আগামী ১০ নভেম্বরের মধ্যে ঢাকার ওয়াইজঘাটে মুন সিনেমা হলের জমি ও স্থাপনার রেজিস্ট্রি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। গত বছরের ১০ ডিসেম্বর আপিল বিভাগ ৩০ জুনের মধ্যে ৯৯ কোটি ২১ লাখ ৭৩ হাজার ৭৪ টাকা ২৭ পয়সা পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে তাতে জটিলতা তৈরি হয়েছে জমি ও স্থাপনা রেজিস্ট্রি নিয়ে।
রবিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চ ১০ নভেম্বরের মধ্যে রেজিস্ট্রি সম্পন্নের আদেশ দিয়ে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন।
আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। মুন সিনেমা হলের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট সাইফুল্লাহ মামুন।
স্থাপনাটির মালিকপক্ষের রেজিস্ট্রি নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়ায় সরকার ক্ষতিপূরণের টাকা দেয়া থেকে বিরত থাকে। শেষ পর্যন্ত উভয়পক্ষের সমঝোতার পর আপিল বিভাগ জমি রেজিস্ট্রি করে দিতে নির্দেশ দেন।
মুন সিনেমা হলের সম্পত্তি ও স্থাপনা মুক্তিযুদ্ধের সময় পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে মালিকানা দাবি করে মাকসুদুল আলম আদালতের দ্বারস্থ হন। হাইকোর্টে রায় পক্ষে যাওয়ার পর আপিল বিভাগ ২০১০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বাতিল করে তা বহাল রাখেন। একইসঙ্গে ৯০ দিনের মধ্যে মুন সিনেমা হল বাংলাদেশ ইতালিয়ান মার্বেলস ওয়ার্কস লিমিটেডকে ফেরত দেয়ার জন্য মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টসহ সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দেন।
পঞ্চম সংশোধনী বাতিল সংক্রান্ত আপিল বিভাগের দেয়া রায়ে ৯০ দিনের মধ্যে পুরান ঢাকার ওয়াইজঘাট এলাকার মুন সিনেমা হল মূল মালিককে ফেরতের নির্দেশ দেন। কিন্তু ইতালিয়ান মার্বেলস ওয়ার্কস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মুন সিনেমা হলের মালিক মাকসুদুল আলম তার জমি না পেয়ে ২০১২ সালে আপিল বিভাগে আবেদন করেন।
পরে রাষ্ট্রপক্ষ জানায়, মুন সিনেমা হল আগের অবস্থায় ফেরত দেয়ার কোনো উপায় নেই। এখন মুন সিনেমা হলের জমির মূল্য ও মুন সিনেমা হলের মূল স্ট্রাকচারের (কাঠামো) মূল্য ধরে এর মালিক ক্ষতিপূরণ পেতে পারেন। এরপর ২০১৭ সালে আদালত একটি মুন সিনেমা হলের জমি ও স্থাপনার মূল্য নির্ধারণের নির্দেশ দেন।
আপিল বিভাগ গত বছর ১৮ জানুয়ারি এক আদেশে ক্ষতিপূরণসহ ভবন ও জমির মূল্য বাবদ ৯৯ কোটি ২১ লাখ ৭৩ হাজার ৭৪ টাকা ২৭ পয়সা পরিশোধ করতে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট ও এর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের প্রতি নির্দেশ দেন।
গত বছর ১০ ডিসেম্বর এক আদেশে ৩০ জুনের মধ্যে টাকা পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। এ আদেশের পর সরকার মুন সিনেমা হলের মালিক মাকসুদুল আলমের নামে ৯৯ কোটি ২১ লাখ ৭৩ হাজার টাকার চেক ইস্যু করে। তবে নানা জটিলতায় তা হস্তান্তর আটকে রয়েছে।