কৃষক হানিফ হত্যা মামলায় স্ত্রীসহ চারজনের মৃত্যুদণ্ড

আইন ও বিচার ডেস্ক

কৃষক হানিফ হত্যা মামলায় স্ত্রীসহ চারজনের মৃত্যুদণ্ড
কৃষক হানিফ হত্যা মামলায় স্ত্রীসহ চারজনের মৃত্যুদণ্ড

কুষ্টিয়া ভেড়ামারায় কৃষক হানিফ হত্যা মামলায় স্ত্রী, ভাইপোসহ চারজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (১৬ অক্টোবর) বেলা ১১টায় কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক অরূপ কুমার গোস্বামী আদালতে আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন ভেড়ামারা উপজেলার আড়কান্দি গ্রামের লরু কসাই ওরফে জাকির প্রামাণিকের ছেলে মো. শ্যামল প্রামাণিক (৪০), মৃত. বাদশা আলী মণ্ডলের ছেলে আসমত আলী মণ্ডল (৪৩), নিহতের ভাইপো মৃত. মিরাজ উদ্দিন খামারুজের ছেলে মুকুল হোসেন (৩৮) এবং নিহতের দ্বিতীয় স্ত্রী দোলেনা বেগম।

রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও কুষ্টিয়া জজ কোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট অনুপ কুমার নন্দী জানান, দীর্ঘ সাক্ষ্য ও শুনানি শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত আজ এই রায় দেন। মামলাটি পর্যবেক্ষণ মন্তব্যে বিজ্ঞ আদালত বলেন, সম্পত্তি ও পারিবারিক দ্বন্দ্ব কলহের জের ধরেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ৬ জানুয়ারি আধিপত্য নিয়ে উপজেলার আরকান্দি মন্ডলপাড়া গ্রামে মারামারির ঘটনা ঘটে। মারামারির ঘটনায় প্রতিপক্ষ ইয়াসিন আলী প্রামাণিক ও তার ছেলে ময়নুল প্রামাণিক গুরুতর আহত হন। ঘটনার সাতদিন পর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইয়াসিন আলীর মৃত্যু হয়। এতে আসামি মুকুলের ভাইসহ প্রায় ১৫ জনের নামে ভেড়ামারা থানায় মামলা করা হয়।

আসামি মুকুল তার ভাইকে হত্যা মামলা থেকে বাঁচাতে এবং ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে হানিফ আলীকে হত্যার পরিকল্পনা করে। তাছাড়া সম্পর্কে চাচা হওয়ায় হানিফ আলীর সঙ্গে আসামি মুকুলের জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলছিল।

এদিকে অপর আসামি আসমতের সঙ্গে হানিফ আলীর দ্বিতীয় স্ত্রী দোলনার অনৈতিক সম্পর্ক থাকায় সেই সুযোগে তাদেরকেও হাত করে মুকুল। সেই সঙ্গে ১০ হাজার টাকা চুক্তিতে আরেক আসামি শ্যামলকে সঙ্গে নেয়। এরই অংশ হিসেবে ২০১৭ সালের ১০ এপ্রিল রাতে হানিফ আলী বাড়ি থেকে বাইরে বের হলে পূর্বপরিকল্পনানুযায়ী আসামি মুকুল, শ্যামল, আসমত ও স্ত্রী দোলনা তাকে পার্শ্ববর্তী মাঠে গলা কেটে হত্যা করে। ঘটনার পরের দিন নিহতের ১ম পক্ষের ছেলে আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে ভেড়ামারা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে রহস্য উদ্ঘাটন করে চার আসামির বিরুদ্ধে ভেড়ামারা থানা পুলিশ ২০১৭ সালের ১৫ জুন আদালতে চার্জশিট দেয়।

দীর্ঘ সাক্ষগ্রহণ ও শুনানি শেষে আজ বুধবার জনাকীর্ণ আদালতে এ মামলার রায় দেওয়া হলো। রায় ঘোষণার সময় আদালতে আসামিরা উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে