কক্সবাজারের টেকনাফের নাফ নদে মাছ ধরতে গিয়ে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) গুলিতে নুর মোহাম্মদ (৩৫) নামে এক বাংলাদেশি জেলে নিহত হয়েছেন। তিনি উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের মহেষখালীয়া পাড়ার মৃত ছিদ্দিক আহমদের ছেলে। এছাড়া আবুল কালাম (৩২) নামে আরেক জেলে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহত জেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার ভোর রাতে নাফ নদের হোয়াইক্যং সীমান্তে এ ঘটনা ঘটেছে।
আহত জেলে আবুল কালাম জানান, তারা মামা-ভাগ্নে দু’জনে দিকে নাফনদীর বাংলাদেশ সীমান্তে আজ (বৃহস্পতিবার) ভোররাতের ঠেলা জাল (হাত দিয়ে ঠেলে চালানো) নিয়ে মাছ ধরছিলেন। এ সময় হঠাৎ করেই মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী আমাদের লক্ষ্যকরে গুলি চালায়। আমরা দু’জনই গুলিবিদ্ধ হই। আমি নুর মোহাম্মদকে টেনে কুলে নিয়ে আসি। এরপর আর কিছু জানি না।
এদিকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) জানিয়েছে, ভোরে টেকনাফ বিজিবি- ২ ব্যাটালিয়নের খারাংখালী বিওপির একদল জওয়ান সীমান্তে টহলকালে ৫নং স্লুইচ গেট সংলগ্ন এলাকায় দুই ব্যক্তিকে শোয়া অবস্থায় দেখতে পান। কাছে গিয়ে দেখা যায় দু’জনই গুলিবিদ্ধ। তাদের একজন মারা গেছেন, অপরজন কাতরাচ্ছেন। তাকে দ্রুত উদ্ধার করে টেকনাফ উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। এর পর জিজ্ঞাসাবাদে নিহত ব্যক্তি ও তার বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সকালে তাকে কক্সবাজার রেফার্ড করা হয়।
টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ জানান, বিজিবির তরফ থেকে খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধারে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। শুনেছি নাফ নদীতে মাছ ধরারত অবস্থায় মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষীরা জেলেদের ওপর গুলি চালিয়েছে।
হোয়াইক্যং ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি সদস্য জাহেদ হোছাইন বলেন, গুলিতে হতাহতরা অসহায়-গরীব এবং প্রকৃত জেলে। অভাবের কারণে নাফ নদীতে ঠেলা জাল টানতে গিয়েই নাফ নদীতে টহলরত মিয়ানমারের নেভী সদস্যরা এ গুলি চালিয়েছে।
টেকনাফ বিজিবি-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল মো. ফয়সল হাসান খান বলেন, গুলিবিদ্ধ হতাহত দুই বাংলাদেশি জেলেকে উদ্ধার করা হয়েছে। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের চেষ্টা চলছে। পরবর্তীতে বিস্তারিত জানানো হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।