বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলনে উত্তাল ক্যাম্পাসে কোনোরকম শঙ্কা ছাড়াই অনুষ্ঠিত হলো ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা। ভর্তি পরীক্ষার কারণে আন্দোলনকারীরা তাদের কার্যক্রম শিথিল করলে বুয়েট কর্তৃপক্ষ আজ ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করে।
সোমবার সকাল ৯টায় এই ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়। দুপুর ১২টা পর্যন্ত টানা তিন ঘণ্টা লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। স্থাপত্য বিভাগে ভর্তির জন্য আবেদনকারীদের দুপুর ২টায় অঙ্কন পরীক্ষা শুরু হবে। বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে এই পরীক্ষা।
এদিকে ভর্তি পরীক্ষা দিতে এসে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। ভর্তি পরীক্ষা শেষে আবীর নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘পরীক্ষা ভালো হয়েছে। কোনো রকম সমস্যায় পড়তে হয়নি।‘
বুয়েট ক্যাম্পাসে অবস্থান করে দেখা যায়, বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে একবার ওয়ার্নিং দেয়া হয় পরীক্ষার্থীদের। এরপর পাঁচ মিনিট পর ১১টা ৫৯ মিনিটে পরীক্ষা সমাপ্তির ঘণ্টা বাজে।
এর আগে সকাল থেকেই পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ভিড় ছিল বুয়েট ক্যাম্পাসে। সকাল ৯টায় পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে কক্ষে প্রবেশ করলে অভিভাবকরা বাইরে অবস্থান নেন। পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জন্য ফ্রি পানির ব্যবস্থা করে বুয়েট কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও অভিভাবকদের জন্য বসার সুব্যবস্থাও রাখে কর্তৃপক্ষ।
বুয়েটে রাসায়নিক প্রকৌশল বিভাগে ৬০, ধাতব প্রকৌশলে ৫০, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ১৯৫, পানিসম্পদ প্রকৌশলে ৩০, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ১৮০, নৌস্থাপত্য ও সামুদ্রিক প্রকৌশলে ৫৫, শিল্প ও উৎপাদন প্রকৌশলে ৩০, বৈদ্যুতিক ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশলে ১৯৫, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশলে ১২০, বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ৩০, স্থাপত্য বিভাগে ৫৫ এবং নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগে ৩০টি আসন রয়েছে।
বুয়েটে ভর্তি আবেদন শুরু হয় ৩১ আগস্ট। আবেদন ও ভর্তি ফি প্রদানের শেষ দিন ছিল ৯ সেপ্টেম্বর। ভর্তি পরীক্ষার যোগ্য প্রার্থীদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয় ১৮ সেপ্টেম্বর। আবেদনকারীদের ভেতর থেকে প্রথম ১২ হাজার জনকে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হয়।
ভর্তি পরীক্ষার ফল আগামী ২৬ অক্টোবর প্রদান করা হবে।
ভর্তি পরীক্ষার অল্প কয়েক দিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলনে উত্তাল হয়ে ওঠে বুয়েট ক্যাম্পাস। এ সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ১০ দফা দাবি জুড়ে দেয়। তাদের দাবি মানা না হলেও ভর্তি পরীক্ষা হতে দেয়া হবে না বলেও জানায় আন্দোলনকারীরা। একপর্যায়ে বুয়েট কর্তৃপক্ষ তাদের দাবি-দাওয়া মেনে নিতে শুরু করলে ১৩ ও ১৪ অক্টোবর আন্দোলন শিথিল করে আন্দোলনকারীরা।