সম্প্রতি ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে ভারত সরকার। এর ফলে বিশেষ মর্যাদা হারায় জম্মু-কাশ্মীর। এরপর থেকেই উত্তাল কাশ্মীর। থমথমে কাশ্মীরে পুলিশের সঙ্গে একের পর এক সংঘর্ষ লেগেই আছে। জম্মু-কাশ্মীরে রাজনৈতিক নেতাসহ শতাধিক মানুষকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। ভাতের নির্যাতনের এই ইস্যুটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরায় এবং এ বিষয়ে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ব্যাপক প্রশংসা করেছেন কাশ্মীরের হুররিয়াত কনফারেন্সের নেতা সাইয়্যেদ আলী শাহ গিলানি।
সৈয়দ আলী শাহ গিলানি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ধন্যবাদ জানিয়ে একটি চিঠি লিখেছেন। সেখানে তিনি লেখেন, এটি হয়তো ইমরান খানের সঙ্গে তার শেষ যোগাযোগ হতে পারে; বয়স থাকে হয়ত আর যোগাযোগের সুযোগ দেবে না।
আলী শাহ গিলানি চিঠিতে লেখেন, ভারতীয় সেনারা গান ব্যবহার করছে এবং কাশ্মীরি তরুণদেরকে অন্ধ করে দিচ্ছে। রাষ্ট্রীয় নীতির আওতায় কাশ্মীরের জনগণের ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে, যৌন হয়রানি; এমনকি পুরুষদের ওপর যৌন নির্যাতন চালানো হচ্ছে। ভারতের দখলদার সেনারা বাড়ি বাড়ি ঢুকে তর্ক বিতর্ক করছে এবং নারীদের ওপর যৌন নির্যাতন চালাচ্ছে।
চিঠিতে ইমরান খানকে উদ্দেশ করে গিলানি বলেছেন, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বার্ষিক অধিবেশনে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের ব্যাপারে ভারত সরকারের অবৈধ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এবং জম্মু-কাশ্মীরের নির্যাতিত নিপীড়িত জনগণের পক্ষে আপনি যেভাবে কথা বলেছেন তা প্রশংসার দাবি রাখে। ১৯৪৭ সাল থেকেই ভারতীয় দখলদারিত্ব ও অন্যায় আচরণ হতে মুক্তি লাভের জন্য রাজ্যের জনগণ বিভিন্ন পর্যায়ে সংগ্রাম করে এসেছেন। সেই থেকে কাশ্মীরের নারী, পুরুষ এবং শিশুরা সংগ্রামকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৮৮, ২০১৮, ২০১০ ও ২০১৬ সাল মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে।
তিনি আরও লেখেন, দিন দিন স্বাধীনতার এ সংগ্রাম জোরদার হয়েছে যা ভারত নস্যাৎ করতে ব্যর্থ। ভারতের অবৈধ ইচ্ছা কাশ্মীরের জনগণের ওপর চাপিয়ে দিতে গিয়ে তারা ব্যাপকভাবে এ অঞ্চলে কারফিউ জারি করেছে। এজন্য তারা টেলিফোন এবং ইন্টারনেটসহ সব ধরনের যোগাযোগ মাধ্যমকে বন্ধ করে দিয়েছে। হাজার হাজার শিশু, বৃদ্ধ, কিশোর, ব্যবসায়ী, আইনজীবী, ছাত্র, ডাক্তার, হুররিয়াতের নেতা ও তাদের আত্মীয়-স্বজনকে আটক করা হয়েছে এবং ভারতের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি রাখা হয়েছে। শত শত মানুষের ওপর নির্মম নির্যাতন চালানো হয়েছে।
আলী শাহ গিলানি আরও লেখেন, মা-বাবার কাছে তাদের তরুণী মেয়েদের বয়স জানতে চাওয়া হচ্ছে এবং দখলদার বাহিনী জনগণের কাছে বলছে যে, তাদের আসল লক্ষ্য হচ্ছে কাশ্মীরের মুসলিম নারীদের অসম্মান করা। বহু মানুষকে হুমকি দেয়া হয়েছে যে, তাদের ঘরবাড়ি থেকে বের করে দেয়া হবে এবং বহু মানুষের ঘরবাড়ি কেড়ে নেয়ার জন্য তাদেরকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
সূত্র: ট্রিবিউন।