প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সড়ক দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য যানবাহনচালক, পথচারীসহ সবাইকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সবাইকে রাস্তায় চলাচলে সতর্ক থাকতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বুধবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভুলতায় চার লেনবিশিষ্ট ফ্লাইওভার, সেতু, বাইপাসসহ বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধনের সময় দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, অহেতুক একটি প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে। যানবাহনচালকদেরও একটি দায়িত্বশীল ভূমিকা নিতে হবে। তা না হলে দুর্ঘটনা ঘটবে।
সরকার সড়ক উন্নয়ন করছে তবে সড়ক ব্যবহারের ক্ষেত্রে সবাইকে যত্নবান হওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, কোন সড়কে কত বড় বা ভারী যানবাহন চলতে পারে, সে বিষয়টা একটু খেয়াল রাখা দরকার। কারণ, অনেক সময় অনেকে এই বিষয় মানতে চান না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিরাপদ সড়কের কথা আমরা বলছি। ইতিমধ্যে আমরা নিরাপদ সড়ক আইন প্রণয়ন করেছি। কাজেই যাঁরা রাস্তায় চলাচল করেন, তাঁরা যখন রাস্তা পার হবেন, তখন ডান ও বাঁ—এই দুই দিকে দেখে সচেতনভাবে পার হতে হবে। আবার রাস্তায় যাঁরা গাড়ি বা মোটরসাইকেল চালাবেন, তাঁদেরও সচেতন হতে হবে। বাস ও ট্রাকচালকদেরও সচেতন হতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে আমরা যোগাযোগব্যবস্থা করছি, যাতে দিনে এসে মানুষ কাজ করে দিনেই নিজ গৃহে ফিরে যেতে পারে। রাজধানী থেকে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা পর্যন্ত যেন সরাসরি যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হয়, সে জন্য একটি সড়ক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার, যার সুফল পাচ্ছে দেশের জনগণ।’
শেখ হাসিনা বলেন, একটা দুর্ঘটনা ঘটলে শুধু চালককে দায়ী করলে চলবে না, বরং কী কারণে দুর্ঘটনা ঘটল, সে জন্য যে পথচারী এবং দুর্ঘটনাকবলিত যানের যে চালক, তাঁরও কী ভুল আছে, সেটাও দেখা দরকার। সে জন্য আমি বলব, চালক থেকে শুরু করে যারা সড়ক ব্যবহারকারী, সবারই সচেতনতা একান্তভাবে প্রয়োজন।’
প্রধানমন্ত্রী এ জন্য স্কুলপর্যায় থেকেই সড়কে চলাচলের আইন–প্রশিক্ষণ দেওয়ার আহ্বান করে বলেন, ‘রাস্তার কোন দিক থেকে হাঁটতে হবে, সেটাও একটি শিক্ষণীয় বিষয়। কখন পার হতে হবে, সেটাও শিক্ষণীয় বিষয়। আমি মনে করি, আমাদের প্রতিটি স্কুলে এবং প্রত্যেক শিক্ষার্থীকেই স্কুলজীবন থেকেই এই শিক্ষা প্রদান করা একান্তভাবে দরকার।’
প্রধানমন্ত্রী এ সময় তাঁর উদ্বোধন করা সড়ক, সেতু, ফ্লাইওভার ও বাইপাস ব্যবহারে সবাইকে যত্নবান হওয়ার আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি তৈরি করে দিচ্ছি, কিন্তু এটা দেখভালের দায়িত্ব এবং এটা যাতে নষ্ট না হয়, সে জন্য যাঁরা ব্যবহার করবেন এবং স্থানীয় জনগণ, সবারই এ ব্যাপারে দায়িত্ব রয়েছে। সে দায়িত্ব আপনারা পালন করবেন বলেই আশা করি।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গণভবন প্রান্তে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম স্বাগত বক্তব্য দেন।
উদ্বোধন হওয়া অন্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে ময়মনসিংহ-গফরগাঁও-টোক সড়কের ৭২তম কিলোমিটারে বানার নদের ওপর ২৮২ দশমিক ৫৫৮ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু, ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার জাতীয় মহাসড়কের ইন্দ্রপুল থেকে চক্রশালা পর্যন্ত বাঁক সরলীকরণ, ভোমরা স্থলবন্দর সংযোগসহ সাতক্ষীরা শহর বাইপাস সড়ক এবং মুন্সিগঞ্জ সড়ক বিভাগাধীন ঝুঁকিপূর্ণ সেতুসমূহ (১৩টি সেতু) স্থায়ী কংক্রিট সেতু দ্বারা প্রতিস্থাপন।
স্থানীয় সাংসদ এবং জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী এ সময় ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, সাতক্ষীরা, নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জ এলাকার উপকারভোগী এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
- আসামির মৃত্যু: পীরগঞ্জে পুলিশ-গ্রামবাসী সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ১৫
- বিএনপি রেল বন্ধের আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিয়েছিল : শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ, পিএমও সচিব সাজ্জাদুল হাসানসহ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং গণভবনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বাসস