আবরার হত্যা: বুয়েট ছাত্রলীগের ১০ নেতা-কর্মী পাঁচ দিনের রিমান্ডে

মত ও পথ রিপোর্ট

হত্যার কথা স্বীকার করেছেন গ্রেফতারকৃত ছাত্রলীগ নেতারা
ছবি : সংগৃহিত

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের ১০ নেতা-কর্মীকে পাঁচ দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।

আজ মঙ্গলবার পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত এই আদেশ দেন।

এর আগে এই ১০ জনকে আদালতে হাজির করে ১০ দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে পুলিশ।

রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আদালতকে বলা হয়, বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছেন এই ১০ আসামি। তাঁরা ঠান্ডা মাথায় খুন করেছেন। এই ১০ আসামি যে আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় জড়িত, তা ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা আদালতকে আরও বলেন, তাঁরা ছাত্র নামের কলঙ্ক। আবরার ফাহাদকে হত্যা করার পর বীরদর্পে ঘুরেছেন। ডাক্তারও ডাকেননি। তাঁরা সবাই খুনি।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হেমায়েত উদ্দিন খান আদালতে বলেন, একজন সহপাঠী আরেকজন সহপাঠীকে এমন নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করতে পারেন? আবরার ফাহাদের কী দোষ ছিল? তাঁরা খুনি। এই খুনের রহস্য উদ্‌ঘাটনের জন্য প্রত্যেক আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি।

অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার ১০ জন বুয়েটছাত্রের মধ্যে দুজনের আইনজীবী আদালতে যুক্তি তুলে ধরেন।

আসামি ইশতিয়াক আহমেদের আইনজীবী হুমায়ুন কবির আদালতের কাছে দাবি করেন, আবরার ফাহাদ হত্যায় তাঁর মক্কেল কোনোভাবেই জড়িত ছিলেন না। তাঁকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন নাকচ করে জামিন দেওয়া হোক।

আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে আবরার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের ১০ নেতা-কর্মীকে পাঁচ দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দেন।

পুলিশ জানায়, মামলার এজাহারভুক্ত ১০ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। আবরার হত্যার ঘটনায় গতকাল সকালে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান ও সহ-সভাপতি ফুয়াদ হোসেনকে আটক করা হয়। দুপুরের পর পুলিশ এই হত্যার ঘটনায় আটক করে ছাত্রলীগের নেতা অনীক সরকার, মেফতাহুল ইসলাম, ইফতি মোশারেফ, বুয়েট ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান ওরফে রবিন, গ্রন্থ ও প্রকাশনা সম্পাদক ইশতিয়াক আহমেদ ওরফে মুন্না, ছাত্রলীগের সদস্য মুনতাসির আল জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম ওরফে তানভীর ও মোহাজিদুর রহমানকে।

আবরার বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭তম ব্যাচ) ছাত্র ছিলেন। তিনি বুয়েটের শেরেবাংলা হলের নিচতলায় ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন। গত রোববার রাতে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করেন বুয়েট ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী।

আবরার হত্যার ঘটনায় গতকাল রাতে ১৯ জনকে আসামি করে তাঁর বাবা বরকত উল্লাহ ঢাকার চকবাজার থানায় মামলা করেছেন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে