মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক রাষ্ট্রপ্রধান। গতবছর মে মাসে তিনি ফের মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। বর্তমানে তার বয়স ৯৪ বছর। এই বয়সেও প্রতিদিন গড়ে ১৮ ঘণ্টা কাজ করেন বলে সম্প্রতি জানিয়েছেন তিনি।
১৯৮১ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন মাহাথির মোহাম্মদ। গতবছর মে মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের আগে চার দলের সমন্বয়ে গঠিত ‘পাকাতান হারাপান’ জোটের প্রধান নির্বাচিত হন তিনি। এই জোটের অন্য আরেকটি দল ছিল আনোয়ার ইব্রাহিমের ‘পার্টি কেয়াদিলান রাকায়াত’।
আনোয়ার ইব্রাহিম একসময় মাহাথির সরকারের উপ-প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। সমকামিতা ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে মাহাথিরই তাকে কারাগারে পাঠিয়েছিলেন। প্রায় ছয়বছর কারাভোগ করেন তিনি।
এরপর ২০১৫ সালে একই অভিযোগে আনোয়ার ইব্রাহিমকে আবারও কারাগারে পাঠিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক।
২০১৮ সালে মাহাথির ক্ষমতা গ্রহণের পর ছাড়া পান আনোয়ার।
নির্বাচনের আগে আনোয়ারের দলের সঙ্গে মিলে জোট গঠন করেছিলেন মাহাথির মোহাম্মদ। আনোয়ার কারাগারে থাকায় নির্বাচনে জোট জয় পেলে মাহাথির প্রধানমন্ত্রী হবেন বলে একটি অনানুষ্ঠানিক চুক্তি হয়েছিল। কথা ছিল মাহাথির প্রধানমন্ত্রী হলে আনোয়ারকে মুক্ত করবেন এবং দুই বছর পর তার হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন।
গত মাসের ১৮ তারিখ এক সাক্ষাৎকারে আনোয়ার ইব্রাহিম আগামী মে মাসে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আশা প্রকাশ করেন।
তবে আনোয়ারের এই বক্তব্যের সপ্তাহখানেক পর ‘ইউএস কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্স’-এর এক অনুষ্ঠানে মাহাথির আরও তিন বছর প্রধানমন্ত্রী থাকার আশা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনের আগে পদত্যাগ করে অন্য প্রার্থীর জন্য রাস্তা তৈরির অঙ্গীকার করেছি আমি। ফলে আমার হাতে হয়ত সর্বোচ্চ তিন বছর সময় আছে। তাই আমি দিনে ১৮ ঘণ্টা করে কাজ করছি। কারণ আমার বেশি সময় নেই।
উল্লেখ্য, মালয়েশিয়ার পরবর্তী নির্বাচন হওয়ার কথা ২০২৩ সালে।
ওদিকে, আনোয়ার ও মাহাথিরের এমন বক্তব্যের পর তাদের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
তবে মাহাথির মোহাম্মদের গণমাধ্যম ও যোগাযোগ বিষয়ক উপদেষ্টা কাদির জেসিন বলেছেন, নির্বাচনের আগে পাকাতান হারাপান জোটের নেতাদের মধ্যে পাঁচটি বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। এরমধ্যে আনোয়ারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়টিও রয়েছে। তবে কখন তা করা হবে, সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট সময়সীমা উল্লেখ করা হয়নি।
সূত্র : ডয়চে ভেলে