বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন জানান, ‘এরই মধ্যে আবরার হত্যার ঘটনায় করা মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে।’
গত ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হলের একটি কক্ষে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের নির্যাতনে মারা যান বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ। তিনি শেরে বাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন।
এ ঘটনায় আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। ফেসবুকে মন্তব্যের সূত্র ধরে শিবির সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে আবরারকে লাঠি ও ক্রিকেট স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয় বলে ইতোমধ্যে পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে। বুয়েট ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরাই যে মাতাল অবস্থায় আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করেছে, তা উঠে এসেছে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নিজস্ব তদন্তেও।
চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ২১ জনের মধ্যে সাতজন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
আব্দুল বাতেন বলেন, ‘বুয়েটে আবরার ফাহাদকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় আমরা নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে অভিযোগপত্র দেওয়ার কথা বলেছিলাম। এ লক্ষ্যেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের তদন্ত কাজ প্রায় সম্পন্ন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হবে।’
হত্যাকাণ্ডের মোটিভের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মোটিভ যাই থাকুক, কাউকে হত্যা করার অধিকার কারও নেই। আমরা এখন পর্যন্ত যা পেয়েছি, শিবির সন্দেহে আবরার ফাহাদকে মারধর করা হয়েছিল।’
জড়িতদের বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ‘মামলার এজাহারভুক্ত ১৯ আসামির মধ্যে এ পর্যন্ত ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এজাহার বহির্ভূত আরও পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই ২১ জনের মধ্যে সাতজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলত জবানবন্দি দিয়েছেন।
গ্রেপ্তার ২১ জনের বিরুদ্ধেই অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে জানিয়ে আব্দুল বাতেন বলেন, ‘আবরার ফাহাদের হত্যাকাণ্ডস্থল বুয়েটের শেরে বাংলা হলের ক্যান্টিন বয়, শিক্ষক, গার্ডসহ কয়েকজন ১৬১ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। মামলার বস্তুগত সাক্ষ্য ওবং প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। মামলার তদন্তে যে সমস্ত প্রক্রিয়া অবলম্বন করা দরকার, তা সম্পন্ন করা হয়েছে। গ্রেপ্তার ২১ জনের বিরুদ্ধেই প্রাথমিকভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।’ তাদের নাম উল্লেখ করেই আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।