বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) যে রিপোর্ট দিয়েছে তা প্রকাশ করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা স্পষ্টভাবে বেগম জিয়ার স্বাস্থ্যের সঠিক তথ্য প্রকাশের দাবি জানাচ্ছি।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পঙ্গু হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে’ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বেগম জিয়া এখন এত অসুস্থ যে তিনি নিজে হাতে ধরে কিছু খেতেও পারেন না। তাকে সাহায্য করে খাইয়ে দিতে হয়। তিনি হুইলচেয়ার ছাড়া চলতে পারেন না। এমনকি বিছানা থেকে উঠতেও দুজনের সাহায্যের প্রয়োজন হয়। অথচ হাসপাতালের পরিচালক বলেন, তিনি আগের চাইতে সুস্থ। দেশনেত্রী বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য সম্বন্ধে এই যে মিথ্যা ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে এজন্য তার বিচার হওয়া উচিত।’
ফখরুল বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে যে রিপোর্ট তারা দিয়েছেন তা প্রকাশ করা হচ্ছে না। আমরা স্পষ্টভাবে বেগম জিয়ার স্বাস্থ্যের সঠিক তথ্য প্রকাশের দাবি জানাচ্ছি।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ সরকার জনগণের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন, সম্পূর্ণ ম্যান্ডেটবিহীন একটা সরকার। এ সরকারকে ক্ষমতায় রাখার মানে হচ্ছে জনগণের সর্বনাশ করা।
তিনি বলেন, আজ প্রত্যেকটি পণ্যের দাম জনগণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। আজ মানুষ চাল কিনে খেতে পারছে না অথচ গ্রামে যান কৃষকরা বলবে আমরা ধানের দাম পাচ্ছি না। অথচ চাল কিন্তু ৫০ টাকা ৬০ টাকার নিচে নেই।
‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি মানে জনগণের মুক্তি, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি মানে গণতন্ত্রের মুক্তি। তাই আজ আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমরা বারবার বলেছি, ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটাতে হবে। সব দেশপ্রেমিক শক্তিকে একত্রিত করে আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে বাধ্য করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ঢাকঢোল পিটিয়ে তিনি ভারত সফরে গেলেন। আমরা আশা করেছিলাম সেখানে আমাদের তিস্তা নিয়ে চুক্তি সম্পন্ন হবে এবং আমরা আমাদের ন্যায্য হিস্যা পাব। কিন্তু তিস্তা নদীর এক ফোঁটা পানি নিয়েও চুক্তি হয়নি অথচ আমার ফেনী নদীর পানি তাদের দেয়ার জন্য চুক্তি করা হয়েছে। আজ গ্যাস আমদানি করে আগরতলায় পাঠানো হচ্ছে অর্থাৎ আমদানি করে রফতানি করা হচ্ছে। জনগণ এত বোকা নয় যে তারা কিছুই বুঝতে পারে না।’
‘আজ বঙ্গোপসাগরে রাডার লাগানো হচ্ছে। বঙ্গোপসাগরকে পর্যবেক্ষণের জন্য ভারত সে রাডার বসাবে এবং তারা পর্যবেক্ষণ করবে। আমরা এ বিষয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা চেয়েছি এবং আবারও চাই। এ চুক্তিগুলোর পরিপূর্ণ ব্যাখ্যা জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রেল দুর্ঘটনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা এ দুর্ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। যারা আহত ও নিহত হয়েছেন সেই সব পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। একেতো ব্যর্থ সরকার, কোনো কিছুই তারা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। এর আগেও আমরা বহুবার দেখেছি, রেল দুর্ঘটনা ঘটেছে।’
- আরও পড়ুন >> হাইকোর্টে এসপি হারুনের দুর্নীতির তদন্ত চেয়ে রিট
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শওকত মাহমুদের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান, আব্দুল কুদ্দুস, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, সাধারণ সম্পাদক এম আবদুল্লাহ প্রমুখ।