নব্য জেএমবির প্রধান টার্গেট পুলিশ। আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠীর (বিশেষ করে আইএস) দৃষ্টি আকর্ষণের জন্যই জঙ্গিরা পুলিশের ওপর হামলার টার্গেট করেছিল বলে জানিয়েছেন ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম।
সোমবার বেলা ১১টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান।
রোববার (১৩ অক্টোবর) রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে আটক নব্য জেএমবির দুই সদস্য মো. মেহেদী হাসান তামিম ও মো. আব্দুল্লাহ আজমিরকে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে এ তথ্য জানান তিনি।
মনিরুল ইসলাম বলেন, সিটিটিসির একটি দল বিশেষ অভিযানে নব্য জেএমবির এই দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। তাদের কাছ থেকে জঙ্গিকার্যক্রম পরিচালনায় ব্যবহৃত একটি ল্যাপটপ ও তিনটি মোবাইলফোন উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতরা নব্য জেএমবির সামরিক শাখার সদস্য। তাদের প্রধান লক্ষ্য পুলিশ। তাই বিভিন্ন সময় হামলার জন্য তারা পুলিশবক্সকে লক্ষ্য করে হামলা করেছে। প্রতিটি হামলার আগে টার্গেটকৃত স্থানে বারবার রেকি করে তারা।
সিটিটিসি প্রধান বলেন, পুলিশের ওপর তাদের হামলার কারণ হচ্ছে আন্তর্জাতিক জঙ্গিসংগঠনগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করা। যার মধ্যে তাদের প্রথম পছন্দ ছিল আইএস। তারা তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছিল। তবে এখন আইএসের সঙ্গে তাদের কোনো যোগাযোগ নেই।
সিটিটিসি প্রধান আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নব্য জেএমবির সামরিক শাখার এ দুই সদস্য জানিয়েছে, তারা প্রত্যেকেই খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় থেকেই তারা নিষিদ্ধ সংগঠনের কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত হয়।
২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ভোলার একটি দুর্গমচরে সামরিক প্রশিক্ষণ নেয় তারা। ২০১৯ সালের শুরুর দিকে গত সেপ্টেম্বর মাসে নারায়ণগঞ্জ থেকে আটক ফরিদ উদ্দিন রুমির ছোট ভাই রফিকের নেতৃত্বে একটি সামরিক শাখা প্রতিষ্ঠা করা হয়। হামলার লক্ষ্যে তারা ফতুল্লায় রফিকের বাসায় একটি কারখানায় বোমা তৈরি করে আসছিল। তাদের তৈরি বোমা দিয়ে চলতি বছরের ১৯ এপ্রিল গুলিস্তানে এবং ৩১ আগস্ট মালিবাগে পুলিশের ওপর হামলা করা হয়।
এছাড়া সায়েন্সল্যাব, মালিবাগ, পল্টন ও খামারবাড়ির বোমা হামলায় ব্যবহৃত বোমাও তাদের হাতেই তৈরি ছিল বলে তিনি জানিয়েছেন।
মনিরুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃতদের অন্য সহযোগীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে। গ্রেফতারকৃতদের আদালতে সোপর্দ করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হবে।