নানা জল্পনা-কল্পনা শেষে অবশেষে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (বিএফডিসি) আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০১৯-২১ মেয়াদের দ্বিবার্ষিক নির্বাচন। বিএফডিসিতে উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে চলছে ভোটগ্রহণ। সকাল ৯টার পর পরই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে ভোট দিতে দেখা গেছে অনেককে।
ভোট শুরু হওয়ার পর প্রথমেই ভোট দেন চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বেলা যত গড়াচ্ছে তারকা ভোটারদের উপস্থিতি তত বাড়ছে।
ভোট দিয়েছেন সভাপতি পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী চিত্রনায়িকা মৌসুমী। তিনি এবার সভাপতি পদে মিশা সওদাগরের বিপরীতে লড়ছেন।
ভোট দিয়ে ফেরার পথে নির্বাচনী পরিবেশ সম্পর্কে জানতে মৌসুমীকে ঘিরে ধরেন সাংবাদিকরা।
সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নে প্রার্থী মৌসুমী বলেন, ‘চমৎকার আবহাওয়া। ভোটগ্রহণ কেন্দ্র করে নিরাপত্তাব্যবস্থা বেশ জোরদার। বলতে গেলে অসাধারণ পরিবেশ। কোনে হইচই নেই। ভোটগ্রহণ সুষ্ঠু হচ্ছে বলেই মনে হচ্ছে। অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা চোখে পড়েনি এখন পর্যন্ত।
এসব মন্তব্য শেষে মৌসুমীকে বেশ খুশি দেখা গেল।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রশাসনিক দিক থেকে আমরা প্রচণ্ড হেল্প পাচ্ছি। বিশাল একটা আয়োজন। সব কিছু মিলে ভালো লাগছে আমার। এমন নির্বাচন চললে জয় প্রত্যাশা করি।’
জয় পেলে এফডিসির শিল্পীদের জন্য কেমন কাজ করবেন প্রশ্নে ঢাকাই ছবির এই প্রিয়দর্শিনী বলেন, ‘শিল্পী সমিতির এই দ্বিবার্ষিক নির্বাচনে আমাকে সভাপতি পদে নির্বাচিত করলে প্রথমেই আটটি প্রতিশ্রুতি পালনের চেষ্টা করব, যা আমার ইশতেহারে রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সে জন্যই আমি নির্বাচন করছি। অনেক বাঁধাবিপত্তি অতিক্রম করে স্বতন্ত্রী প্রার্থী হয়েছি। আমাদের সদস্যরাও তাই চেয়েছেন। আশা করছি, সদস্যরা আমাকে সমর্থন করবেন। আমি সবার সঙ্গে কথা বলেছি প্রত্যেকেই আমাকে মন থেকে সমর্থন দিয়েছেন।’ বিএফডিসি শিল্পী সমিতির কার্যালয়ে সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে ভোটগ্রহণ চলবে বিকাল ৫টা পর্যন্ত। এর পর ভোট গণনা করে ফল ঘোষণা করা হবে।
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে যেন কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সে জন্য এফডিসির ভেতরে ও বাইরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি র্যা ব ও গোয়েন্দা পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
প্রসঙ্গত ২০১৯-২১ মেয়াদের শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সভাপতি পদে লড়াই করছেন চিত্রনায়িকা মৌসুমী ও খলনায়ক মিশা সওদাগর। সহসভাপতির দুটি পদে লড়াই করবেন মনোয়ার হোসেন ডিপজল, রুবেল ও নানা শাহ। সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদ খানের প্রতিদ্বন্দ্বী ইলিয়াস কোবরা। সহসাধারণ সম্পাদক পদে লড়ছেন আরমান ও সাংকো পাঞ্জা।
সাংগঠনিক সম্পাদক পদে অভিনেতা সুব্রতর বিপরীতে কোনো প্রার্থী নেই। আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক পদে লড়ছেন নূর মোহাম্মদ খালেদ আহমেদ ও চিত্রনায়ক ইমন।
দফতর ও প্রচার সম্পাদক পদে একাই রয়েছেন জ্যাকি আলমগীর। সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বী জাকির হোসেন ও ডন।
কোষাধ্যক্ষ পদে অভিনেতা ফরহাদ ছাড়া আর কেউ দাঁড়াননি। অর্থাৎ সুব্রত, জ্যাকি, আলমগীর ও ফরহাদ বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
এবারের নির্বাচনে কার্যকরী পরিষদ সদস্যের ১১ পদের জন্য ১৪ প্রার্থী হলেন- অঞ্জনা সুলতানা, রোজিনা, অরুণা বিশ্বাস, আলীরাজ, আফজাল শরীফ, বাপ্পারাজ, রঞ্জিতা, আসিফ ইকবাল, আলেকজান্ডার বো, জেসমিন, জয় চৌধুরী, নাসরিন, মারুফ আকিব ও শামীম খান (চিকন আলী)।