২৫ নভেম্বরের পর মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খোলার সিদ্ধান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রবাসী
ফাইল ছবি

বন্ধ থাকা মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খোলা সম্পর্কে আশাবাদ ব্যাক্ত করে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমেদ বলেছেন, আগামী ২৪ ও ২৫ নভেম্বর ঢাকায় জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের পরবর্তী সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেই সভার পর মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো পুনরায় শুরু হবে।

আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী জানান এই তথ্য। মালয়েশিয়ার সফর সম্পর্কে জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

শ্রমবাজার খুলতে সরকারি প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে গত ৬ নভেম্বর মালয়েশিয়া সফরে যান প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ। সফরে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী এম কুলাসেগারানের সঙ্গে এক আলোচনায় অংশ নেন মন্ত্রী।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের সঙ্গে সাক্ষাতে শ্রমবাজার খোলার ক্ষেত্রে সরকার প্রধানের সহযোগিতা চান তিনি।

প্রবাস কল্যাণ মন্ত্রী জানান, আলোচনায় উভয় দেশ মালয়েশিয়ায় বন্ধ শ্রমবাজার সম্ভব দ্রুত সময়ে খোলার বিষয়ে ঐক্যমত্য পোষণ করেছে।

মন্ত্রী বলেন, ‘ন্যূনতম অভিবাসন ব্যয়ে কর্মী প্রেরণ এবং কর্মীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার বিড়ম্বনা নিরসনে বাংলাদেশ থেকে বহির্গমনের পূর্বে মাত্র একবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার বিষয়ে উভয়পক্ষ একমত হন।’

তিনি বলেন, ‘এবার থেকে আমরা রিক্রুটিং এজেন্সির সংখ্যা বাড়াব। এক্ষেত্রে যৌথ ঘোষণা অনুযায়ী, মালয়েশিয়ার রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর সংস্থা কর্মী নেওয়ার বিষয়ে আমাদের রিক্রুটিং এজেন্সির কাছে চাহিদা দেবে, এরপর কর্মী যাবে।’

ইমরান বলেন, ‘আমার টার্গেট হচ্ছে, স্বল্প খরচে বিদেশের শ্রমবাজারে কর্মী পাঠিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা। যাতে দেশ এগিয়ে যেতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাকে দায়িত্ব দেয়া আছে শ্রমবাজার উন্মুক্ত করার। এরই মধ্যে আমরা সিসেলশ’র সঙ্গে চুক্তি করে এসেছি। জাপানের সঙ্গে চুক্তি করেছি। কম্বোডিয়ায় স্বল্প খরচে শ্রমিক পাঠানো শুরু হয়েছে। সামনে চীনেও শ্রমিক পাঠাবো। যত কর্মী পাঠাতে পারব তত মানুষ বাঁচবে, দেশ বাঁচবে।’

উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বরে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ হওয়ার আগে বি টু বি প্লাস চুক্তির আওতায় কর্মী পাঠানো হতো। দেশের ১০টি রিক্রুটিং এজেন্সি এই প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করত। তাদের বাইরে অন্য কোনো এজেন্সি সরাসরি লোক পাঠাতে পারতো না। এই প্রক্রিয়ায় দেশে এবং মালয়েশিয়ায় নানামুখী অনিয়মের অভিযোগে মালয়েশিয়া সরকার নিয়োগ বন্ধ করে দেয়। পরে কর্মী নিয়োগের নতুন কোনো পদ্ধতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেয়নি দেশটি।

অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে কয়েক বছর বন্ধ থাকার পর ২০১২ সালের নভেম্বর দুই দেশের মধ্যে জিটুজি চুক্তি সই হয়। এতেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় বেসরকারি জনশক্তি রপ্তানিকারকদের যুক্ত করে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জিটুজি প্লাস চুক্তি হয়।

দেশের জনশক্তি রপ্তানির ৮০ শতাংশ যায় মধ্যপ্রাচ্যে। সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মালয়েশিয়া বাংলাদেশের জন্য অন্যতম বড় শ্রমবাজার। কিন্তু সৌদিতে বেকারত্বের হার বৃদ্ধি, আরব আমিরাতে সীমাবদ্ধতা, মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানিতে অনিয়মসহ নানা কারণে জনশক্তি রপ্তানি কমে এসেছে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে