আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে হাজারতম ম্যাচ ছিল এটি। আর সেই ম্যাচে মুশফিকুর রহিমের দুর্দান্ত হাফ সেঞ্চুরিতে ভারতকে ৭ উইকেটে হারাল বাংলাদেশ।
টি-টোয়েন্টিতে ভারতের বিপক্ষে নয়বারের দেখায় প্রথমবার জয় পেল টাইগাররা। সেই সাথে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে লিড নিল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। সিরিজের পরবর্তী ম্যাচ ১০ নভেম্বর।
আজ রোববার স্বাগতিকদের দেয়া ১৪৯ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩ বল বাকি থাকতে ৭ উইকেট হাতে রেখে জয় পায় বাংলাদেশ। দলের পক্ষে মুশফিকুর রহিম ৪৩ বলে ৮টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ৬০ রান করে অপরাজিত থাকেন। ৭ বলে ১৫ করে অপরাজিত থাকেন রিয়াদ। ৩৯ করেন সৌম্য। ২৬ রান আসে সৌম্যর ব্যাট থেকে। ভারতীয় বোলারদের মধ্যে খলিল আহমেদ ১টি, দীপক চাহার ১টি ও চাহাল ১টি করে উইকেট নেন।
বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের প্রথম ওভারেই লিটনকে হারায়। দীপক চাহারের করা ওভারের পঞ্চম বলে কাভার পয়েন্টে রাহুলের হাতে ক্যাচ হন তিনি। ফেরার আগে তিনি করেন ৪ বলে ৭ রান।
এরপর ৪৬ রানের জুটি গড়েন নাঈম শেখ ও সৌম্য সরকার। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ম্যাচ খেলতে নেমে দারুণ ব্যাট করতে থাকেন নাঈম। কিন্তু ইনিংসকে বড় করতে পারেননি তিনি। ২৮ বলে ২৬ রান করে ফিরে যেতে হয় তাকে। অষ্টম ওভারে চাহালের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং-অনে ধাওয়ানের হাতে ধরা পড়েন তিনি।
দলীয় ৫৪ রানে দুই উইকেট পড়ে যাওয়ার পর মুশফিক ও সৌম্য দলকে টেনে নিয়ে যেতে থাকেন। দুজনে মিলে ৬০ রানের জুটি গড়েন। দলীয় ১১৪ রানে খলিল আহমেদের বলে বোল্ড হয়ে যান সৌম্য। ৩৫ বলে একটি চার ও দুইটি ছক্কার সাহায্যে ৩৯ রান করেন তিনি।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৪৮ রান সংগ্রহ করে স্বাগতিক ভারত। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪১ রান করেন শিখর ধাওয়ান। পান্তের ব্যাট থেকে আসে ২৭ রান। ১৩ বলে ২২ করেন আয়ার। শেষদিকে ৮ বলে ১৫ রান করে অপরাজিত থাকেন ক্রুনাল পান্ডিয়া। ৫ বলে ১৪ করে অপরাজিত থাকেন ওয়াশিংটন সুন্দর।
বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে ১১ রান দিয়ে ১টি উইকেট নেন আফিফ হোসেন। ২২ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন আমিনুল ইসলাম। শফিউল ইসলামও নেন ২টি উইকেট।
ভারতীয় ইনিংসের প্রথম ওভারেই আঘাত হানেন পেসার শফিউল ইসলাম। ওভারের শেষ বলে ভারতীয় ওপেনার রোহিত শর্মাকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন তিনি। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি রোহিত। ফেরার আগে ৫ বলে ৯ রান করেন ভারতীয় অধিনায়ক।
এরপর ধাওয়ানের সঙ্গে জুটি বাঁধেন লোকেশ রাহুল। ২৬ রানের জুটি গড়েন তারা। লেগস্পিনার আমিনুল ইসলাম ব্প্লিব ভাঙেন এই জুটি। ইনিংসের সপ্তম ওভারের প্রথমবারের মতো বোলিংয়ে আসেন বিপ্লব। ওভারের তৃতীয় বলে শর্ট কাভারে রিয়াদের হাতে ক্যাচ হন রাহুল। তিনি করেন ১৭ বলে ১৫ রান।
রাহুল ফিরে যাওয়ার পর শ্রেয়াস আয়ার নেমে মেরে খেলছিলেন। কিন্তু আয়ারকে বেশিদূর যেতে দেননি আমিনুল। ১১তম ওভারে তার বলে লং-অফে নাঈম শেখের হাতে ক্যাচ হন আয়ার। ১৩ বলে ২২ রান করেন তিনি।
অপর প্রান্তের ব্যাটসম্যানদের আউট করতে পারলেও ওপেনিংয়ে নেমে ক্রিজে অটুট ছিলেন শিখর ধাওয়ান। ১৫তম ওভারে এই ব্যাটসম্যানকে সাজঘরে ফেরায় টাইগাররা। রিয়াদের করা এই ওভারের পঞ্চম বলে মিডউইকেটে খেলেছিলেন পান্ত। স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গেই একবারের জন্য প্রান্ত বদল করেন পান্ত ও ধাওয়ান।
কিন্তু দ্বিতীয় রান নেয়ার সময় রিয়াদ দ্রুত থ্রো করেন মুশফিকের কাছে। আর মুশফিক ক্ষিপ্র গতিতে স্ট্যাম্প ভেঙে দেন। তৃতীয় আম্পায়ারের সাহায্য নেন ফিল্ড আম্পায়ার। দেখা যায় ধাওয়ান ক্রিজে পৌঁছানোর অনেক আগেই স্ট্যাম্প ভাঙেন মুশফিক। ৪২ বলে ৪১ রান করেন ধাওয়ান। এর পরের ওভারেই বোলার আফিফের হাতে ক্যাচ তুলে দেন অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা শিভম দুবে।
১৯তম ওভারে বোলিংয়ে এসে রিশাব পান্তকে বিদায় করেন শফিউল। সীমানার কাছে নাঈমের হাতে ক্যাচ হন তিনি। ২৬ বলে তিনটি চারের সাহায্যে ২৭ রান করেন পান্ত।সংক্ষিপ্ত স্কোর
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফল: ৭ উইকেটে জয়ী বাংলাদেশ।
ভারত ইনিংস: ১৪৮/৬ (২০ ওভার)
(রোহিত শর্মা ৯, শিখর ধাওয়ান ৪১, লোকেশ রাহুল ১৫, শ্রেয়াস আয়ার ২২, রিশাব পান্ত ২৭, শিভম দুবে ১, ক্রুনাল পান্ডিয়া ১৫*, ওয়াশিংটন সুন্দর ১৪*; শফিউল ইসলাম ২/৩৬, আল-আমিন হোসেন ০/২৭, মোস্তাফিজুর রহমান ০/১৫, আমিনুল ইসলাম ২/২২, সৌম্য সরকার ০/১৬, আফিফ হোসেন ১/১১, মোসাদ্দেক হোসেন ০/৮, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ০/১০)।
বাংলাদেশ ইনিংস: ১৫৪/৩ (১৯.৩ ওভার)
(লিটন দাস ৭, নাঈম শেখ ২৬, সৌম্য সরকার ৩৯, মুশফিকুর রহিম ৬০*, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১৫*; দীপক চাহার ১/২৪, ওয়াশিংটন সুন্দর ০/২৫, খলিল আহমেদ ১/৩৭, যুজবেন্দ্র চাহাল ১/২৪, ক্রুনাল পান্ডিয়া ০/৩২)।
প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ: মুশফিকুর রহিম