ভোলার লালমোহন উপজেলায় ইয়াবা বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় দুই মেয়ের সামনে মোটরশ্রমিক বাবা মো. জসিমকে হাত-পা বেঁধে উলঙ্গ করে নির্যাতনকারী মো. হাসান নিজেকে কালমা ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা হিসেবে পরিচয় দিতেন।
তবে স্থানীয় যুবলীগ জানায়, নির্যাতনকারী মো. হাসান ইউনিয়ন যুবলীগের কোনো পদে নেই।
গতকাল রোববার রাতে ডাকাতি মামলায় পুলিশ হাসানকে গ্রেফতারের পর জসিমকে উলঙ্গ করে নির্যাতনের ওই ভিডিও ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে সারাদেশে সমালোচনার ঝড় বইছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় যুবলীগের এক নেতা জানান, হাসান যুবলীগের নানা কর্মসূচিতে মাঝে-মাঝে উপস্থিত থাকতো। তবে যুবলীগে তার কোনো পদ নেই।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, যুবলীগের নাম ব্যবহার করে হাসান ইয়াবা ব্যবসা ও ডাকাতি করতো। তার ভয়ে পুরো এলাকা আতঙ্কে থাকতো। হাসান গ্রেফতারের খবরে পুরো এলাকায় স্বস্তি ফিরে এসেছে। এলাকার মানুষ আনন্দিত হয়েছে।
এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক রিমন পঞ্চায়েত বলেন, গ্রেফতার হাসান যুবলীগের কেউ নয়। তাকে আমরা চিনি না।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে উপজেলার ডাওরী বাজারে একই ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা শাহার আলী বাড়ির মৃত আব্দুল মুন্নাফের ছেলে মোটরশ্রমিক জসিমকে শত শত মানুষ ও তার দুই কন্যা শিশু সন্তানের সামনে নির্যাতন হয়। নির্যাতনকারী হাসান কালমা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মিস্ত্রী বাড়ির আবু ড্রাইভারের ছেলে। মোটরসাইকেল চালক জসিমকে দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা বিক্রির জন্য নানাভাবে প্রস্তাব দিয়ে আসছিল হাসান। জসিম তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ডাওরী বাজারে জনসম্মুখে উলঙ্গ করে হাত-পা বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় তাকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে হাসান।
লালমোহন থানা পুলিশের অরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর খায়রুল কবীর জানান, হাসান কর্তৃক এক ব্যক্তিকে নির্যাতনের ভিডিওটি ২০১৮ সালের। হাসানকে রোববার রাতে ডাকাতি মামলায় গ্রেফতার করার পর ওই ভিডিওটি ছাড়া হয়েছে। নির্যাতনের স্বীকার জসিমের বিরুদ্ধেও মাদক ও অস্ত্র আইনে চারটি মামলা রয়েছে।
- আরও পড়ুন >> ‘চিকিৎসায় সন্তুষ্ট খালেদা’
তিনি আরও বলেন, নির্যাতনকারী হাসানের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম ও হালিশহর থানায় অস্ত্র, মাদক, এবং লালমোহন থানায় ডাকাতির তিনটি মামলা রয়েছে।