টাইগারদের সামনে সুযোগ ছিল প্রথমবারের মতো ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে নেয়ার। নাঈম শেখের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে আশা জাগিয়েও পরে ভারতীয় পেসার দীপক চাহারের হ্যাটট্রিকে ৩০ রানে হেরে গেল বাংলাদেশ। চাহার ৩.২ ওভারে ৭ রান দিয়ে ৬টি উইকেট নিয়েছেন।
বাংলাদেশ হেরে যাওয়ায় ২-১ ব্যবধানে সিরিজটি জিতে নিয়েছে ভারত। প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ ৭ উইকেটে জিতে সিরিজে এগিয়ে গেলেও দ্বিতীয় ম্যাচে ৮ উইকেটে জিতে সিরিজে সমতা এনেছিল রোহিত শর্মার দল।
রবিবার নাগপুরে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে ভারতের দেয়া ১৭৫ রানের জয়ের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ১৯.২ ওভারে ১৪৪ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। সিরিজ হারলেও বাংলাদেশের প্রাপ্তি নাঈম শেখের ব্যাটিং। ৪৮ বলে ১০টি চার ও দুইটি ছক্কার সাহায্যে ৮১ রান করেন তিনি। ৩৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেছিলেন নাঈম। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এটি তার প্রথম অর্ধশত।
এই সিরিজের মাধ্যমেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছে নাঈমের। অভিষেক ম্যাচে ২৬ রান করার পর দ্বিতীয় ম্যাচে ৩৬ রান করেছিলেন তিনি। তিন ম্যাচ মিলে তার সংগ্রহ ১৪৩ রান। সিরিজে দুই দলের মধ্যে সেরা ব্যাটসম্যান নাঈম।
নাগপুরে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই বড় ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। পরপর দুই বলে ফিরে যান লিটন দাস ও সৌম্য সরকার। দীপক চাহারের করা ইনিংসের তৃতীয় ওভারে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে সীমানার কাছে ওয়াশিংটন সুন্দরের হাতে ক্যাচ হন লিটন। পরের বলে মিড-অফে দুবের হাতে ক্যাচ হন সৌম্য। ৮ বলে ৯ রান করেন ওপেনার লিটন। ওয়ানডাউনে নেমে প্রথম বলেই ফিরে যান সৌম্য।
লিটন-সৌম্য যখন ফিরেছিলেন তখন দলীয় রান ছিল ১২। এরপর নাঈম শেখের সঙ্গে জুটি বাঁধেন মোহাম্মদ মিথুন। বড় শট না খেললেও তিনি নাঈমকে দারুণ সঙ্গ দেন মিথুন। দুজনে মিলে গড়েন ৯৮ রানের পার্টনারশিপ।
দলীয় ১১০ রানে দীপক চাহারের বলে লোকেশ রাহুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান মিথুন। ২৯ বল খেলে ২৭ রান করেন তিনি। মিথুন আউট হয়েছিলেন ১৩তম ওভারের শেষ বলে। আর ১৪তম ওভারের প্রথম বলে বোল্ড হন মুশফিক। এক বল খেলে মুশফিক রানের খাতা খুলতে পারেননি।
দুবের করা ১৬তম ওভারের তৃতীয় বলে বোল্ড হন নাঈম শেখ। পরের বলে দুবের হাতে ক্যাচ তুলে দেন আফিফ। তারপর অধিনায়ক রিয়াদকে নিয়ে আশা ছিল। কিন্তু ১৭তম ওভারে চাহালের বলে বোল্ড হয়ে যান রিয়াদ। তখনই আশা শেষ হয়ে যায়।
- আরও পড়ুন >> বাংলাদেশের লক্ষ্য ১৭৫
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৭৪ রান সংগ্রহ করে ভারত। বিপ্লব ক্যাচ মিস করায় ব্যক্তিগত শূন্য রানে জীবন পেয়েছিলেন শ্রেয়াস আয়ার। সেই ব্যাটসম্যান ৩৩ বলে তিনটি চার ও পাঁচটি ছক্কার সাহায্যে করেন ৬২ রান। ৩৫ বলে ৫২ রান করেন লোকেশ রাহুল। ১৩ বলে ২২ করেন মনিশ পান্ডে। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে শফিউল ইসলাম ২টি, সৌম্য সরকার ২টি ও আল-আমিন হোসেন ১টি করে উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফল:
ভারত ইনিংস: ১৭৪/৫ (২০ ওভার)
(রোহিত শর্মা ২, শিখর ধাওয়ান ১৯, লোকেশ রাহুল ৫২, শ্রেয়াস আয়ার ৬২, রিশাব পান্ত ৬, মনিশ পান্ডে ২২, শিভব দুবে ৯; আল-আমিন হোসেন ১/২২, শফিউল ইসলাম ২/৩২, মোস্তাফিজুর রহমান ০/৪২, আমিনুল ইসলাম ০/২৯, সৌম্য সরকার ২/২৯, আফিফ হোসেন ০/২০)।
বাংলাদেশ ইনিংস:
(লিটন দাস ৯, নাঈম শেখ ৮১, সৌম্য সরকার ০, মোহাম্মদ মিথুন ২৭, মুশফিকুর রহিম ০, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৮, আফিফ হোসেন ০, আমিনুল ইসলাম, শফিউল ইসলাম ৪, মোস্তাফিজুর রহমান; খলিল আহমেদ, ওয়াশিংটন সুন্দর ০/৩৪, দীপক চাহার, যুজবেন্দ্র চাহাল ১/৪৩, শিভম দুবে ৩/৩০)।
প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ: দীপক চাহার
প্লেয়ার অব দ্য সিরিজ: দীপক চাহার