শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় ক্যাম্পাস যখন উত্তাল তখন দেখা নেই বুয়েট ভিসি সাইফুল ইসলামের। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ভিসির সঙ্গে কথা বলার দাবি জানানো হচ্ছিল বারবার। এমনকি ভিসিকে ক্যাম্পাসে আসার আলটিমেটামও দেন আন্দোলনকারীরা। সেই আলটিমেটামে ক্যাম্পাসে এসে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন ভিসি। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা তাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
আজ মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে চারটার দিকে ক্যাম্পাসে আসেন বুয়েট ভিসি। প্রথমে তিনি প্রভোস্টদের নিয়ে বৈঠক করেন। সন্ধ্যা ছয়টার পর তিনি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সামনে আসেন।
রোববার রাতে বুয়েটের শেরে বাংলা হলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নৃশংস পিটুনিতে মারা যান দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ। গতকাল থেকেই বুয়েট শিক্ষার্থীরা এই হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন।
তারা সাত দফা দাবি জানান। তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কার করতে হবে, আবাসিক হলগুলোতে র্যাগের নামে এবং ভিন্নমত দমানোর নামে নির্যাতন বন্ধে প্রশাসনের সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত করতে হবে, মামলার খরচ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বহন করতে হবে, এর আগের ঘটনাগুলোর বিচার করতে হবে, ১১ অক্টোবরের মধ্যে শেরে বাংলা হলের প্রভোস্টকে প্রত্যাহার করতে হবে এবং ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতির স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে।
আন্দোলনকালীদের সামনে এসে মাইক হাতে নিয়ে ভিসি বলেন, তোমরা যে দাবিগুলো জানিয়েছ আমি সেগুলো দেখেছি। আমি তোমাদের কোনো দাবি রিজেক্ট করছি না। এ ব্যাপারে কথাবার্তা বলেছি। নীতিগতভাবে তোমাদের সবগুলো দাবি মেনে নিয়েছি। অসুবিধা থাকলে দূর করতে হবে। সবগুলো অবশ্য আমার হাতে নেই।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তোমরা অধৈর্য হয়ো না, অপেক্ষা করো, আমি তোমাদের জন্য আছি।
- আবরার হত্যা: বুয়েট ছাত্রলীগের ১০ নেতা-কর্মী পাঁচ দিনের রিমান্ডে
- তিন দফা জানাজা শেষে চোখের জলে আবরারকে শেষ বিদায়
এ সময় শিক্ষার্থীরা ভিসির কাছে দাবিগুলো ধরে ধরে মেনে নেয়ার দাবি জানান। ভিসি জানান, এই পরিবেশে এটা সম্ভব নয়। এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা হৈ চৈ শুরু করলে ভিসি চলে যেতে চান। তবে শিক্ষার্থীদের প্রতিরোধের মুখে ভিসি সেখানেই আটকে যান। এক পর্যায়ে ভিসির জন্য একটি চেয়ার নিয়ে আসেন শিক্ষার্থীরা। তারা জানান, দাবি মেনে না নেয়ার ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত তারা ভিসিকে যেতে দেবেন না।
ঘটনার পর ক্যাম্পাসে না আসা প্রসঙ্গে ভিসি জানান, তিনি এটা নিয়েই কাজ করছিলেন। সরকারের উচ্চ মহলের সঙ্গে তার নিয়মিত যোগাযোগ হয়েছে।