রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের সুরক্ষায় ৩৪৪৯ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন

মত ও পথ প্রতিবেদক

একনেক সভা
ফাইল ছবি

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৩ হাজার ৪৪৯ কোটি ৫ লাখ টাকার ভৌত সুরক্ষা ব্যবস্থা (পিপিএস) প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বর্তমান সরকারের ১৯তম জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়।

universel cardiac hospital

এদিকে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের প্রায় ৭১ কোটি ৩৮ লাখ টাকার ‘যশোর (রাজারহাট)-মনিরামপুর-কেশবপুর-চুকনগর আঞ্চলিক মহাসড়ক (আর-৭৫৫) উন্নয়ন’ প্রকল্পটি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে আসে চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি। আট মাসের বেশি সময় পর প্রকল্পটি আজ একনেক সভায় অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

আর ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভৌত সুরক্ষা ব্যবস্থা (পিপিএস) নির্মাণ’প্রকল্পটি গত ১১ সেপ্টেম্বর পরিকল্পনা কমিশনে আসে। ৩ হাজার ৪৪৯ কোটি ৫ লাখ ২৭ হাজার টাকার এই প্রকল্পটি দুই মাসেরও কম সময়ে অনুমোদন দেয়া হলো।

এই প্রকল্প পারমাণবিক নিরাপত্তা ও ভৌত সুরক্ষা ব্যবস্থা সেল (এনএসপিসি) ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বাস্তবায়ন করছে। ২০১৯ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৩ সালের মার্চের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, রূপপুর প্রকল্প আমাদের জাতীয় অগ্রাধিকার সকলের জন্য। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের বাইরের কেউ নন। তিনিও চান এটা তাড়াতাড়ি হোক, তবে মানকে আপোস করে নয়। তাছাড়া এটা আমাদের জাতীয় স্বপ্নের প্রকল্প।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় বলছে, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য পারমাণবিক নিরাপত্তা অবকাঠামো প্রতিষ্ঠা একটি অত্যাবশ্যক বিষয়, যা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ কার্যক্রম থেকে আলাদা। পারমাণবিক নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা একটি রাষ্ট্রের নিজস্ব দায়িত্ব হলেও তার রয়েছে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পরিব্যাপ্ত। কোনো দেশের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পূর্বশর্ত হিসেবে কার্যকরী জাতীয় পারমাণবিক নিরাপত্তা কাঠামো প্রতিষ্ঠা করা অত্যন্ত জরুরি।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। এর কিছু আনুষঙ্গিক কাজ আছে, যেগুলো করতেই হবে। এটাকে ফিজিক্যালি কীভাবে সুরক্ষা দেয়া যায়, এ বিষয়ে আমাদের সেনাবাহিনীর বিশেষজ্ঞ দল, প্রকল্প নির্মাণের দায়িত্বে থাকা রাশিয়া এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) পরামর্শে, তাদের ধারণা নিয়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ভৌত সুরক্ষা দেয়ার জন্য এই প্রকল্প হাতে নিয়েছি। এটা বেশ বড় প্রকল্প।

প্রকল্পটির উদ্দেশ্য হলো ভৌত সুরক্ষা ব্যবস্থা বাস্তবায়নের মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, নিরাপদ ও সুরক্ষিত পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করা, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ডিজাইন বেসিস থ্রেট (ডিবিটি) ও এর বাইরের হুমকি মোকাবিলা করা, পারমাণবিক নিরাপত্তা সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করা এবং কম্পিউটার বা সাইবার নিরাপত্তা ও সংবেদনশীল তথ্যের ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা।

এর জন্য ৩০০ একর ভূমি অধিগ্রহণ, ভূমি উন্নয়ন, নিরাপত্তা ও ভৌত সুরক্ষা ব্যবস্থা (পিপিএস) সংক্রান্ত পূর্ত কাজ, পিপিএস সংক্রান্ত কৌশল ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি সংগ্রহ, সীমানা সড়ক নির্মাণ, পরামর্শক সেবা গ্রহণ, যানবাহন কেনা, কম্পিউটার সরঞ্জমাদি সংগ্রহ এবং সেমিনার/কনফারেন্স, অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক প্রশিক্ষণ আয়োজন প্রভৃতি কাজ করা হবে।

গত ২৯ অক্টোবর অনুষ্ঠিত একনেক সভায় ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পারমাণবিক নিরাপত্তা তদারকিকরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের নিউক্লিয়ার রেগুলেটরি ইনফ্রাস্টাকচার (অবকাঠামো) উন্নয়ন’নামে আরেকটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়।

এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৭১০ কোটি ৬৩ লাখ ৭ হাজার টাকা। পরমাণু নিরাপত্তায় অবকাঠামো নির্মাণে এই প্রকল্প নেয়া হলেও পরামর্শক খাতেই খরচ করা হবে মোট বরাদ্দের প্রায় ৭৭ শতাংশ, অর্থাৎ ১ হাজার ৩২০ কোটি ২১ লাখ ৯২ হাজার টাকা।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে