বুয়েট শিক্ষার্থীদের দাবির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করল বিএনপি

মত ও পথ প্রতিবেদক

রিজভীর সংবাদ সম্মেলন
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ফাইল ছবি

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দ্বিতীয় বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের হত্যাকে কেন্দ্র করে চলমান আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীদের দাবির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেছে বিএনপি।

আজ বুধবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কথা বলেন।

রিজভী বলেন, আন্দোলনরত ছাত্রদের দাবির সাথে আমরাও অবিলম্বে অমিত সাহাকে গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি। একই সাথে ছাত্রদের প্রতিটি দাবির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করছি।

তিনি বলেন, যার রুমে আবরারকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে সেই অমিত সাহার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এজাহারে তার নাম নেই, তাকে বহিষ্কারও করেনি ছাত্রলীগ। শেরেবাংলা হলের ২০১১ নম্বর রুম তথা টর্চার সেলটি অমিত সাহার। তাকে বাঁচাতে বুয়েট প্রশাসন ও বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তা ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে বলব, জাতীয় স্বার্থবিরোধী চুক্তির প্রতিবাদ করতে গিয়ে লাশ হতে হলো আবরারকে। এখন চুক্তি বাতিল করে প্রমাণ দিন, আপনি আবরারের পক্ষে, ভারতের আবদারের পক্ষে নন।

বিএনপির এই নেতা বলেন, গণমাধ্যম থেকে জেনেছি, আজ (বুুধবার) প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলন করে বক্তব্য দেবেন। জাতির সামনে বক্তব্য দেয়ার আগে সকল দেশবিরোধী চুক্তি বাতিল করবেন কি না? -জানতে চাই।

রিজভী বলেন, বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদের বর্বরোচিত ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর যখন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন, প্রতিবাদ সমাবেশ ও আধিপত্যবাদ বিরোধী গগনবিদারী স্লোগানে উত্তাল তখন সরকার ছাত্রদেরকে নিরস্ত করার জন্য নানা ছলছাতুরির আশ্রয় নিচ্ছে। সরকার প্রধান থেকে শুরু করে সরকারের মন্ত্রীরা নানা রকম বক্তব্য দিচ্ছেন।

রিজভী আরও বলেন, আবরারের স্ট্যাটাসের পিছনে কারণই ছিল দেশবিরোধী চুক্তির বিরোধীতা ও সত্য ইতিহাস তুলে ধরা। আর দেশবিরোধী চুক্তিটি করেছেন বর্তমান মিডনাইট ভোটের সরকার, জনগণের সাথে দিনে-দুপুরে প্রতারণা করে। সুতরাং আবরার খুনের দায় সরকারও এড়াতে পারে না। দেশবিরোধী চুক্তি বাতিল ছাড়া আবরারের আত্মা শান্তি পাবে না।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কিংবা শেখ হাসিনা নিজেদের সমালোচনা কিছুটা সহ্য করতে পারলেও ভারত নিয়ে কোনো সমালোচনা তারা সহ্য করতে পারে না। ন্যায্য হিস্যার কথা বললেই আওয়ামী লীগ সরকার তেলে-বেগুনে জ্বলে ওঠে। এ সময়ের শ্রেষ্ঠ দেশপ্রেমিক আবরার ফাহাদ। এ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার যুদ্ধের প্রধান প্রেরণা হয়ে থাকবে আবরার ফাহাদ। আবরার ফাহাদ আমাদের প্রাণের পতাকা।

তিনি আরও বলেন, আবরার ফাহাদের নির্মম মৃত্যু কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটি ক্ষমতাসীনদের খুনের সংস্কৃতির ধারাবাহিক চর্চার একটি অংশ মাত্র। বাংলাদেশের মানুষের পক্ষের মানুষের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার সময় এসেছে। এ দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী বিএনপি চেয়ারপাসরন বেগম খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করে দেশের জনগণের অধিকার ও দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সুনিশ্চিত করতে হবে।

বাংলাদেশের নয়, বিদেশ থেকে আমদানি করা গ্যাস প্রক্রিয়াজাত করে ভারতে রফতানি হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেনের এমন বক্তব্যে রিজভী বলেন, কী হাস্যকর যুক্তি। ভারতের সাথে স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক তৈরি করা এ মন্ত্রী মহোদয়কে বলতে চাই, বিদেশ থেকে গ্যাস এনে আমাদের প্রক্রিয়া করে ভারতে রফতানি করতে হবে কেন? ভারত নিজে কি প্রক্রিয়া করতে জানে না? আপনি যেখান থেকে গ্যাস আনবেন সেখান থেকে ভারত নিজেই তো গ্যাস নিতে পারে, আপনাকে কেন দিতে বলবে?

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মাঝে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কবির মুরাদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল আউয়াল খান, সেলিমুজ্জামান সেলিম, আব্দুস সালাম আজাদ, সহ দফতর সম্পাদক মুহাম্মদ মনির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে