অধ্যক্ষ লাঞ্ছনার ঘটনায় আরও তিন ছাত্রলীগ কর্মী গ্রেফতার

রাজশাহী প্রতিনিধি

অধ্যক্ষ লাঞ্ছনার ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতা বহিষ্কার

রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দীন আহম্মেদকে টেনেহিঁচড়ে পুকুরের পানিতে ফেলে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় ছাত্রলীগের আরও তিন কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার দিবাগত রাতে নিজ নিজ বাড়ি থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার তিনজন হলো- রাজশাহী মহানগরীর আসাম কলোনির শাহ আলমের ছেলে মেহেদী হাসান হিরা (২৩), রবিউল ইসলামের ছেলে মেহেদী হাসান আশিক (২৩) এবং সাধুর মোড় এলাকার নোমানের ছেলে নাবিউল উৎস (২০)। এরা সবাই পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী।

universel cardiac hospital

রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস তিনজনকে গ্রেফতারের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছে। এ নিয়ে অধ্যক্ষের দায়ের করা মামলায় মোট আটজনকে গ্রেফতার করা হলো। জড়িত বাকিদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

এর আগে এই মামলায় ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। শনিবার রাতে পলিটেকনিক ছাত্রাবাস থেকে আটক ২৫ জনের মধ্যে থেকে তাদের শনাক্ত করে পুলিশ। এরা হলেন- পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী শাফি শাহরিয়ার (২৩), সোহেল রানা (২২), বাঁধন রায় (২০), আরিফুল ইসলাম (২৩) ও মেহদী হাসান রাব্বি (২১)। 

প্রসঙ্গত, মিডটার্ম পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া এবং ক্লাসে অনুপস্থিত থাকা পলিটেকনিক শাখা ছাত্রলীগের সদ্য বহিষ্কৃত যুগ্ম সম্পাদক কামাল হোসেন সৌরভকে ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ দিতে গত শনিবার অধ্যক্ষ প্রকৌশলী ফরিদ উদ্দিন আহমেদের কার্যালয়ে গিয়ে চাপ দেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে অধ্যক্ষের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে দুপুরে অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করার পর টেনেহিঁচড়ে ক্যাম্পাসের ভেতরের একটি পুকুরের পানিতে ফেলে দেয়া হয়।

এ নিয়ে রাতে মামলা করেন অধ্যক্ষ। এতে সাতজনের নাম উল্লেখসহ ৫০ জনকে আসামি করা হয়। পরে রাতেই পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। আর ঘটনা তদন্তে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

রবিবার থেকেই তারা তদন্ত শুরু করেছেন। বিকালে তারা ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের একটি টর্চার সেলের সন্ধান পান। সোমবার সকালেও তদন্ত কমিটির সদস্যরা ক্যাম্পাসে ছিলেন। আর জড়িতদের শাস্তির দাবিতে মূল ফটকের সামনে বসে আন্দোলন করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বন্ধ রয়েছে সব ধরনের ক্লাস ও পরীক্ষা।

এদিকে ঘটনার জন্য মূল অভিযুক্ত কামাল হোসেন সৌরভকে ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে। রবিবার রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সুপারিশের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে