কাগজে-কলমে ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে নতুন সড়ক পরিবহন আইন (২০১৮)। তবে বাস্তবে নতুন আইন প্রয়োগ শুরু করেনি ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। আপাতত আইনটির বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন সার্জেন্টরা। আইন ভঙ্গ করলে চালকদের মৌখিকভাবে সতর্ক করতেও দেখা যায়, তবে বাস্তবে কাজ এখনো শুরু হয়নি।
তবে প্রশিক্ষণ শেষে কয়েক দিনের মধ্যেই নতুন আইনটি ভঙ্গকারীদের শাস্তি প্রদান শুরু করা হবে।
রাজধানীর ব্যস্ততম মগবাজার চার রাস্তার ট্রাফিক মোড়ে স্বাভাবিকভাবে চলছিল গাড়িগুলো। এর মধ্যেই ট্রাফিক সিগনাল অমান্য করে এগোনোর চেষ্টা করে একটি প্রাইভেট কার। তাত্ক্ষণিক থামিয়ে দিয়ে গাড়িটির কাছে এগিয়ে যান সার্জেন্ট। গাড়িটি এক পাশে নিয়ে কাগজপত্র ও ড্রাইভিং লাইসেন্স ঠিক থাকার পাশাপাশি অপরাধ গুরুতর না হওয়ায় মামলা না দিয়ে মৌখিকভাবে চালককে সতর্ক করে দেন। একই সঙ্গে সার্জেন্ট তাঁকে জানিয়ে দেন, ‘নতুন আইন আসছে। আইন অমান্য করলে কঠোর সাজা পেতে হবে।’ এ সময় চালক বলেন, ‘স্যার, ট্রাফিকের নতুন আইনের কথা শুনেছি। তবে সে সম্পর্কে পুরোপুরি ধারণা নেই।’
নতুন আইন প্রয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, নতুন সড়ক পরিবহন আইন ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর হলেও আপাতত পুরনো আইনেই কার্যক্রম চলবে। পর্যায়ক্রমে নতুন আইন সহনীয় মাত্রায় প্রয়োগ শুরু হবে। তার আগে প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য অর্থাৎ সার্জেন্টদের আইনটি সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা নিতে হবে। সেই সঙ্গে যাদের জন্য আইন অর্থাৎ পথচারী, যানবাহনের চালক ও হেলপারদের এ বিষয়ে মোটিভেশন করা হবে।
নতুন সড়ক পরিবহন আইন কার্যকরের তারিখ ঘোষণা করে গত ২২ অক্টোবর গেজেট প্রকাশ করে সরকার। নতুন আইনে কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী গতকাল থেকে আইনটি কার্যকর হলেও খোদ আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোরই এ সম্পর্কে সম্যক ধারণা নেই। পরিবহন চালক ও সহকারী এবং পথচারীরাও অনেকটা অন্ধকারে।
ফার্মগেটে শাফিন নামে এক মোটরসাইকেল চালক বলেন, ‘নতুন আইন সম্পর্কে এখনো পরিপূর্ণ ধারণা নেই। তবে শুনেছি নতুন আইনে জেল-জরিমানা অনেক বেশি। হেলমেট ব্যবহার না করলেই নাকি ১০ হাজার টাকা জরিমানা। এসব বিষয় আরো সহনীয় হওয়া উচিত।’
ট্রাফিক পুলিশ সূত্র জানায়, ট্রাফিকের পজ মেশিনসহ অন্য বিষয়গুলোর মিল রয়েছে আগের আইনের সঙ্গে। নতুন আইন বাস্তবায়ন হলেও মেশিনগুলো আপডেট হয়নি। তাই কোনো মামলা হলেও তা কাগজে করা হচ্ছে। পজ মেশিনের সফটওয়্যারসহ অন্য বিষয়গুলো আপডেট হলে নতুন আইন পুরোদমে কার্যকর হবে।
- আরও পড়ুন >> জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা শুরু
ডিএমপির ট্রাফিক পূর্ব বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) সাহেদ আল মাসুদ বলেন, নতুন আইন সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে। সার্জেন্টদেরও এ বিষয়ে প্রশিক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে। সেই সঙ্গে পোস্টার, লিফলেটসহ বিভিন্নভাবে মানুষকে আইনটি সম্পর্কে সচেতন করা হচ্ছে। সে জন্য আইনের প্রয়োগও ধীরে ধীরে করা হচ্ছে।