সদ্য সমাপ্ত ক্রিকেটারদের ধর্মঘটে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন সাকিব আল হাসান। তাদের চাওয়া-পাওয়া নিয়ে বিসিবির সঙ্গে দেনদরবার করেন তিনি। এর মাঝে গ্রামীণফোনের সঙ্গে চুক্তি করেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।
ফলে সাকিব-বিসিবি সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটে।সমঝোতা হলেও উত্তেজনা থেকে যায়। অনেকের ধারণা, বোর্ডের সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন তিনি। সেটা হতেও পারে!
তবে আপাতদৃষ্টিতে তা মনে হচ্ছে না। কার্যত, ম্যাচ ফিক্সিং নিয়ে আইসিসির নিয়ম ভাঙায় ক্রিকেটে নিষিদ্ধ হচ্ছেন সাকিব। ধারণা করা হচ্ছে, ১৮ মাস নিষেধাজ্ঞা পেতে পারেন তিনি।
অনেকে নেপথ্যে বিসিবির ইন্ধন খুঁজছেন। তাদের প্রশ্ন, এসময়ে এ ইস্যু সামনে এলো কেন? প্রশ্ন করাটাও স্বাভাবিক। কারণ, এ নিয়ে এখন পর্যন্ত সদুত্তর দিতে পারেননি বোর্ডের কোনো কর্মকর্তা। কোথা থেকে এ খবর পেয়েছেন সেটাও সঠিকভাবে জানাতে পারেননি তারা।
বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, কেউ বলছেন আইসিসি থেকে এ তথ্য পেয়েছেন। আবার কেউ বলছেন, সাকিব নিজেই তাদের বিষয়টি জানিয়েছেন। বিসিবি সভাপিত এ নিয়ে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন। আসলে এ বিষয় নিয়ে বোর্ড কর্মকর্তাদের কথা বলারই এখতিয়ার নেই।
এটি একান্তই আইসিসির ব্যাপার। আকসুর স্বাভাবিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এটি প্রকাশ্যে এসেছে। শুধু টাইমিংটা হয়ে গেছে দেশের ক্রিকেটাকাশে দুর্যোগের ঘনঘটার সময়ে।
যাহোক, সাকিব শাস্তি পাচ্ছেন নিশ্চিত। তাকে শাস্তি দিচ্ছে আইসিসির দুর্নীতি দমন ইউনিট (আকসু)। ২০১৭ সালে সাকিবকে ম্যাচ পাতানোর প্রস্তাব দেয় এক চিহ্নিত জুয়াড়ি। সেটা আন্তর্জাতিক না ঘরোয়া পর্যায়ের ম্যাচ সেটা জানা যায়নি। অবশ্য প্রস্তাব গ্রহণ করেননি তিনি। তবে বিপত্তিটা বাঁধে অন্য জায়গায়। সঙ্গে সঙ্গে নিজ বোর্ড কিংবা আকসুকে সেটি জানাননি অন্যতম বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।
এ ব্যাপারে ওই সময় তাকে জিজ্ঞেস করা হলেও বিষয়টি অস্বীকার করেন সাকিব। পরে তার ফোন কল ট্র্যাক করে ঘটনার সত্যতা পায় দুর্নীতি দমন ইউনিট। স্বভাবতই চটেছে তারা। তাকে ১৮ মাস নিষিদ্ধের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে আকসু।
বিষয়টি হালকাভাবে নেয়ায় এমন শাস্তির মুখে পড়তে হচ্ছে সাকিবকে।তার ব্যাপারে আইসিসি কঠিন। কারণ এ বিষয়ে ২৫টির মতো প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তিনি।এরই মধ্যে শাস্তি কমানোর জন্য আবেদন করতে প্রস্তুতি সেরে ফেলেছেন অন্যতম বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।
আইসিসির আইন অনুযায়ী, বাজিকররা কোনো ক্রিকেটারকে ম্যাচ পাতানোর অফার করলে সেটা সঙ্গে সঙ্গে আকসুকে জানাতে হয়। এটা গোপন করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এক্ষেত্রে ৬ মাস থেকে ৫ বছরও আন্তর্জাতিক কিংবা ঘরোয়া ক্রিকেটে নিষিদ্ধ হতে পারেন ক্রিকেটার।