রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর কারণে এ পর্যন্ত আট হাজার এক একরেরও বেশি বন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর্থিক মূল্যে এই ক্ষতির পরিমাণ প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা।
জাতীয় সংসদের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির এক বৈঠকে বন অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে এই তথ্য জানানো হয়।
আজ শুক্রবার কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সম্মেলনকক্ষে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
একাদশ জাতীয় সংসদের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির এটি ছিল অষ্টম বৈঠক।
কমিটির সদস্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, একই মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, জাফর আলম, মো. রেজাউল করিম বাবলু ও খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।
উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন এবং রোহিঙ্গাদের কারণে পরিবেশের যে ক্ষতি হয়েছে সে সম্পর্কেও এই বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
বৈঠকে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার কারণে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, ক্ষতির কতটুকু পুনরুদ্ধার করা সম্ভব এবং ক্ষতি প্রতিরোধের সম্ভাব্য উপায় সম্পর্কে আলোচনা করার পাশাপাশি গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে সার্বিক ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয়েও কমিটি সুপারিশ করে।
‘বিশুদ্ধ বায়ু এবং টেকসই পরিবেশ (সিএএসই) প্রকল্পের মাধ্যমে কী অর্জিত হয়েছে এবং এর ফলে গুণগত কী প্রভাব পড়েছে তার বিস্তারিত বর্ণনা আগামী বৈঠকে উপস্থাপনের জন্য কমিটির আজকের বৈঠক থেকে সুপারিশ করা হয়। রোহিঙ্গাদের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত পানি সরবরাহের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতেও কমিটি সুপারিশ করে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, প্রধান বন সংরক্ষকসহ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে গণহত্যা ও নির্যাতনের মুখে লাখ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিক মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। এর আগে বিভিন্ন সময়ে আরও কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে আশ্রয় নেয়। সবমিলিয়ে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিক এখন বাংলাদেশে অবস্থান করছে।
- দেশের অর্থনীতি সবচেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে : অর্থমন্ত্রী
- শিশু হত্যাকারীদের কঠোর সাজা হবে : প্রধানমন্ত্রী
মানবিক দিক বিবেচনা করে বাংলাদেশ রোহিঙ্গা নাগরিকদের আশ্রয় দেয়। এ কারণে সারা বিশ্বের প্রশংসা কুড়ায় বাংলাদেশ। তবে এর কারণে স্থানীয় বাসিন্দাদের মাশুলও কম গুণতে হয়নি। বর্তমানে কক্সবাজার জেলার মোট বাসিন্দাদের চেয়ে রোহিঙ্গাদের সংখ্যা বেশি। এই অবস্থায় তাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফেরাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। যদিও মিয়ানমারের অনীহা এবং চলছাতুরির কারণে বারবার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন।