প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে তিস্তা চুক্তি করতে না পারায় বিএনপির সমালোচনার জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কিছু পেতে গেলে কিছু দিতে হয়। আমরাও অনেক কিছু এনেছি। সব দিয়ে ফেলেছি বিষয়টা এমন নয়। আমাদের পাওয়ার বিষয়টা অনেক বেশি।
আজ সোমবার সচিবালয়ে সমসাময়িক ইস্যুতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
কাদের বলেন, বর্তমান সরকারের আমলেই তিস্তা চুক্তি হবে। গঙ্গা চুক্তি শেখ হাসিনার আমলে হয়েছে। তিস্তা চুক্তিও এই সরকারের আমলেই হবে। ভারত সরকারের সদিচ্ছার কোনো অভাব নেই।
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে বিএনপির সমালোচনার বিষয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, দেয়া-নেয়ার সম্পর্কে বন্ধুত্ব থাকে। আমরাও অনেক কিছু এনেছি। সব দিয়ে ফেলেছি বিষয়টা এমন নয়। আমাদের পাওয়ার বিষয়টা অনেক বেশি। সীমান্ত সমস্যার সমাধান আমরাই করেছি। যারা অভিযোগ করে তারা সেটা করতে পারেনি। ৬৮ বছর পর এ সমস্যা সমাধান হয়েছে। পৃথিবীর কোনো দেশে ছিটমহল সমস্যা শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান হয়নি। সমুদ্রসীমার ব্যাপারে ভারত আপিল করতে পারত, তারা তা করেনি। সম্পর্ক ভালো থাকলে অনেক কিছুই পাওয়া যায়। বৈরিতা করে কিছু পাওয়া যায় না।
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের চুক্তি আড়াল করতেই সম্রাটকে গ্রেফতার করা হয়েছে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এমন দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা হাস্যকর মনে হয় না? দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযানের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সফরের সম্পর্ক কি? গ্রেফতারে কেন বিলম্ব হয়েছে সেটা নিয়ে র্যাবের ডিজি ব্যাখ্যা দিয়েছেন। বাংলাদেশে শেষ পর্যন্ত কেউ রেহাই পায় না। পালিয়ে থাকার মতো অবস্থা সৃষ্টি করা যায়। তবে সেটি ফলপ্রসূ হয় না, এক পর্যায় ধরা পড়বেই।
চলমান দুর্নীতি বিরোধী অভিযান প্রসঙ্গে কাদের বলেন, অভিযান চলবে, ১৫ দিনেই কি সব কমপ্লিট করব? আরো অনেক কিছুই দেখার আছে। কাদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে, কেন চলছে প্রধানমন্ত্রী নিজেই তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন। এখানে লুকোচুরিরে কিছু নেই। আমরা যা বলছি মুখে বলছি না, অ্যাকশনে প্রমাণ করেছি। যারা কালপ্রিট, করাপশন করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ায় কোনো ধরনের সংকোচ নেই।
যুবলীগ নিয়ে ভবিষ্যত পরিকল্পনা জানতে চাইলে সেতুমন্ত্রী বলেন, তাদের সম্মেলন হচ্ছে। চারটি সহযোগী সংগঠনের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। নভেম্বরের মধ্যেই সম্মেলনের কাজ শেষ করতে চিঠি দিয়ে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তারা সম্মেলনের প্রস্তুতিও নিচ্ছে। নেত্রী সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসাবে থাকবেন। তার কাছে সময় চাওয়া হয়েছে। যুবলীগের কাউন্সিলরা ঠিক করবে তারা কাদের নেতৃত্বে আনবেন। পার্টির সভাপতি ফাইনাল অথরিটি। তিনি পরিবর্তন করতে চাইলে অবশ্যই করবেন।
যুবলীগের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়মী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, তিনি অপরাধী হলে সেটি প্রমাণ করতে হবে। প্রমাণ না পেয়ে ব্যবস্থা নেয়া যায় না। সরকারের উচ্চাসন থেকে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। যা হয়েছে সেটি দেখতে থাকুন। ভবিষ্যতে কি হবে তাও দেখতে থাকুন।
তিনি বলেন, ওয়াকার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন একটি ক্লাবের সভাপতি। তাই বলে কি তিনি ক্যাসিনো ব্যবসা করেন? স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা কাওসার ক্লাবের সঙ্গে জড়িত। তাই বলে কি তিনি ক্যাসিনো ব্যবসা করেন? অভিযোগ উঠলেই ব্যবস্থা নেয়া যায় না। অভিযোগের ভিত্তি লাগে, প্রমাণ লাগে।
কাদের বলেন, অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ হলে কেউ রেহাই পাবেন না। স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতির বিরুদ্ধেও অনেক অভিযোগ রয়েছে এ প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ হলে কেউ রেহাই পাবে না। ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননও তো একটা ক্লাবের মালিক, প্রমাণ তো করতে হবে তিনি ক্যাসিনো ব্যবসা করেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা যা বলছি তা মুখে বলছি না, কালপ্রিটদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ায় কোনো দ্বিধা-সংকোচ নেই।