ভূমধ্যসাগর থেকে দেড় শতাধিক অভিবাসী উদ্ধার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ভূমধ্যসাগর থেকে অভিবাসী উদ্ধার
ফাইল ছবি

ডক্টরস ইউদাউট বর্ডারস ইউরোপে প্রবেশের চেষ্টাকারী দেড় শতাধিক অভিবাসীকে উদ্ধার করেছে। জানা যায়, দুদিনে মানবিক সংস্থাটি অন্তত ১৭৬ জনকে ভূমধ্যসাগর থেকে উদ্ধার করেছে। তবে উদ্ধার ব্যক্তিদের বিস্তারিত পরিচয় ও নাগরিকত্ব সম্পর্কে কিছু জানাতে পারেনি তারা।

নিজেদের ওয়েবসাইটে ডক্টরস ইউদাউট বর্ডারস জানায়, গত শনি ও রোববার এসব অভিবাসীদের উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকারী জাহাজ ‘ওশান ভাইকিংসে’ তাদের ইতালির উপকূলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

উন্নত জীবনের আশায় ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে ১৯৮৮ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজার মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।

ভূমধ্যসাগরের উত্তরাংশে ইউরোপ মহাদেশের স্পেন, ফ্রান্স, ইতালি, গ্রিস এর অবস্থান। আর দক্ষিণাংশে রয়েছে আফ্রিকা মহাদেশের মরক্কো, আলজেরিয়া, তিউনিসিয়া, লিবিয়া, মিসর প্রভৃতি দেশ।

ভূমধ্যসাগরের দক্ষিণাংশে আফ্রিকান দেশগুলোর উপকূলে নিরাপত্তা জোরদার করেছে দেশগুলোর সরকার। কিন্তু ২০১১ সালে লিবিয়ার সাবেক স্বৈরশাসক গাদ্দাফি নিহত হওয়ার পর দেশটির ১ হাজার ৭০০ কিলোমিটার ভূমধ্যসাগরীয় উপকূল অরক্ষিত হয়ে পড়ে।

মানব পাচারকারীরা বিগত বছরগুলোতে লিবিয়ার দক্ষিণ সীমান্ত দিয়ে আসা ইরিত্রিয়া, সোমালিয়া, সুদান, মালিসহ সিরিয়া, মিশর ও এশিয়ার আরও কিছু দেশের অভিবাসীদের ন্যূনতম ২০০ মার্কিন ডলারের বিনিময়ে ভঙ্গুরপ্রায় জাহাজে করে ইতালির উপকূলে এনে পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে।

২০১৩ সালের অক্টোবর মাসে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে একটি মর্মস্পর্শী ঘটনা ঘটে। ইতালির লাম্পেদুসা দ্বীপের উপকূলরক্ষীদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য আফ্রিকার গৃহযুদ্ধকবলিত দেশ সোমালিয়া ও তানজানিয়ার প্রায় ৫০০ যাত্রীকে বহনকারী জাহাজে একটি কম্বল থেকে আগুন নৌকায় আগুন ছঁড়িয়ে যায়।

পরে  নৌকার সব অভিবাসী ভূমধ্যসাগরের বরফ জলে ঝাঁপ দিয়ে প্রায় ২৭০ জন যাত্রী মারা যায়, ১৫৫ জনকে উদ্ধার করা গেলেও বাকি প্রায় ২০০ আশ্রয়প্রার্থীর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

ইরাক, সিরিয়া ও লিবিয়া সংকটের কারণে আফ্রিকান দেশগুলোতে জাতিগত হাঙ্গামার কারণে সাম্প্রতিক সময়ে এভাবে সাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপের দেশগুলোতে যাওয়ার ঘটনা বেড়েছে।

বছরের এই সময় সাগর কিছুটা শান্ত থাকায় বিভিন্ন আকারের ঝুঁকিপূর্ণ নৌযানে কয়েক শ মাইল দূরে স্বপ্নের ইউরোপে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন অভিবাসীরা।

জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, জাতিগত বৈষম্যের কারণে প্রতিদিন শত শত মানুষ নিজ ভিটেমাটি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছে আর এই মুহূর্তে বিশ্বজুড়ে প্রায় চার কোটি শরণার্থীদের ৮০ শতাংশ মানুষ দুর্গত অঞ্চলের প্রতিবেশী দেশসমূহেই আশ্রয় নিয়েছে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে