দীর্ঘ প্রতীক্ষা শেষে সারাদেশের ২ হাজার ৭৩০ প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বুধবার গণভবনে এ তালিকা ঘোষণা করেন তিনি।
নতুন এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় (৬ষ্ঠ-৮ম) ৪৩৯টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় (৬ষ্ঠ-১০ম) ৯৯৪টি, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় একাদশ থেকে দ্বাদশ ৬৮টি, কলেজ একাদশ থেকে দ্বাদশ ৯৩টি, ডিগ্রি কলেজ (১৩শ-১৫শ) ৫৬টি, মাদরাসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দাখিল ৩৫৭টি, আলিম ১২৮টি, ফাজিল ৪২টি, কামিল ২৯টি। কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কৃষি ৬২, ভোকেশনাল ১৭৫ এবং এইচএসসি (বিএম) ২৮৩টি।
এমপিওভুক্তির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়ের সবার প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা দীর্ঘদিনের একটা চাহিদা। আমরা গত বছর ধরে এই কাজ করেছি। সবাই মিলে কাজ করে আজকে একটা তালিকাভুক্ত করে এমপিওভুক্তের ঘোষণা দিতে পারলাম।
এমপিওভুক্ত সব প্রতিষ্ঠানকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, তাদের কাছে আমার এটাই দাবি থাকবে যে, এখন এমপিওভুক্ত হয়ে গেছে কাজেই শিক্ষার মান এবং শিক্ষার পরিবেশটা যেন আরও সুন্দর হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বলেছিলেন, সোনার বাংলা গড়ার জন্য আমার সোনার ছেলেমেয়ে দরকার। সেই সোনার ছেলেমেয়েই যেন তৈরি হয়। কারণ শিক্ষকরাই তো মানুষ গড়ার কারিগর। তাদের ওপরেই এই দায়িত্বটা বর্তায়। কাজেই তারা সেটা করবেন। ইনশাআল্লাহ, বাংলাদেশকে আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলব।’
শিক্ষার্থীরা স্কুল পর্যায় থেকেই কারিগরি শিক্ষা বা ভোকেশনাল ট্রেনিং যাতে নিতে পারে সে দিকে লক্ষ্য রেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। কারণ আামদের ছোট-ছোট বাচ্চাদের ভেতরে অনেক মেধা লুকিয়ে থাকে। তারা অনেক কিছু তৈরি করতে পারে। সেটা বিকাশের একটা সুযোগ আমাদের করে দেয়া দরকার।
তিনি বলেন, শুধু উচ্চশিক্ষা নিয়ে, ডিগ্রি নিয়ে তো লাভ নাই। তাকে তো কিছু কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। কিছু করে খেতে হবে। সেটার ব্যবস্থা যাতে করতে পারি, যা দেশে-বিদেশে যেখানেই হোক। সেটাকেও আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। সেভাবেই আমরা করে দিচ্ছি।
১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এমপিওভুক্ত নিয়ে বিভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, আগে যারা এমপিওভুক্ত ছিল তাদের বেতনের টাকাটা সরাসরি ওই প্রতিষ্ঠানে চলে যেত। যার ফলে অনেক সময় তাদের কাছ থেকে একটা নালিশ আসত যে তারা ঠিকমতো বেতন পায় না। তখন আমরা ঠিক করি যে, যার যার বেতন তার তার কাছে সরাসরি চলে যাবে এবং প্রতি মাসে একটা পেমেন্ট অর্ডারের মাধ্যমে যার নামে তার টাকাটা চেকে পৌঁছে যাবে।
যত্রতত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে ঠেকাতে একটা নীতিমালা তৈরি করার প্রচণ্ড দাবি ছিল জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাতে একটু সময় লেগে যায়। কিন্তু নীতিমালা ধরে যাচাই-বাছাই করে তারপরে এই তালিকাটা প্রণয়ন করা হয়েছে এবং তার মধ্যে আমরা পেয়েছি এখন ২৭৩০টি প্রতিষ্ঠান। যেটা আমরা এমপিওভুক্ত করেছি।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন শিক্ষা সচিব মো. সোহরাব হোসাইন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও মন্ত্রণালয়ের অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা