কৃষিজমি নষ্ট করে সরকার উন্নয়ন ও শিল্পায়ন করবে না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উন্নয়ন প্রকল্প নেওয়ার সময়ও কৃষকদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
আজ বুধবার দুপুরে কৃষক লীগের ১০ম জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, কৃষিজমি নষ্ট করে কেউ যত্রতত্র শিল্প কারখানা গড়ে তুলতে পারবে না। এজন্য দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করা হচ্ছে। যারা শিল্প কারখানা করতে চান তাদের সেখানে প্লট দেওয়া হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কৃষি ও কৃষকবান্ধব সরকার। দেশের উন্নয়নের জন্য কৃষি ও কৃষকের উন্নয়ন জরুরি।’
তিনি বলেন, ‘কৃষকদের অধিকারকে গুরুত্ব দিয়েই পরিকল্পনা হাতে নিচ্ছে বর্তমান সরকার। উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেওয়ার সময় তাদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে।’
কৃষকদের প্রতি সরকারের সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এক সময় সারের জন্য কৃষককে জীবন দিতে হয়েছে। আর এখন সেই সার কৃষকের বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছে সরকার।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সারের দাম কমিয়েছে। বিনা জামানতে কৃষকদের ঋণ দেওয়া হচ্ছে। কৃষকদের ১০ টাকায় অ্যাকাউন্ট খোলার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের বীজ ও সার দিয়ে সহায়তা করছে সরকার। ১১ বছরে দেয়া হয়েছে ৬৫ হাজার কোটি টাকা ভতুর্কি।’
কৃষির উন্নয়নের মাধ্যমে দেশ খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে বলে অনুষ্ঠানে বলেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় কৃষক লীগের নেতাকর্মীদের অন্তত তিনটি করে গাছ লাগানোর পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।
বুধবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পৌঁছান আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় সম্মেলন মঞ্চ থেকে স্লোগান দিয়ে তাকে অভিবাদন জানানো হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিদের ফুরের শুভেচ্ছা জানানো হয়। এরপর মঞ্চে উপবিষ্ট অতিথিদের ব্যাজ পরিয়ে দেয়া হয়। কৃষক লীগের প্রকাশনা মোড়ক উম্মেচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এরপর উদ্বোধনী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয়। ‘যদি রাত পোহালে শোনা যেতো বঙ্গবন্ধু মরে নাই’, ‘কৃষক বাঁচাও, দেশ বাঁচাও, শেখ হামিনার নির্দেশ’, গান পরিবেশিত হয়।
কৃষক লীগের সভাপতি মোতাহার হোসেন মোল্লার সভাপতিত্বে সম্মেলন পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খন্দকার শামসুল হক রেজা। সম্মেলনে সাংগঠনিক রিপোর্টও পেশ করেন রেজা।
শোক প্রস্তাব পাঠ করেন নাজমুল ইসলাম মানু। মুক্তিযুদ্ধসহ সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
দেশে কৃষির উন্নয়ন এবং কৃষকের স্বার্থরক্ষার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ১৯ এপ্রিল বাংলাদেশ কৃষক লীগ প্রতিষ্ঠা করেন। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সম্মেলন হয় সর্বশেষ ২০১২ সালের ১৯ জুলাই। তিন বছর কমিটির মেয়াদ থাকলেও চলেছে প্রায় আট বছর। শুধু কেন্দ্রীয় কমিটি নয়, জেলা পর্যায়ের কমিটিগুলোও বিভিন্ন কারণে ঝিমিয়ে পড়েছে। এমন অবস্থায় জাতীয় সম্মেলন ঘিরে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে কৃষক লীগে।