বহুল আলোচিত ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় রায়কে কেন্দ্র করে জেলার আদালত চত্বর ও এর আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। রায় ঘিরে জেলা সদর ছাড়াও সোনাগাজীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। যেকোনো ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে এমন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
আজ বৃহস্পতিবার চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের রায় ঘোষণা করা হবে। জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মামুনুর রশিদের আদালতে রায় ঘোষণা করার কথা রয়েছে।
ফেনীর পুলিশ সুপার খোন্দকার মো. নুরুন্নবী বলেন, রায় ঘোষণার দিন আদালত চত্বরে সরকারি গাড়ি ছাড়া কোনো যানবাহন ঢুকতে পারবে না। আমরা সেখানে তিন স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিচ্ছি।
এসপি বলেন, রায় ঘোষণাকে ঘিরে ফেনী সদর ও সোনাগাজীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পুলিশের নিরাপত্তা চৌকিও বসানো হয়েছে। এছাড়া র্যাব সদস্যদের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে।
খোন্দকার মো. নুরুন্নবী বলেন, মাঠে ফুট পেট্রোল, মোবাইল পেট্রোল, স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে। সোনাগাজীতে নুসরাতের বাড়িতে আগের চেয়ে আরও বেশি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
এছাড়াও রয়েছে কিছু বিধি-নিষেধ। সেগুলো হলো মোটরসাইকেলে তিন জনের বেশি চড়তে পারবে না। অযাচিতভাবে কেউ ঘোরাফেরা করতে পারবে না। আদালত চত্বরের ভেতর-বাইরে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা থাকবেন। যাতে করে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে না পারে।
এছাড়া চাঞ্চল্যকর এই রায়কে ঘিরে বুধবার রাত থেকে নুসরাতদের বাড়িতে পাহারা জোরদার করা হয়। পাহারায় নিয়োজিত আগের তিনজন পুলিশ সদস্যের সঙ্গে আরও ৯ সদস্যকে যুক্ত করা হয়েছে। আত্মীয়-স্বজন ও পরিচিত লোকজনও রেজিস্ট্রার খাতায় সই না করে ওই বাড়িতে ঢোকার অনুমতি পাচ্ছেন না। গত ৭ এপ্রিল থেকে বাড়িটিতে পুলিশ পাহারা বসানো হয়।
নুসরাত হত্যা মামলাটি করা হয় গত ৮ এপ্রিল। নুসরাতের ভাই নোমান এই মামলার বাদী। ১০ এপ্রিল থানা থেকে মামলাটি পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়। মোট ৩৩ কার্যদিবসে ১৬ জন আসামিকে অভিযুক্ত করে মামলার চার্জশিট দেয় পিবিআই। পরে ২০ জুন চার্জগঠন এবং ২৭ জুন সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। চার্জশিটে মোট ৯১ জনকে সাক্ষী করা হয়। এর মধ্যে ৮৭ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।