‘টেকসই উন্নয়নের জন্য মর্যাদাপূর্ণ ও সমতাপূর্ণ সম্পর্ক আবশ্যক’

মত ও পথ প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমি আরও মনে করি, সমুদ্র সম্পদের টেকসই ব্যবহার ও এর মাধ্যমে ‘নীল অর্থনীতির’ টেকসই উন্নয়নের জন্য সমুদ্র তীরবর্তী দেশগুলোর মধ্যে সহায়তাপূর্ণ, সৌহার্দ্যপূর্ণ,মর্যাদাপূর্ণ ও সমতাপূর্ণ সম্পর্ক আবশ্যক’।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সোমবার সকালে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘ঢাকা গ্লোবাল ডায়ালগ-২০১৯’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।

universel cardiac hospital

এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং নিরাপত্তা ও শান্তি বজায় রাখার লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল এন্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিস (বিস) এবং ভারতের অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন (ওআরএফ) যৌথভাবে তিনদিন ব্যাপী এই ডায়ালগের আয়োজন করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গোপসাগর ও ভারত মহাসাগর সংলগ্ন দেশগুলোর অর্থনীতি ও নিরাপত্তার জন্য এ অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা অত্যাবশ্যক।

তিনি বলেন, সমুদ্রসীমা ও সামুদ্রিক অর্থনীতির ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ মনে করে, পরস্পরের সঙ্গে তীব্র প্রতিযোগিতা বা ‘জিরো-সাম গেম’ বঙ্গোপসাগর বা ভারত মহাসাগরের ‘নীল অর্থনীতি’ বিকাশের জন্য সহায়ক নয়। বরং তা এ অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে বড় প্রতিবন্ধক।

এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা জোরদারকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ সর্বদা বঙ্গোপসাগর ও ভারত মহাসাগর এলাকায় শান্তিপূর্ণ ও সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক জোরদারে সচেষ্ট। বাংলাদেশ তার দুই প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা সম্পর্কিত বিরোধ শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করেছে। সমস্যা সমাধানে আমাদের এরূপ সহযোগিতা ও প্রচেষ্টা অন্য অঞ্চলের জন্য শিক্ষনীয় হতে পারে।

প্রতিবেশির সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ তাঁর পররাষ্ট্র নীতি এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু প্রদর্শিত পদাংক- ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ মেনে চলছে, বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার প্রদর্শিত এই পথে আমরা আন্তর্জাতিক ও আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক স্থাপনে অঙ্গীকারবদ্ধ।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সভাপতি ড. সামির স্মরন এবং বিস’র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল একেএম আব্দুর রহমান অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

অনুষ্ঠানে ‘আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি ভিডিও উপস্থাপনা ও পরিবেশিত হয়।

প্রধানমন্ত্রী বঙ্গোপসাগর ও ভারত মহাসাগর এলাকায় জলদস্যুতা, সশস্ত্র ডাকাতি, উপকূলবর্তী ও সামুদ্রিক এলাকায় সন্ত্রাসী আক্রমণ, মানবপাচার, অস্ত্র ও মাদক পাচার- এর মত অপ্রথাগত নিরাপত্তা ঝুঁকি নিরসনে সকলকে একযোগে কাজ করার আহবান জানিয়ে বলেন, কোন একক দেশের পক্ষে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, মাছসহ সামুদ্রিক সম্পদের মাত্রাতিরিক্ত আহরণ ও নানাবিধ দূষণ এই এলাকার সামুদ্রিক পরিবেশকে বিপন্ন করে তুলেছে। শুধু বঙ্গোপসাগর ও ভারত মহাসাগর নয়, বিশ্বের সকল সাগর-মহাসাগরই আজ এ ধরনের বহুবিধ সমস্যায় আক্রান্ত।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতি বছর বিশ্বের সাগর-মহাসাগরগুলোতে যোগ হচ্ছে ৮ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক বর্জ্য। দূষণ ও সামুদ্রিক সম্পদের মাত্রাতিরিক্ত আহরণ সামুদ্রিক বাস্তুসংস্থানকে বিনষ্ট করছে। পৃথিবীর সামগ্রিক পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে মানুষের জীবন-জীবিকা।

