আট দফা দাবিতে রোববার মধ্যরাত থেকে ২৪ ঘণ্টা গাড়ি চালানো বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশে উবারের চালকদের দুটি সংগঠন।
ঢাকা রাইড শেয়ারিং ড্রাইভারস ইউনিয়ন এবং বাংলাদেশে রাইড শেয়ারিং ড্রাইভার্স অ্যাসোসিয়েশন নামে দুটি সংগঠন উবারের ‘নানা অনিয়মের’ প্রতিবাদে এ কর্মসূচি দিয়েছে।
বাংলাদেশে রাইড শেয়ারিং ড্রাইভারস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শুভ আহমেদ রোববার রাতে গণমাধ্যমকে বলেন, আট দফা দাবিতে তারা এ কর্মসূচি ডেকেছেন। উবারের অ্যাপ ব্যবহার করে চলাচলকারী মোটরকার ও মোটরসাইকেল এ কর্মসূচির আওতায় থাকবে। আমরা চালকদের আহ্বান জানাচ্ছি এ দাবির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করার জন্য।
তিনি বলেন, আমরা ছয় মাস ধরে এই দাবি করে আসছি। এসব দাবি ঢাকায় চলাচলকারী উবারচালকের দাবি। আশা করছি, সবাই আমাদের সঙ্গে যোগ দেবেন। এ কর্মসূচির পর দাবি না মানলে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
উবার চালকদের দাবিগুলো হলো- ট্রিপ শুরু করার পর থেকে ট্রিপ শেষ করা পর্যন্ত কিলোমিটার ও মিনিট হিসাব করে ভাড়া দিতে হবে, উবারের কমিশন ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১২ শতাংশ করতে হবে, গ্যাসের দাম বাড়ার কারণে ভাড়ার হার বাড়াতে হবে, ডেস্টিনেশন অপশনে ডেস্টিনেশনের আশপাশে ট্রিপ দিতে হবে, চালকদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে, যাত্রীদের দ্বারা গাড়ির কোনো ক্ষতি হলে তার ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে, যাত্রীদের করা অভিযোগ যাচাই না করে চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না, যাত্রীর একাউন্টে যাত্রীর ছবি থাকা বাধ্যতামূলক করতে হবে, যাত্রীকে লোকেশন সম্পর্কে প্রাথমিক প্রশিক্ষণ দিতে হবে, চালকের সঙ্গে যাত্রীর সংযোগ দূরত্ব সর্বোচ্চ দুই কিলোমিটার করতে হবে।
দাবিগুলো নিয়ে কয়েক দফা আলোচনা হলেও কোনো সমাধান হয়নি বলে জানান ঢাকা রাইড শেয়ারিং ড্রাইভারস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক বেলাল আহমেদ।
তিনি বলেন, আমরা এর আগে উবারের ঢাকা অফিসে দুদফা গিয়েছিলাম। উত্তরায় তাদের অফিসের সামনে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছি। কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তারা বলেছে, উবারের সব সিদ্ধান্ত ভারত থেকে আসে, এখানে তাদের পক্ষে কিছুই করার নেই।
এ বিষয়ে উবার বাংলাদেশের কোনো বক্তব্য তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি। উবারের বাংলাদেশ প্রধান জুলকারনাইনের মোবাইলে রোববার রাতে ফোন করা হলে তা বন্ধ পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশে উবারের জনসংযোগ প্রতিষ্ঠান বেঞ্চমার্ক পিআরের পরিচালক এ এস এম আসাদুজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তারা উবারকে জানিয়েছেন। তবে তারা এখনও এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য দেয়নি। দিলে আমরা আপনাদের জানিয়ে দেব।
২০১৬ সালে বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করে উবার। যানজট আর গণপরিবহনে নৈরাজ্যের শহর ঢাকায় মোবাইল অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ারিং সেবা দ্রুত জনপ্রিয়তা পায়।
এছাড়াও পাঠাও, ওভাই, পিকমি, স্যাম, সহজের মতো আরও কয়েকটি রাইড শেয়ারিং কোম্পানি এখন চালু রয়েছে।