ক্যাসিনো: ডিএনসিসির কাউন্সিলর ‘পাগলা মিজান’ আটক

মত ও পথ রিপোর্ট

কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মিজান
ফাইল ছবি

ঢাকায় ক্লাব ব্যবসার আড়ালে অবৈধ ক্যাসিনো পরিচালনার অভিযোগে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মিজান ওরফে পাগলা মিজানকে আটক করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে তাকে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল থেকে আটক করে র‌্যাব।

এ তথ্য গণমাধ্যকে নিশ্চিত করেছেন র‌্যাবের সহকারী পরিচালক মিজানুর রহমান।

universel cardiac hospital

আটক হাবিবুর রহমান মিজান ডিএনসিসির ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। মোহাম্মদপুর এলাকায় জমিদখল, প্রভাব বিস্তারসহ নানা অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ঢাকায় ক্যাসিনোবিরোধী শুদ্ধি অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে আড়ালে চলে যান তিনি।

তিনি শ্রীমঙ্গল সীমান্ত হয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। গোপন খবরের ভিত্তিতে তাকে আটক করে র্যা ব।

প্রসঙ্গত ১৪ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির এক সভায় চাঁদা দাবির অভিযোগে ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও গোলাম রাব্বানীকে অপসারণের নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পাশাপাশি যুবলীগ নেতাদের বিষয়েও চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, যুবলীগের এক নেতা অস্ত্র উঁচিয়ে চলে। আরেকজন প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি করে বেড়ায়।

এর পর গণমাধ্যমে যুবলীগ নেতাদের সংশ্লিষ্টতায় ঢাকার ৬০টি জায়গায় ক্যাসিনো পরিচালনার খবর প্রকাশ হয়। ১৮ নভেম্বর ফকিরাপুলের ইয়াংমেনস, ওয়ান্ডারার্স এবং গুলিস্তানে মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া সংসদে অভিযান চালিয়ে ক্যাসিনোর সরঞ্জাম, বিপুল পরিমাণ মদ ও ৪০ লাখের বেশি টাকা উদ্ধার করে র‌্যাব।

ক্যাসিনো পরিচালনার অভিযোগে ওই দিনই ইয়াংমেনস ক্লাবের সভাপতি ও যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করা হয়।

পাশের ওয়ান্ডারার্স থেকেও জুয়ার সরঞ্জাম উদ্ধার হয়। এ ক্লাব পরিচালনার নেতৃত্বে ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওসার।

এর পর ধানমণ্ডির কলাবাগান ক্রীড়াচক্রে অভিযান চালিয়েও ক্যাসিনো চালানোর প্রমাণ পায় র‌্যাব। অস্ত্র-গুলি ও ইয়াবাসহ গ্রেফতার করা হয় ক্লাবের সভাপতি কৃষক লীগের সহসভাপতি শফিকুল আলম ফিরোজকে।

এর মধ্যে যুবলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে ঠিকাদারি করা গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জিকে শামীমকে গ্রেফতার করা হয়। পরে গ্রেফতার করা হয় মোহামেডান ক্লাবের ডিরেক্টর ইনচার্জ ও বিসিবির পরিচালক লোকমান হোসেন ভূঁইয়াকে।

দুবাই থেকে গ্রেফতার করা হয় শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানকে। পরে গ্রেফতার করা হয়েছে ক্যাসিনো সম্রাট যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চলমান অভিযানকে ‘শুদ্ধি অভিযান’ নাম দিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সন্ত্রাস, চাঁদবাজি, টেন্ডারবাজিসহ বিভিন্ন অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ক্যাসিনো ব্যবসায়ীদের ভাসানচরে পাঠানো হবে।

শুদ্ধি অভিযানের ধারাবাহিকতায় আজ আটক করা হলো হাবিবুর রহমান মিজানকে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে