‘একজন রোহিঙ্গা সদস্যও মিয়ানমারে ফিরে যেতে রাজি নয় যতক্ষণ না তারা নিশ্চিত হচ্ছে যে মিয়ানমার তাদের নিরাপত্তা, জীবিকা, ন্যায়বিচার ও অধিকার রক্ষার বিষয়গুলোর নিশ্চয়তা দিবে। তাই টেকসই প্রত্যাবাসন শুরু করতে হলে মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার রক্ষার নিশ্চয়তা দিতে হবে; প্রত্যাবাসনের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করে তাদের আস্থা পুনরুজ্জীবিত করতে হবে’।
জাতিসংঘ সদরদপ্তরে চলতি ৭৪তম সাধারণ পরিষদের ৩য় কমিটির আওতায় মানবাধিকার ইস্যুতে দেওয়া বক্তব্যে একথা বলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মজিদ খান এমপি।
মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর নৃশংসতার শিকার হয়ে প্রাণ বাঁচাতে নিজভূমি থেকে পালিয়ে আসা ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে মানবিক আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার ও জনগণ যে উদারতা দেখিয়েছেন তা উল্লেখ করেন এই সংসদ সদস্য।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে মানবাধিকার রক্ষা ইস্যুতে যে সকল পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছেন তা সভাকে অবহিত করেন। তিনি বলেন, এসকল পদক্ষেপের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো গত ২০১৮ সালের মে মাস পর্যন্ত তিনবার ইউনিভার্সাল পিরিওডিক রিভিউতে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ ও রিপোর্ট উপস্থাপন, জেনেভাস্থ নিপীড়ন বিরোধী কমিটিতে দেশ পর্যায়ের প্রতিবেদন উপস্থাপন এবং ২০১৭ সালে হিউম্যান রাইটস কমিটির ১১৯তম সেশনে বাংলাদেশে বেসামরিক ও রাজনৈতিক অধিকারের চলমান অবস্থার ওপর রির্পোট প্রদান।
বাংলাদেশের স্বাধীন বিচার বিভাগ ও স্বাধীন জাতীয় মানবাধিকার কমিশন যেকোনো মানবাধিকার ইস্যু বিবেচনায় নিতে সদা প্রস্তুত রয়েছে মর্মে উল্লেখ করেন সংসদ সদস্য।
তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও বিধিবিধানের সাথে সামঞ্জস্যতা বজায় রাখতে যখনই জাতীয় কোনো আইন বা বিধির পুনঃমূল্যায়ন ও হালনাগাদ করা প্রয়োজন, তখনই সেটি করছে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ’।
বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতার সুরক্ষা ও অগ্রায়নে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে বাংলাদেশের অব্যাহতভাবে কাজ করে যাওয়ার যে প্রতিশ্রুতি রয়েছে তা পুনর্ব্যক্ত করেন সংসদ সদস্য আব্দুল মজিদ খান।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ বর্তমানে মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৪তম অধিবেশনের মূল কমিটিগুলোর চলমান বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে বর্তমানে নিউইয়র্ক অবস্থান করছেন সংসদ সদস্য আব্দুল মজিদ খান।