অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের উন্নয়নে বিনিয়োগ বাড়াবে ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (আইএফসি)। এ খাতে সারাবিশ্বে সংস্থাটি মোট এক হাজার বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার ঘোষণা দিয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের একটি বেসরকারি কোম্পানি ইতোমধ্যে ১৯ মিলিয়ন ডলার নিয়েছে। এর আগে আরও অনেকগুলো বেসরকারি কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছে আইএফসি। যার ফলাফল বেশ ভালো। এ জন্য এ দেশের বেসরকারি খাতের উন্নয়নে বিনিয়োগ বাড়াতে চায় সংস্থাটি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আইএফসির বিশাল বিনিয়োগ ঘোষণা লুফে নিতে পারে বাংলাদেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো। ফলে বাংলাদেশে কর্মসংস্থানের পরিধি আরও বাড়বে বলে মনে করছে বাংলাদেশ সরকার। আইএফসি ঋণের সুদহার ১০ শতাংশের কম হবে।
ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের বার্ষিক সভার অংশ হিসেবে আইএফসির আঞ্চলিক ভাইস প্রেসিডেন্ট স্নিজানা স্টিইলজকোভিকের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আজ শনিবার ওয়াশিংটন থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা গাজী তৌহিদুল ইসলামের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংক থেকে শুরু করে এবার আমাদের সঙ্গে যারাই সাক্ষাৎ করেছে সবাই বলেছে আমাদের সক্ষমতা বেড়েছে। সবাই স্বীকৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ সঠিক পথে রয়েছে। সবার কাছ থেকে একটা স্পষ্ট বার্তা ছিল যে, সবাই প্রচুর পরিমাণে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে চায়। এটা আমাদের জন্য বড় বার্তা। বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে বাড়তি ঋণ দিতে উন্মুখ হয়ে আছে। আশা করছি এইবারই বিশ্বব্যাংক থেকে আমাদের সব থেকে বড় সহযোগিতা আসবে।
তিনি বলেন, ইনকাম ট্যাক্স কালেকশনে সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ইউএসএআইডি সহায়তা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এছাড়া জাপান ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন (জেবিআইসি) বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এই প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন ধরে নিষ্ক্রীয় ছিল। এবার তারা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে কার্যকরভাবে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তারা বিনিয়োগ করলে আমাদের আরেকটি নতুন উইন্ডো খুলে যাবে। তারা তাদের দেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে আমাদের দেশে নিয়ে আসবে যা আমাদের জন্য খুবই ইতিবাচক।
সড়ক নিরাপত্তাবিষয়ক বৈঠক সম্পর্ক অর্থমন্ত্রী বলেন, সড়কের নিরাপত্তা জোরদারকরণ অত্যন্ত জরুরি। অকালমৃত্যু কখনও কারও জন্য কাম্য হতে পারে না। সড়কে চলাচল ও ট্রাফিক সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। বিশ্বব্যাংক যদি এ বিষয়ে কাজ করে আশা করি অত্যন্ত ভালো করবে।
তিনি বলেন, তবে শুধু একটি কোনো নির্দিষ্ট পদ্ধতি দিয়ে এটি সম্ভব নয়, যে দেশের জন্য যেটি উপযোগী সেটি সে দেশে প্রয়োগ করতে হবে। এটি একটি অত্যন্ত জরুরি এবং সময়ের দাবি। তবে প্রথমে যে কাজটি করতে হবে সেটি হচ্ছে সচেতনতা বৃদ্ধি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, সকলের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে এবং এটি শুরু করতে হবে স্কুলের বাচ্চাদের থেকে। তাদের বিভিন্নভাবে এ বিষয়ে শিক্ষা প্রদান করতে হবে। তারা তাদের পিতামাতাকে এবং পিতামাতারা সকল আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে শেয়ারের মাধ্যমে এই সচেতনতা সৃষ্টি করা সম্ভব। পাশাপাশি সরকারকে জোরালো ভূমিকা পালন করতে হবে। ইতোমধ্যে আমরা বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে আইন পাস করা হয়েছে, চারলেন-ছয়লেন রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে, এগুলোর পাশ দিয়ে লোকাল যানবাহনের জন্য সার্ভিস লেন রাখা হচ্ছে, চালকদের বিশ্রামের জন্য বিশ্রামাগার তৈরি করা হচ্ছে।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের অর্থ বিভাগের সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মনোয়ার আহমেদ, বিশ্বব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া এবং ওয়াশিংটনে নিযুক্ত ইকোনোমিক মিনিস্টার মো. সাহাবুদ্দিন পাটোয়ারী।