শেখ হাসিনা বলেন, এই সকল সমস্যা সমাধানে ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগর এলাকায় দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় সহযোগিতা ও অংশিদারিত্ব জোরদার করার জন্য আমি সকল রাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানাই।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ মনে করে, এই সহযোগিতা হতে হবে সকলের অংশগ্রহণমূলক এবং সবার উন্নয়ন ও নিরাপত্তার লক্ষ্যে।

ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তেমনিভাবে ‘ঢাকা গ্লোবাল ডায়ালগ-২০১৯’ পরিবেশবান্ধব শান্তি ও সমৃদ্ধি অর্জনের পথে এই অঞ্চলের দেশগুলোর একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে।

তিনি বলেন, এই ডায়ালগে যেসব সুপারিশ প্রদান করা হবে তা এ অঞ্চলের প্রতিবেশীদের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়ন, সহযোগিতা জোরদারে এবং সর্বোপরি এ অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়ক হবে বলে আমি মনে করি।

এতে অর্জিত সাফল্য থেকে এই অঞ্চলের বাইরের দেশগুলোও শিক্ষা গ্রহণ করবে এবং উপকৃত হবে- এই আমার বিশ্বাস,’যোগ করেন তিনি।

এই অঞ্চলের দেশগুলোর ‘কমন এনিমি’ হিসেবে দারিদ্রকে চিহ্নিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দারিদ্র্য আমাদের প্রধান শত্রু। কাজেই আমাদের সকল কাজের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত মানুষের দারিদ্র্য দূর করে তাদের সুন্দর এবং স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবন নিশ্চিত করা।

জলবায়ু পরিবর্তনে তেমন কোন ভূমিকা না থাকলেও বাংলাদেশকে এর প্রভাবে অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে আখ্যায়িত করে সরকার প্রধান বলেন, এর ফলে সৃষ্ট বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, খরা, নদী ভাঙ্গনসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগকে সঙ্গে নিয়েই আমাদের বসবাস করতে হয়।

এ প্রসঙ্গে তিনি অতি সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’র প্রসঙ্গ টেনে দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশের সক্ষমতা অর্জনেরও উদাহরণ দেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা দেখেছেন বিরাট এক ঘূর্ণিঝড় আমাদের আক্রমণ করতে এসেছিল। এরকম প্রতিনিয়তই আমাদের মোকাবেলা করতে হয়। তবে, দুর্যোগ মোকাবেলায় আমরা এখন যথেষ্ট সচেতন এবং দুর্যোগকালীন করণীয় বিষয়েও আমরা যথাযথ পদক্ষেপ নিয়ে থাকি। আর প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচিও আমরা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।

তাঁর সরকার নিজস্ব অর্থায়নে ‘ট্রাস্ট ফান্ড’ গঠনসহ বেশকিছু অভিযোজন এবং প্রশমনমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে শতবর্ষ ব্যাপী ‘ডেল্টা প্ল্যান-২১০০’ গ্রহণ করা হয়েছে।

যেহেতু বাংলাদেশ একটা ব-দ্বীপ। তাই এই ব-দ্বীপ অঞ্চলের পানি সম্পদের সুষ্ঠু ও যথাযথ ব্যবহার করার মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা, নিরাপদ পানির নিশ্চয়তা এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাসহ টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করাই এই পরিকল্পনার লক্ষ্য, বলেন তিনি।

ভৌগোলিক কারণে ভারত মহাসাগরের গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই স্থান দিয়ে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রপথ অতিক্রম করেছে, যা এশিয়ার বৃহৎ অর্থনীতিসমূহের জ্বালানি ও রসদের যোগান দেয়।

শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বের কনটেইনার শিপমেন্টের অর্ধেক এবং সমুদ্রবাহিত তেল বাণিজ্যের শতকরা ৮০ ভাগ অতিক্রান্ত হয় ভারত মহাসাগর দিয়ে। বিশ্বের প্রমাণিত তেল মজুদের শতকরা ১৬ দশমিকব ৮ ভাগ ও প্রাকৃতিক গ্যাস মজুদের শতকরা ২৭ দমমিক ৯ ভাগ এই মহাসাগর ও তৎসংলগ্ন সাগরসমূহে অবস্থিত।

