‘গণভবনে কাকে ডাকবেন সেটা প্রধানমন্ত্রীর বিষয়’

মত ও পথ রিপোর্ট

ওবায়দুল কাদের
ফাইল ছবি

আগামী রোববার আওয়ামী যুবলীগের ৭ম কংগ্রেসের আগে সংগঠনটির শীর্ষ নেতারা গণভবনে যাবেন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আনতে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে অনুষ্ঠেয় এই বৈঠকে থাকতে পারছেন না যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী।

দুদিন ধরে রাজনৈতিক অঙ্গনে বিষয়টি জোরে সুরে আলোচিত হচ্ছে। এ বিষয়ে আজ কথা বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

শুক্রবার সকালে বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠপুত্র শহীদ শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে রাজধানীর বনানীতে তার কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে এসব বিষয় নিয়ে কথা বলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।

তিনি বলেন, যুবলীগ নিয়ে গণভবনে বৈঠক ডেকেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যুবলীগের চেয়ারম্যানকে কেন ডাকা হয়নি, কোন বয়স পর্যন্ত যুবলীগ করা যাবে, সেসব আলোচনা রোববারই করা হবে।

যুবলীগ চেয়ারম্যানের গণভবনে যাওয়া নিষেধ, তাহলে কি কার্যত তিনি অপসারিত হয়েছেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, গণভবনে এই মিটিং ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে কাকে ডাকবেন আর কাকে ডাকবেন না সেটা প্রধানমন্ত্রীর বিষয়। এটা পার্টি অফিসে ডাকা হলে আমি বলতে পারতাম। আওয়ামী লীগ সভাপতি যুবলীগকে গণভবনে ডেকেছেন। সেখান থেকে যাদের বলা হয়েছে, তারাই মিটিংয়ে যাবেন।

যুবলীগকে বয়স কাঠামোতে পরিবর্তন আনা হবে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, রোববারের মিটিংয়ে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।

এসময় সেতুমন্ত্রীর সঙ্গে পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম, কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য নুর ই আলম সিদ্দিকীসহ অন্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সম্প্রতি যুবলীগের বিভিন্ন নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসা ও টেন্ডারবাজির অভিযোগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের পর থেকে সংগঠনটির চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর নামও উঠে আসে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার করা হয় যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ ভূঁইয়া, যুবলীগ নেতা জিকে শামীমসহ অনেকেই। যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর সম্পৃক্ততাও বেরিয়ে আসে। তার আলোকে ইতিমধ্যে ওমর ফারুক চৌধুরীর ব্যাংক হিসাব তলব করা ছাড়াও তার বিদেশ যাত্রার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এর পর থেকেই আড়ালে চলে যান ওমর ফারুক। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তাকে ছাড়াই সম্মেলনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন সংগঠনটি। গত শুক্রবার তাকে ছাড়াই হয়েছে যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সভা।

ওই সভায় সম্মেলনের আয়োজন নিয়ে আলোচনা করা ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করা নিয়েও আলোচনা হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, যুবলীগের সম্মেলন সামনে রেখে এ সংক্রান্ত দিকনির্দেশনা ও পরামর্শ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকেই নেয়া হবে। সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে পরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য ‘আবেদন’ জানান নেতারা।

বুধবার গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কণফারেন্সে বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন। ওই অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একান্তে কথা বলেন হারুনুর রশীদ। যুবলীগ নেতাদের সাক্ষাতের দিন রোববার ঠিক করা হয়।

একটি সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী চাচ্ছেন যে গণভবনে যুবলীগের সঙ্গে রোববারের বৈঠকে ওমর ফারুক চৌধুরী ও নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন না থাকুক।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ বুধবার রাতে যুগান্তরকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের রোববার দেখা করার সময় দিয়েছেন। তবে ওমর ফারুক চৌধুরী ও নুরুন্নবী শাওনকে না রাখার বিষয়ে কোনো নির্দেশনার কথা আমাকে বলেননি। তবে আমার ধারণা, চেয়ারম্যান মহোদয় সম্ভবত যাবেন না। কারণ বেশ কিছু দিন হল তিনি সংগঠনের কার্যক্রম থেকে নিজেকে দূরে রেখেছেন। এ বিষয়ে জানতে ওমর ফারুক চৌধুরীকে তার মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ধরেননি।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে