ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে বর্ডার গার্ডস বাংলাদেশ বা বিজিবি’র সঙ্গে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফ সদস্যদের গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে এক ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী নিহত হয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। একই ঘটনায় আরও এক বিএসএফ সদস্য আহত হয়েছেন বলেও দাবি করেছে বিএসএফ।
বিএসএফ বলছে, বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদ জেলার সীমান্তে পদ্মা নদীতে মাছ ধরতে যাওয়া কয়েকজন ভারতীয় মৎসজীবিকে বিজিবি আটকে রেখেছে, এই অভিযোগ পেয়ে তারা যখন পতাকা বৈঠক করতে বিজিবি-র চৌকিতে গিয়েছিল, তারপরেই ঘটনা নাটকীয় মোড় নেয়।
বিএসএফের একজন মুখপাত্রের বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে এনডিটিভিসহ ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো। বিএসএফের ওই দুই সদস্য পতাকা বৈঠকে ভারতের পক্ষে অংশ নিয়েছিলেন বলেও খবরে জানানো হয়েছে।
খবরে বলা হয়, বঙ্গোপসাগরে দুই দেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় (চারঘাট উপজেলায় বড়াল নদীতে পদ্মার মোহনায়) মাছ ধরার সময় তিন ভারতীয় জেলেকে আটক করে বিজিবি। বিএসএফ জানিয়েছে, ওই তিন জেলের মধ্যে দু’জনকে ছেড়ে দিয়ে বিএসএফ পোস্ট কমান্ডারকে পতাকা বৈঠকের জন্য আহ্বান করা হয়। একজনকে আটক রাখে বিজিবি।
পরে বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টায় বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও বিএসএফের স্থানীয় কমান্ডারদের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পাতাকা বৈঠকে বিএসএফের কমান্ডারসহ ৫ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
বিএসএফের মুখপাত্র হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেন, পতাকা বৈঠকের পরও বিজিবি আটক থাকা ভারতীয় জেলেকে ছেড়ে দেয়নি। বরং তারা বিএসএফ সদস্যদের ঘেরাও করে ফেলে। পরিস্থিতি অবনতিশীল মনে করায় বিএসএফ পিছু হটতে শুরু করলে বিজিবি সদস্যরা তাদের ওপর গুলিবর্ষণ করতে শুরু করে বলে দাবি বিএসএফের।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বাংলাদেশের জলসীমায় অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে পদ্মা নদীতে ইলিশ শিকার করা ভারতীয় জেলেদের ধাওয়া দিলে বিজিবিকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় বিএসএফ। পরে বিজিবি পাল্টা গুলি চালালে বিএসএফ সদস্যরা পিছু হটে। এ ঘটনায় এক ভারতীয় জেলেকে আটক করেছে বিজিবি।
চারঘাট উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম বলেন, প্রজনন মৌসুমের জন্য এখন নদীতে ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এ অবস্থায় জেলেরা যেন নদীতে ইলিশ শিকার করতে না পারে সেজন্য বিজিবি সদস্যদের নিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে নদীতে অভিযান চালানো হয়।
অভিযানের সময় পদ্মা-বড়ালের মোহনায় বাংলাদেশের সীমানার ভেতর একটি নৌকায় তিন ভারতীয় জেলেকে ইলিশ শিকার করতে দেখা যায়। তখন তাদের আটকের চেষ্টা করা হয়। এ সময় দুজন জেলে পালিয়ে যান। একজনকে আটক করা হয়।
পালিয়ে যাওয়া জেলেরা বিএসএফকে বিষয়টি জানান। তখন বিএসএফ সদস্যরা এসে গালাগালি শুরু করেন। বিজিবি এর প্রতিবাদ করলে তারা গুলি ছোড়ে। তখন বিজিবির পক্ষ থেকেও গুলি ছোড়া হয়। একপর্যায়ে বিএসএফ সদস্যরা পিছু হটেন। এ ঘটনার পর একজন ভারতীয় জেলেকে আটক করে বিজিবির চারঘাট করিডোর সীমান্ত ফাঁড়িতে আনা হয়। সেই সঙ্গে ইলিশ শিকারের জাল জব্দ করা হয়।
বিজিবি সদর দপ্তর থেকে এ বিষয়ে এখনো কিছু জানানো হয়নি। তরে কিছুক্ষণের মধ্যেই একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ঘটনাটির বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানা গেছে।