তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ মন্তব্য করেছেন, বিএনপির দুর্নীতিবাজ ও অপকর্মকারীদের এখনও ধরা হয়নি বলে তারা হয়ত চলমান শুদ্ধি অভিযানকে আইওয়াশ বলছেন। তাদের দলের অনেকেই আছে নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। সেই তালিকাও সরকারের কাছে আছে। প্রধানমন্ত্রী আগে আমাদের দল থেকেই শুরু করেছেন।
বিএনপি নেতৃবৃন্দকে নিজেদের চেহারাগুলো একটু আয়নায় দেখার অনুরোধ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, নিজেদের মধ্যে যারা আছে তারা যেন সতর্ক থাকে। তারা নিশ্চয়ই ভবিষ্যতে বুঝতে পারবে এটি কোনো দল-মতের উর্ধ্বে নয়, এটি হচ্ছে যারা প্রকৃতপক্ষে অনিয়ম-অনাচারের সঙ্গে যুক্ত আছে তাদের সবার বিরুদ্ধে অভিযান।
প্রকৃতপক্ষে ক্যাসিনোসহ যারা নানা ধরনের অনিয়ম-অনাচার ও অপকর্মের সঙ্গে জড়িত আছে তাদের সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
আজ শুক্রবার রাত ৭টায় চট্টগ্রাম ডিসি হিল প্রঙ্গণে চট্টগ্রাম বৌদ্ধ বিহারের শুভ কঠিন চীবর দানোৎসব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি এ সব কথা বলেন।
সারা দেশে আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারীদের তালিকা করা হয়েছে চট্টগ্রামের কি অবস্থা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, একটি প্রাথমিক তালিকা করা হয়েছে। সেটি যাচাই-বাছাই করে এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে সেগুলো সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
দলে যোগ দেয়া নিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেছেন, তবে কেউ যে কখনও আমাদের দলে আসতে পারবে না তা কিন্তু নয়। যারা অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত, অন্যদলে থাকাবস্থায় আমাদের দলের নেতাকর্মীদের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতন চালিয়েছে, দখলবাজসহ নানা অনিয়ম-অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত ছিল তাদের আমাদের দলে নেয়ার কোনো কারণ থাকতে পারে না। তাদের নেতৃত্বের আসনে বসানোর কোনো প্রশ্নই আসে না।
তিনি বলেন, তালিকা অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এই তালিকাটা করা হয়েছিল ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্যই।
এর আগে চট্টগ্রাম ডিসি হিল প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতি পরিচালিত চট্টগ্রাম বৌদ্ধ বিহারের শুভ কঠিন চীবর দানোৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সব ধর্মের মর্মবাণী হচ্ছে মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ববোধ ও মমত্ববোধ সৃষ্টি করা। মানুষের প্রতি দয়া ও ভ্রাতৃত্ববোধের শিক্ষা সব ধর্ম দেয়। বৌদ্ধ ধর্ম আরও এক ধাপ এগিয়ে সমস্ত জীবের প্রতি দয়ার কথা বলেছেন। আমরা যদি সবাই নিজ নিজ ধর্মের মূল মর্মবাণী অনুসরণ করি অনুশীলন করি তাহলে পৃথিবী অনেক শান্তিময় হতো।
রাঙ্গুনিয়া কুলকুরমাই সদ্ধর্মোদয় বিহারের অধ্যক্ষ শাসনরত্ম ভদন্ত ধর্মসেন মহাস্থবিরের সভাপতিত্বে কঠিন চীবর দানোৎসবে আশীর্বাদক ছিলেন বাংলাদেশি বৌদ্ধদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় গুরু ড. ধর্মসেন মহাস্থবির, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ধর্মীয় গুরু ড. জ্ঞানশ্রী মহাস্থবির, বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ধর্মদেশনা দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পালি বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. জ্ঞানরত্ম মহাস্থবির, মোগলটুলি শাক্যমুনি বৌদ্ধ বিহারের মহাপরিচালক ভদন্ত তিলোকাবংশ মহাস্থবির, রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারের আবাসিক ভিক্ষু ভদন্ত মেত্তাবংশ স্থবির, শাকপুরা সার্বজনীন তপোবন বিহারের উপ-বিহারাধ্যক্ষ ভদন্ত প্রজ্ঞামিত্র ভিক্ষু প্রমুখ।
হাছান মাহমুদ বলেন, আজকে পৃথিবীজুড়ে ধর্মের নামে যে হানাহানি-বিবেদ চলছে কোনো ধর্মেই বিবেধ সৃষ্টির কথা বলেনি। ধর্মকে নিজেদের মতো করে ব্যাখ্যা করে অনেকেই ধর্মীয় হানাহানি সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালায় বিশ্বময়। আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির যেই মেলবন্ধন সৃষ্টিতে সক্ষম হয়েছি পৃথিবীর অনেক দেশের কাছে এটি একটি উদাহরণ।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, যেই চেতনার ভিত্তিতে রাষ্ট্র গঠন করা হয়েছিল সেই রাষ্ট্রকে যদি কেউ অস্থিতিশীল করতে চায় তাদের কঠোর হস্তে দমন করতে আমরা বদ্ধপরিকর। আমাদের মধ্যে যেই সম্প্রীতি-সৌহার্দ্য আছে সেটিকে আরও সংহত করার জন্য সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।