এই অঞ্চলে সারা বিশ্বের শতকরা ২৮ ভাগ মৎস্য আহরিত হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই বিপুল সম্পদের উৎস এবং কৌশলগত কারণে ভারত মহাসাগর বরাবরই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি বিবেচনায় বর্তমান শতক ‘এশিয়ার শতক’ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। ফলে এই অঞ্চলের সমৃদ্ধির স্বার্থে শান্তি-সৌহার্দ বজায় রাখা আবশ্যক।

বাংলাদেশের বহির্বাণিজ্যের শতকরা ৯০ ভাগই সমুদ্রপথে হয়ে থাকে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই সমুদ্র বাণিজ্যপথের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নিষ্পত্তির পর বঙ্গোপসাগরের ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গ কিলোমিটার এলাকার উপর বাংলাদেশের নিরঙ্কুশ সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ২০০ নটিক্যাল মাইল অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ সমুদ্রসীমার বিশাল এলাকা বাংলাদেশের জন্য বিপুল সম্পদের উৎস। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এই সম্পদের সদ্ব্যবহার অনেকাংশে নির্ভর করে এ অঞ্চলের স্থিতিশীলতার উপর।

তিনি বলেন, গ্যাস ছাড়াও ভারত মহাসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় বিপুল পরিমাণ মৎস্য, খনিজ ও অন্যান্য সম্পদ আছে। সুষ্ঠু ও পরিবেশসম্মত পরিকল্পনা এবং সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে এই সম্পদ এই এলাকার দেশসমূহের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যবহার করা সম্ভব।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি হিসেবে দেখা গেছে, বাংলাদেশ তার সমগ্র ভূ-খণ্ডে যে পরিমাণ সম্পদ উৎপাদন করে, তার প্রায় সমপরিমাণ সম্পদ বাংলাদেশের সমুদ্রসীমার মধ্য থেকে আহরণ করা সম্ভব।

তিনি বলেন, শুধু বাংলাদেশ নয়, ভারত মহাসাগরকে ঘিরে মোট ৪০টি উন্নয়নশীল দেশের অবস্থান। সেখানে বাস করে বিশ্বের জনসংখ্যার ৩৫ শতাংশ। বঙ্গোপসাগরকে ঘিরে আছে ৬টি দেশ। আরও কয়েকটি দেশ যেমন: নেপাল, ভূটান, মালদ্বীপ, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুর যদিও বঙ্গোপসাগরের তীরে অবস্থিত নয়, তবুও তাদের অর্থনীতিতে বঙ্গোপসাগরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

বঙ্গোপসাগর ও ভারত মহাসাগরের তীরবর্তী ও নির্ভরশীল দেশগুলোর অর্থনীতি ও তাদের বিপুল জনগোষ্ঠীর জীবন এই সাগর ও মহাসাগর দ্বারা নানাভাবে প্রভাবিত উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সাগর ও মহাসাগরের সম্পদ, পরিবেশ, বাস্তুসংস্থান সরাসরি এই দেশগুলোর অর্থনীতি ও নিরাপত্তাকে প্রভাবিত করে।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণের শুরুতে স্বাধীনতার পর পরই যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিভিন্ন যুগান্তকারী উদ্যোগের উল্লেখ করে বলেন, জাতির পিতা কেবল একটি সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নই দেখেননি, তিনি ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘে দাঁড়িয়ে একটি দারিদ্র্য, ক্ষুধা ও সংঘাতমুক্ত বিশ্ব গড়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

মানব কল্যাণের স্বার্থে বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তার উপর বিশেষ জোর দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু, বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারের শাসনে বিগত সাড়ে ১০ বছরে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের উল্লেখযোগ্য দিক তুলে ধরে বলেন, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশ আজ প্রায়শঃই ‘উন্নয়নের বিস্ময়’ হিসেবে অভিহিত হচ্ছে এবং আজ বাংলাদেশ বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতিগুলোর অন্যতম।

তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশ বর্তমানে এশিয়ায় দ্বিতীয় ও বিশ্বের পঞ্চম দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি।

চলতি বছর বাংলাদেশের অর্থনীতি ৩০০ বিলিয়ন ডলারের সীমা অতিক্রম করেছে। আইএমএফ-এর হিসেব অনুযায়ী পিপিপি’র ভিত্তিতে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন সারা বিশ্বে ৩০তম, বলেন তিনি।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে