কিছু দূতাবাস এ দেশে নতজানু সরকার চায় : সজীব ওয়াজেদ

বিশেষ প্রতিবেদক

সজীব ওয়াজেদ জয়
সজীব ওয়াজেদ জয়। ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় মন্তব্য করেছেন, কিছু বিদেশি দূতাবাস বাংলাদেশে নতজানু সরকার চায় । গত মঙ্গলবার ঢাকায় ‘ইয়াং বাংলা উইথ সজীব ওয়াজেদ’ অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন। সময় টেলিভিশন আজ শুক্রবার রাতে সেই প্রশ্নোত্তর পর্বটি সম্প্রচার করে।

সজীব ওয়াজেদ বলেন, বাংলাদেশে অবস্থিত কিছু কিছু দূতাবাস এদেশে নতজানু সরকারকে ক্ষমতায় চায়, যারা তাদের হুকুম অনুসারে চলবে।

universel cardiac hospital

তিনি বলেন, ওই সব দেশের সরকার নয়, বরং ওই দেশগুলোর এখানে থাকা দূতাবাসগুলো এ ধরনের ষড়যন্ত্রে অংশ নিচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের ‘ফ্রিডম অফ স্পিচ’ নিয়ে বেশ কিছু দূতাবাস দেখছি কথা বলেছে। এই সুনির্দিষ্ট কিছু দূতাবাস সব সময় আমাদের ছবক দেওয়ার চেষ্টা করে।

সজীব ওয়াজেদ বলেন, যখনই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, ভালোর দিকে যাচ্ছে, তখনই একটা শ্রেণি কিছু কিছু দূতাবাস ষড়যন্ত্র করে। আমি দেশের কথা বলব না, শুধুমাত্র এ দেশে থাকা তাদের দূতাবাস এখানে বসে ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করে। বিশেষত মার্কিন দূতাবাস। আর তাদের উদ্দেশ্য কী? তারা কিন্তু একটি শক্তিশালী সরকার চায় না। তারা চায় একটা ছোটখাটো সরকার থাকবে, যাদেরকে তারা হুকুম করবে আর সেই সরকার দূতাবাসের হুকুমে চলবে।

তিনি তার অভিজ্ঞতা উপস্থিত তরুণদের সঙ্গে জানাতে গিয়ে বলেন, যখনই মার্কিন দূতাবাসের কোনো অনুষ্ঠানে আমি গিয়েছি, ওখানে জামায়াত এবং যুদ্ধাপরাধী থাকবেই। তারা (মার্কিন দূতাবাস) দাওয়াত করবেই। মার্কিন দূতাবাস হয়ে গেছে জামায়াতের ঘাঁটি, যুদ্ধাপরাধীদের ঘাঁটি। আর তারা এদের সাথে মিলে সব সময় ষড়যন্ত্র করতে থাকে। আমরা কি চাই এমন একটা নতজানু সরকার, যারা দূতাবাসের হুকুম অনুসারে চলবে, এমন সরকার কি আমরা চাই?

অনুষ্ঠানে তরুণদের দেশ গঠনে বিভিন্ন উদ্যোগের কথা শোনেন সজীব ওয়াজেদ। সেখানে থাকা তরুণদের দেশ গঠনের পথে সৃষ্টি হওয়া বিভিন্ন বাঁধা এবং সেই বাঁধা উতরে এগিয়ে যাওয়ার বিষয়ে পরামর্শও গ্রহণ করেন তিনি।

এর আগে চলতি বছর ২১ জুলাই নিজের ভেরিফাইড ফেসবুকে পেজে দেওয়া এক পোস্টে (https://www.facebook.com/sajeeb.a.wazed/posts/1590928694376881) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে দেওয়া প্রিয়া সাহার একটি বক্তব্য প্রসঙ্গে সজীব ওয়াজেদ বক্তব্য দেন।

সেখানে তিনি বলেন, গত নির্বাচনের পর আমি একটু বিরতি নেই, তাই এই পেজেও কম পোস্ট করা হয়। কিন্তু সামপ্রতিক কিছু ঘটনার প্রেক্ষিতে আমার কিছু বলা উচিত বলে মনে হলো।

তিনি আরও বলেন, আপনারা হয়তো দেখেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে প্রিয়া সাহার ভয়ংকর ও মিথ্যা দাবি। উনি বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে নাকি তিন কোটি ৭০ লক্ষ ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা ‘গায়েব’ বা ‘গুম’ হয়ে গেছেন। প্রায় চার কোটির কাছাকাছি যে সংখ্যাটি উনি বলছেন তা আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যার ১০গুণেরও বেশি, আর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহতদের সংখ্যার কাছাকাছি। এতো মানুষ গুম হলো সবার অজান্তে? তিন কোটি ৭০ লক্ষ মানুষ গায়েব হলো কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই?

সজীব ওয়াজেদ বলেন, প্রিয়া সাহাকে আমেরিকায় পাঠানো হয় বাংলাদেশে মার্কিন দূতাবাসের মনোনয়নে। অনেক সমালোচনার পর আজ তারা একটি বিবৃতি দিয়েছেন। সেখানে তারা বলেছেন তারা অংশগ্রহণকারীদের কথাবার্তার উপর কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করেন না। কিন্তু যখন তাদের একজন মনোনীত অংশগ্রহণকারী তাদেরই রাষ্ট্রপ্রধানের কাছে কোনো ভয়ংকর মিথ্যা বক্তব্য দিলেন, তাদের উচিত ছিল তাত্ক্ষণিকভাবে তার প্রতিবাদ জানানো, যা তারা করেননি।

তিনি বলেন, এই বিষয়টি থেকে কিন্তু মার্কিন দূতাবাসেরই দুরভিসন্ধি প্রকাশ পায়। তারা জেনে শুনেই প্রিয়া সাহাকে বাছাই করে কারণ তারা জানতো উনি এই ধরণের ভয়ংকর মিথ্যা মন্তব্য করবেন। এই ধরণের কাজের পিছে একটাই কারণ চিন্তা করা যায়: মানবিকতার দোহাই দিয়ে আমাদের এই অঞ্চলে সেনা অভিযানের ক্ষেত্র প্রস্তুত করা। মনে রাখা ভালো, কয়েকদিন আগেই মার্কিন এক কংগ্রেসম্যান একটি বক্তব্যে বলেছিলেন বাংলাদেশের মায়ানমারের রাখাইন রাজ্য দখল করা উচিত।

তিনি আরও বলেন, মার্কিন দূতাবাস যে আওয়ামী লীগবিরোধী তা নতুন কিছু নয়। তাদের সকল অনুষ্ঠানেই জামাত নেতাকর্মীরা ও যুদ্ধাপরাধীরা নিয়মিত আমন্ত্রিত হতেন। প্রিয়া সাহার মিথ্যা বক্তব্যকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে তাদের সরাসরি আধিপত্য বিস্তারের ষড়যন্ত্র পরিষ্কারভাবেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

সজিব ওয়াজেদ বলেন, সৌভাগ্যবশত, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার সরকার অন্যান্য  দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার নীতিতে বিশ্বাসী নন। তারা এই ধরনের ভয়ংকর মিথ্যা দাবি বিশ্বাস করার মতন বোকাও নন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে