পেঁয়াজের দাম নিয়ে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলমান অস্থিরতার মধ্যে এ বিষয়ে আগাম ব্যবস্থা নেয়া উচিত ছিল বলে মন্তব্য করে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ‘পেঁয়াজ উৎপাদন বেশি হলে কৃষক দাম পায় না। এবছর পেঁয়াজের উৎপাদন বেশি হয়েছিল। আবার বৃষ্টিতেও এবছর পেঁয়াজ বেশি নষ্ট হয়েছে। আর এমন সময় ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে। এতে আমাদের সমস্যা হচ্ছে। তবে আমাদেরও ভুল হয়েছে, আগাম ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল।’
আজ বুধবার সচিবালয়ের নিজ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে রবিশস্য সাতটি ও খরিপ-১ এর আওতায় দুটি শস্য মোট ৯টি শস্যের উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রণোদনা দেওয়া বিষয়ক অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
অভ্যন্তরীণ ঘাটতি মেটানোর কারণ দেখিয়ে সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয় ভারত। দেশটির এমন সিদ্ধান্তের প্রভাব পড়ে বাংলাদেশের বাজারে। কেজি প্রতি ৫০ টাকার পেঁয়াজের দাম চড়তে চড়তে এখন ১২০ টাকা হয়েছে।
তবে মিয়ানমার ও মিশর থেকে আমদানি অব্যাহত থাকা আর দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজ মিলে বাজারে কোনো ঘাটতি না থাকলেও দাম র্নিধারণ নিয়ে নিত্যপণ্যটির ওপর কোনো নিয়ন্ত্রন নেই। তার মধ্যেই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা টিসিবি ৪৫ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ বিক্রি করছে। তবে চাহিদার তুলনায় সেটি একেবারেই নগন্য।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘বেশি পরিমাণ পেঁয়াজ উৎপাদানে গুরুত্ব বাড়াতে হবে। পেঁয়াজ মাঠ থেকে ওঠানোর সময় আমদানি বন্ধ রাখার চিন্তা করা হচ্ছে। যাতে কৃষক ভালো দাম পায়।’
৯টি শস্যে কৃষককে প্রণোদনা
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘৯টি শস্য উৎপাদান বাড়ানোর লক্ষ্যে দেশের ৬৪ জেলায় ৬ লাখ ৮৬ হাজার ৭০০ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষককে ৮০ কোটি ৭৩ লাখ ৯১ হাজার ৮০০ টাকা প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। এই প্রণোদনাবাবদ কৃষকদের বীজ, সার ও পরিবহন খরচে নগদ টাকা দেওয়া হবে।’
এগুলো হলো- গম, ভুট্টা, শরিষা, চিনাবাদাম, শীতকালীন মুগ ডাল, পেঁয়াজ ও সূর্যমুখী। আর খরিপ-১ এর আওতায় দুটি শস্য হলো- গ্রীষ্মকালীন মুগডাল, ও গ্রীষ্মকালীন তিল।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘এই কর্মসূচি বাস্তবায়িত হলে ৬ লাখ ৮৬ হাজার ৭০০ বিঘা জমিতে যে ৯টি ফসল উৎপাদন হবে তার মাধ্যমে ৮৪০ কোটি ২৯ লাখ ৩৪ হাজার ২৯১ টাকা আয় হবে।’
তিনি বলেন, ‘গ্রামে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কার্ডাধারী জনগোষ্ঠীকে চাল দেওয়া হয় বছরে পাঁচ মাস। এখন এটাকে আরও দুই মাস বাড়িয়ে সাত মাসের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এই কর্মসূচিতে নতুন করে য্ক্তু হবে গ্রাম পুলিশ ও চৌকিদার।’
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার আগামীতে কৃষকের কাছ থেকে চালের পরিবর্তে বেশি করে ধান কিনবে। যেহেতু সরকারের কাছে পর্যাপ্ত গুদাম নেই, সেহেতু এই ধান কেনার সঙ্গে মিলারদের সংযুক্ত করা হবে। মিলারদের গুদামে এই ধান সংরক্ষণ করা হবে।’
‘তারা এই ধান থেকে চাল বানিয়ে সরবকারের গুদামে রাখবে। তাদের যে সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে তার জন্য আগামীকাল বৃহস্পতিবারে এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’