করে। অস্ত্র আইনে দায়ের হওয়া মামলা নম্বর ২০(৯)১৯ ও মাদক আইনে দায়ের হওয়া মামলা নম্বর ২১ (৯)১৯।

২০ সেপ্টেম্বর দুপুর দেড়টার দিকে শফিকুল আলমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র‌্যাব হেফাজতে নেয়া হয়। সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে কলাবাগান ক্রীড়াচক্র ক্লাবে অভিযান চালায় র‌্যাব। অভিযান শেষে রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-২ এর অধিনায়ক আশিক বিল্লাল জানান, অভিযানের সময় শফিকুলের কাছে সাত প্যাকেট হলুদ রঙের ইয়াবা পাওয়া গেছে। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত এ ধরনের ইয়াবা পাওয়া যায়নি। এ ইয়াবায় কোনো গন্ধ নেই। এটা নতুন আবিষ্কার।

তিনি আরও বলেন, অভিযানে একটা বিদেশি পিস্তলসহ তিন রাউন্ড গুলি পাওয়া গেছে। যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি ক্যাসিনোতে খেলার কয়েন, স্কোরবোর্ড ও ৫৭২ প্যাকেট তাস উদ্ধার করা হয়েছে। কলাবাগান ক্রীড়াচক্রের যেসব জিনিসপত্র পাওয়া গেছে ধারণা করা হচ্ছে আগে এ ক্লাবে ক্যাসিনো খেলা হতো।

প্রসঙ্গত, গত ১৮ সেপ্টেম্বর অবৈধ জুয়া ও ক্যাসিনো চালানোর অভিযোগে র‌্যাবের হাতে আটক হন ঢাকা দক্ষিণ মহানগর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। অস্ত্র ও মাদকের পৃথক দুই মামলায় তাকে সাতদিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

সম্প্রতি ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কয়েকজন নেতার বিষয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারপরই ছাত্রলীগের পদ হারান শোভন-রাব্বানী। এরপর আটক হন খালেদ। ২০ সেপ্টেম্বর যুবলীগের অপর আলোচিত নেতা জি কে শামীমকে নিকেতনের নিজ কার্যালয় থেকে আটক করা হয়।

রাজধানীর সবুজবাগ, বাসাবো, মতিঝিলসহ বিভিন্ন এলাকায়র প্রভাবশালী ঠিকাদার হিসেবে পরিচিত যুবলীগ নেতা এস এমত গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমকে আটক করে র‌্যাব। বেলা ১১টা থেকে জি কে শামীমের নিকেতনের ডি ব্লকের ৫ নম্বর রোডের ১৪৪ নম্বর বাসা ঘিরে ফেলে র‌্যাব। এর আগে নিকেতন এলাকায় জি কে শামীমের আরেকটি বাসা থেকে তাকে ডেকে আনা হয়। পরে তাকে আটক করেই অভিযান চালায় র‌্যাব। অভিযান শেষে সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটের দিকেত শামীমকে র‌্যাব কার্যালয়ে নেয়া হয়।

শামীমের সঙ্গে তার সাত দেহরক্ষীকেও আটক করা হয়। এ সময় বেশ কয়েকটি আগ্নেয়াস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করা হয় এক কোটি ৮০ লাখ নগদ টাকা, ১৬৫ কোটি টাকার ওপরে এফডিআর (স্থায়ী আমানত)। এর মধ্যে তার মায়ের নামে ১৪০ কোটি টাকা ও ২৫ কোটি টাকা তার নামে।

এদিকে ক্যাসিনো সম্রাট খ্যাত যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটকে আজ ভোর ৫টার দিকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জুশ্রীপুর গ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার সঙ্গে আরমান নামে তার এক সহযোগীকেও আটক করা হয়। পরে ঢাকায় এনে তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদও করে র‌্যাব।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে